‘আমার সব স্বপ্নই শেষ হয়ে গেল’

এইচএসসির প্রথম পরীক্ষা দিয়েছিল সাতরাজ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৫:৩৬ পূর্বাহ্ণ

নগরীর খুলশী থানাধীন ঝাউতলা জাকির হোসেন রোডে রেল ক্রসিংয়ে ট্রেন-বাস ও সিএনজিচালিত টেক্সির ত্রিমুখী সংঘর্ষে সাতরাজ উদ্দিন শাহীন (১৯) নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। তিনি পাহাড়তলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগের পরীক্ষার্থী ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার পরীক্ষা শুরুর দিন তিনি প্রথম পরীক্ষা দিয়েছেন। গতকাল শনিবার বন্ধের দিন বিএনসিসির কাজে কলেজে যাচ্ছিলেন তিনি। যাওয়ার পথেই ঘটে এই দুর্ঘটনা।
গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে দুর্ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থলেই ট্রাফিক কনস্টেবল মো. মনির হোসেন নিহত হন। একই ঘটনায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী সাতরাজ উদ্দীন শাহীন (১৯) ও প্রকৌশলী সৈয়দ বাহাউদ্দিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে শাহীনের পিতা ফজল করিমসহ তার কলেজের বন্ধুদের সাথে দেখা হয়। এ সময় শাহীনের পিতার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কথা বলতে পারছিলেন না তিনি। ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। বড় ছেলের এমন মর্মান্তিক মৃত্যুতে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। বারবার বলছিলেন, আমার সব স্বপ্নই শেষ হয়ে গেল। আমার ছেলে খুব মেধাবী ছিল। আমি কী নিয়ে বাঁচব?
শাহীনের মৃত্যুর খবর শুনে পাহাড়তলী ডিগ্রি কলেজের বন্ধুরা চমেক হাসপাতালের মর্গে ভিড় করেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন তারা। বন্ধুর লাশ পোস্ট মর্টেম না করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিক্ষোভও করেন তারা।
শাহীনের কলেজের বন্ধু জাকির আহমেদ চৌধুরী জানান, শাহীন কলেজের মেধাবী ছাত্র ছিল। ও পরিবারের বড় ছেলে। তারা দুই ভাই। সে সায়েন্সের ছাত্র। গত বৃহস্পতিবার এইচএসসির প্রথম পরীক্ষা দিয়েছে। ওদের পরীক্ষা আগে শুরু হয়েছে। আমি মানবিকে পড়ি। আমাদের পরীক্ষা শুরু হবে রোববার।
তিনি আরো জানান, শাহীন কলেজে বিএনসিসির ক্যাডেট অফিসার। তাদের গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়ির নানুপুরে। তারা নগরীর হামজারবাগ গাউছিয়া আবাসিক এলাকায় থাকে। তার বাবা ফজল করিমের মুদির দোকান আছে।
জানা যায়, গত রাতে শাহীনের লাশ নিয়ে তার পরিবার এবং বন্ধুরা ফটিকছড়ির গ্রামের বাড়িতে যান। সেখানেই নামাজে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদুর্বল হয়ে পড়ছে জাওয়াদ
পরবর্তী নিবন্ধজীবন দিয়ে বাঁচালেন জীবন