আমার বাবা খুব সহজ সরল স্বভাবের মানুষ। আমার বাবা আমার পৃথিবী। বাবা ছাড়া আমার কোনো অস্তিত্ব নেই। আমার বাবাকে নিয়ে যতই লিখবো ততই কম লিখা হবে, কারণ আমার জীবনে আমার বাবার অবদান অনেক অনেক বেশি। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন কালে আমার কন্যা আমার গর্ভে এলো। সেই সময় শরীরে নানা জটিলতা কারণে ডাক্তার আমাকে পুরোপুরি বিশ্রামে থাকার নির্দেশ দিলেন। আমার কন্যা ভূমিষ্ট হবার ঠিক এক সপ্তাহ আগে হঠাৎ দেখলাম আমার পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। দেখে আমি ভেঙে পড়েছিলাম ভেবেছিলাম আমার পড়াশুনার হয়তো এবার ইতি ঘটবে। কিন্তু আমার বাবা আমার পড়াশোনার ইতি ঘটবে কখনোই এটা মেনে নেবেন না তিনি পরিবারের বাকি সদস্যদের বারণ না মেনে আমাকে জড়িয়ে ধরে পরীক্ষা দিতে নিয়ে যান। পরীক্ষার হলের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। চিন্তায় অস্তির হয়ে গিয়েছিলেন। আমি বাবাকে সেদিনের মত কখনই এতো চিন্তিত হতে দেখি নি। তারপর আমি যখন বের হলাম আমায় জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করলেন আমি ঠিক আছি কী না! বললাম ঠিক আছি। তারপর আমায় সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পেরে অবশেষে বাবার সকল চিন্তার অবসান ঘটলো। বাবা বরাবর চান যত কষ্টই হোক আমি যেনো আমার পড়াশুনা, আমার লিখালিখি, আবৃত্তি সবকিছুই সুন্দর ভাবে চালিয়ে যেতে পারি। সংসারের সকল দ্বায়িত্ব পালন করেও সবকিছু একসাথে চালিয়ে যাওয়া বড্ড কঠিন। কিন্তু আমার মোটেও কঠিন মনে হয় না কারণ আমার বাবা আমাকে ক্রমশই সাহস দিয়ে যান। বাবা যখন বলেন ‘চিন্তা কিসের? আমি আছি না!’ আমি ভীষণ ভরসা পাই। প্রতিটি মা বাবা চায় তাদের সন্তানের ভালোবাসা এবং যথাযোগ্য সম্মান। আমার কাছে বাবা মানে আকাশ সমান অনুভূতির নাম। তাই বাবাকে আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি অনেক অনেক ভালোবাসি বাবা।