টানা তিনটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। যার দুটিতেই হয়েছে হোয়াইট ওয়াশ। মাঝখানে ভারতের মাটিতে একটি টি–টোয়েন্টি সিরিজও খেলেছে বটে। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের অনুশীলনটা হয়েছে লংগার ভার্সনের। দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজে হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার পর বিশ্রামের সুযোগ পায়নি বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। মাত্র তিন দিনের মাথায় তাদের ছুটতে হয়েছে আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে। যেখানে আজ থেকে শুরু হচ্ছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ। তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি আজ শুরু হবে শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে।
বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সিরিজের পরের দুটি ম্যাচও অনুষ্ঠিত হবে এই মাঠে। যার দ্বিতীয়টি ৯ নভেম্বর এবং শেষটি ১১ নভেম্বর। এবারের সিরিজে বাংলাদেশ যখন মুখোমুখি হতে যাচ্ছে আফগানিস্তানের তখন দু দলের অবস্থা বলতে গেলে দুরকম। বাংলাদেশ বেশ লম্বা সময় ওয়ানডে ম্যাচ খেলেনি। তার উপর বাংলাদেশ দলে নেই দলের সেরা তারকা সাকিব আল হাসান। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন আফগানিস্তান সিরিজে থাকবেন না। অসুস্থতার জন্য দলে নেই লিটন দাশও। অপরদিকে আফগানিস্তান রয়েছে বেশ ফুরফুরে মেজাজে। সম্প্রতি তারা জিতেছে ইমার্জিং এশিয়া কাপ। তারও আগে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলকে ওয়ানডে সিরিজে হারিয়ে গড়েছে ইতিহাস। তাই যেহেতু সিরিজটি আফগানিস্তানের হোম সিরিজ সেহেতু কিছুটা হলেও এগিয়ে থাকবে রশিদ খানের দল। যদিও বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন। নতুন অধিনায়ক হিসেবে মেহেদী হাসান মিরাজের নাম বেশ জোরে শোরে আলোচিত হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শান্তর উপরই আস্থা রাখল বাংলাদেশ। তাইতো শান্ত মনে করছেন আফগানিস্তানের বিপক্ষে তাদের জয়ের সম্ভাবনা বেশ ভালোই রয়েছে। পরিসংখ্যানও তেমনটি বলে। দু দলের ১৬ দেখায় বাংলাদেশের জয় ১০টি। আর আফগানিস্তানের জয় ৬টি। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে দু দলের সবশেষ দেখায় জয়টিও পেয়েছিল বাংলাদেশ। যদিও আফগানরা বেশ ভালই খেলে থাকে সাদা বলের ক্রিকেটে। তাদের প্রধান অস্ত্র লেগ স্পিনার রশিদ খান। দলে রয়েছে বেশ কয়েকজন ভাল মানের পেসারও। আর ব্যাটারতো রয়েছেই। তবে বাংলাদেশ সে সব নিয়ে ভাবছেনা। বাংলাদেশের পরিকল্পনা যথারীতি সব সময়ের মতো। নিজেদের সেরাটা দিতে হবে। গত সোমবার প্রথমবারের মতো অনুশীলন করতে পেরেছে বাংলাদেশ দল। ভিসা জটিলতার কারণে সোমবার পর্যন্ত আরব আমিরাতে যেতে পারেননি স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং পেসার নাহিদ রানা। এই মুহূর্তে দেশের সবচাইতে গতিময় পেসার হলেন নাহিদ রানা।
গত তিনটি টেস্ট সিরিজ এবং একটি টি–টোয়েন্টি সিরিজের মধ্যে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটি বাদ দিলে বাকি তিনটি সিরিজেই বাংলাদেশের দুশ্চিন্তার নাম ব্যাটিং। আরো স্পষ্ট করে বললে বাংলাদেশের ওপেনিং ব্যাটিং। দলে একাধিক ওপেনিং ব্যাটার থাকলেও তারা কেউই দলকে ভাল শুরু এনে দিতে পারছেন না। পাশাপাশি মিডল অর্ডারেও নেই তেমন ভরসা করার মতো অবস্থা। তবে বোলাররা ঠিকই তাদের কাজটা করে যাচ্ছে। কিন্তু ব্যাটাররা পারছে না বোলারদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দলকে টেনে নিয়ে যেতে।
এবারের সিরিজে যেহেতু প্রতিপক্ষ দলটির নাম আফগানিস্তান তাই বাংলাদেশকে বেশ সতর্কতার সাথে খেলতে হবে বলে মনে করছেন দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু অধিনায়ক নিজেইতো নেই ফর্মে। তবে দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে আশা টাইগার অধিনায়কের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই সিরিজ শেষে বাংলাদেশ দল খেলতে যাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। সেখানে ভিন্ন পরিবেশে আরো কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে। তাই এই সিরিজেই নিজেদের সব ধরনের প্রস্তুতি সারতে চায় বাংলাদেশ। এই শারজাহতেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঐতিহাসিক ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে আফগানিস্তান।
যেখানে তারা সিরিজটি জিতেছিল ২–১ ব্যবধানে। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩১১ রানের বিশাল স্কোরও গড়েছিল আফগানরা। তাই কন্ডিশনটা আফগানদের জন্য বেশি পরিচিত। তবে বাংলাদেশ যেন নতুন করেই শুরু করতে এই সিরিজ।