বন উজাড় ও অরণ্য ধ্বংসের মাঝে এখনো কিছু পাখি নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে যেটুকু চিরসবুজ বন টিকে আছে সেখানে তাদের অনেকের দেখা মিলে। রাঙামাটির চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এবার দেখা মিলল জার্ডনের বাজ। দুর্লভ এই পাখি চিরসবুজ বনের বাসিন্দা। এদের বড় বাজ বা বাদামি বাজও বলা হয়। গভীর বন ছাড়া এদের দেখা যায় না।
রাঙামাটি থেকে অন্তত ৫০ কিলোমিটার দূরের পাহাড়ি বনের ঝোপে এদের পাওয়া গেছে। অন্তত তিনটি জার্ডনের বাজপাখি সেখানে বসবাস করছে। মানুষের আনাগোনা কম থাকায় বনের আমলকি গাছের ডালে বাসা বেঁধেছে তারা। মূলত প্রজনন মৌসুমে এরা বাসা বাধে।
জার্ডনের বাজ আকারে চিলের মতো। লম্বায় প্রায় ৪৬ সে.মি। শরীরজুড়ে ছোপ ছোপ বাদামি রঙ। গোলাকার ও প্রশস্ত ডানা দেহের দিকে কুঞ্চিত। ডানার উপরে কালচে ডোরা ও নিচে লালচে। এদের পেটে লালচে ডোরা। চোখ সোনালি হলুদ। চুঞ্চ বাকানো, কালচে রঙের। মাথার উপর খাড়া ঝুঁটি। ঝুঁটির আগা সাদা। লেজে কালচে ফিতা। পা সোনালি হলুদ। টিকটিকি, সাপ, ব্যাঙ জার্ডনের বাজের প্রধান খাবার। এদের প্রজনন মৌসুম মার্চ থেকে এপ্রিল। প্রজনন মৌসুমে ২-৩টি ডিম পাড়ে।
খাগড়াছড়ির শৌখিন আলোকচিত্রী সবুজ চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নির্বিচারে বন উজাড় হওয়ায় পাখিসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর সংখ্যা কমে যাচ্ছে। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে এখানে কিছু পাখি টিকে রয়েছে। এদের রক্ষায় আবাস ভূমি নিরাপদ করতে হবে। পাখি শিকার বন্ধ করতে হবে। এছাড়া প্রাকৃতিক বন সমৃদ্ধ করতে হবে।
জানা যায়, বাংলাদেশ ছাড়াও নেপাল, ভাারত, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইনে জার্ডনের বাজ দেখা যায়।