আমাদের কাজগুলোই একমাত্র কালের সাক্ষী

টুম্পা ভট্টাচার্য | শনিবার , ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৮:০৬ পূর্বাহ্ণ

চিরন্তন সত্য বলতে আমরা জানি-সূর্য পূর্ব দিকে উদিত হয় আবার পশ্চিমে অস্তমিত হয়, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে প্রদক্ষিণ করে। এসবের মত আরেকটি চিরন্তন সত্য যা হল ‘মৃত্যু’। এই মৃত্যু নিয়ে আমরা ক’জন ভাবি! প্রতিদিন অগণিত মানুষ ও অন্যান্য জীবের মৃত্যু হচ্ছে, শোকও পালন করছি। এরপরও আমরা এমন ভাবে বাঁচি যেন মৃত্যু বলে কিছুই নেয়। সময় তো মৃত্যুরই বার্তা। কেন আমরা সময়ের নিষ্ঠুর রূপকে দেখতে চাই না? যা প্রতিনিয়ত সবার আমার আমিকে কেড়ে নিচ্ছে! শুধু প্রাণবায়ু নিঃশেষ হলেই জীবের মৃত্যু হয় এভাবে কি মৃত্যুর বিচার করা যায়? মৃত্যু মানেই তো যেটাকে আর ফিরিয়ে আনা যায় না! ফিরিয়ে আনা কি সম্ভব গত হয়ে যাওয়া সময়কে? ফিরিয়ে আনা কি সম্ভব কৈশোরের চাঞ্চল্যকর সময়কে? ফিরিয়ে আনা কি সম্ভব শিকুকালের দুরন্তপনাকে? না। সম্ভব না। কারণ তার মৃত্যু হয়েছে। ছবির ফ্রেমে বন্ধি করা মৃত মানুষের ছবি দেখে যেমন অনুভূতি হয় ঠিক তেমন গত হয়ে যাওয়া আমিকে দেখে সেরকম অনুভূতি হয়। পার্থক্য এই ফ্রেম মনে বন্দী করা। আজকের বর্তমান আগামীর অতীত আবার আগামী ভবিষ্যত অতীতের প্রতিচ্ছবি মাত্র। এভাবে প্রতিনিয়ত মৃত্যু হচ্ছে নিজের। আজকের আমি যখন গত আমিকে দেখি, দেখি তখন আমার থেকে ভিন্ন এক সত্তা যা বর্তমানের আমি নই। যাকে বলে ‘আমি ছিলাম’। মানে তার মৃত্যু হয়েছে। সবার ক্ষেত্রে তাই। এভাবে অসহায়ের মত আমার আমি’র মৃত্যু হচ্ছে প্রতিনিয়ত। আজকেও হবে ভবিষ্যতেও হবে, যা আমরা দেখতে চাই না। মৃত্যুর বাহক সময় বলে দিচ্ছে আগাম মৃত্যুর সংবাদ। শুধু আমাদের করে যাওয়া কাজগুলো আমাদের সেই সময়গুলোর সাক্ষী হবে মাত্র।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানুষের মনের স্বপ্ন
পরবর্তী নিবন্ধঅ্যাডভোকেট ননী দাশগুপ্ত : মানবহিত ব্রতে সমর্পিত যে জীবন