চট্টগ্রাম ১৪ দলের সমন্বয়ক চসিকের সাবেক প্রশাসক, মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, কোনো পরাশক্তির নিষেধাজ্ঞায় বাংলাদেশ পরাভব মানে নি, মানবে না। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে যখন নজিরবিহীন গণহত্যা চলেছিল, তাকে মদদ দিয়েছিল যে দেশটি এবং ১৯৭৪ সালে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টির নীলনকশাকারী সেই দেশটিকে আমরা চিনি ও জানি। ঐ দেশটিতে এখন অর্থনৈতিক খরা চলছে। আমরা চাই না আমাদের দেশের রাজনীতি, সমাজনীতি ও অর্থনীতি কি রকম হবে তা নিয়ে তাদের কোনো প্রেসক্রিপশনের দরকার নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আরাধ্যের সোনার বাংলা বাস্তবায়নে যে অগ্রযাত্রার দীপশিখা জ্বালিয়েছেন তাকে প্রজ্বলিত রাখতেই হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী দেশি–বিদেশি অপশক্তিকে রুখে দাঁড়ান।
গতকাল বুধবার বিকেলে জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে মহানগর ১৪ দলের উদ্যোগে গণ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেন, ১৪ দল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র সুরক্ষা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয় নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আমরা আবার মাঠে নেমেছি বাংলাদেশকে নিরাপদ ও শত্রুমুক্ত করার দৃঢ় প্রত্যয়ে। এই প্রত্যয়ে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে সকল রাজনীতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনকে একই সূত্রে বাঁধতে হবে। ১৪ দল চট্টগ্রামের ১৫টি থানা ও ৪৪টি ওয়ার্ডে প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক চেতনার সাধারণ মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে একই মঞ্চে দাঁড় করানোর জন্য কাজ শুরু করে দিতে হবে। আমরা জানি ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে সংঘবদ্ধ চেতনা বড় এবং সবচেয়ে বড় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত ৭১ এর অস্ত্রটি। তিনি ১৪ দলের নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে বলেন, আমাদেরকে ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে সামষ্টিক স্বার্থের কথা ভাবতে হবে। আমাদের ভাবনার মূল কাণ্ডারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নির্দেশনা অনুযায়ী ১৪ দল জাগ্রত হয়েছে।
গণসমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, একটি যুদ্ধে বিজয়ী হতে হলে সুশৃঙ্খল সেনাবাহিনীর প্রয়োজন। একটি দলের আদর্শ–উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সুশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী। এই সৃশৃঙ্খল কর্মী বাহিনী দলের শক্তি ও ঐক্যের ভিত্তি। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করি আমাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী অপশক্তিকে বিনাশ করা।
জাসদ কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক জসিমুদ্দিন বাবুল বলেন, বিএনপি জামাত জোট সরকার একটি কুখ্যাত কালোবাজারি ও সন্ত্রাসী বাবরকে দেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তারই নেতৃত্বে এদেশে অনাচার ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। এমনকি শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টাও হয়েছে। এ কারণে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি যদি আবার ক্ষমতায় না আসে এদেশ পাকিস্তান হয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রাম জেলা ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি ও জেলা আইনজীবী পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আবু হানিফ বলেন, আমরা রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক দায়বদ্ধতায় একই মঞ্চে সমবেত হয়েছি। এই জোট কোন নির্বাচনমুখী জোট নয়। এই জোট স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করতে একটি মুক্তমঞ্চ। ওয়ার্কার্স পার্টি চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক শরীফ চৌহান এবং মহানগর আওয়ামী লীগের শফিকুল ইসলাম ফারুকের যৌথ সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, সাম্যবাদী দলের অমূল্য বড়ুয়া, গণ আজাদী লীগের নজরুল ইসলাম আশরাফী, ন্যাপ (মোজাফ্ফর) ফয়েজ উল্লাহ মজুমদার, গণআজাদী লীগের খোরশেদ আলম, জেপি ডা. বেলাল মৃধা, গণতন্ত্রী পার্টির স্বপন সেন, কাউন্সিলর জহর লাল হাজারী, নীলু নাগ, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজ, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হাসান আহমেদ ইমু।