অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আমাদের দেশে ধর্ম চর্চা, ধর্ম প্রচারে কোনো বাধা নেই। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই এখানে নিরাপদ। কারো নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই। হিন্দু–বৌদ্ধ–খ্রিস্টানরা নিরাপদ নয় দাবি করে একটি পক্ষ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ ভারতে মুসলমানদের যে অবস্থা তার চেয়ে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অবস্থা অনেক ভালো রয়েছে। আমরা সাম্প্রদায়িক উসকানিতে নেই। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী। রাজনৈতিক পট–পরিবর্তনের পর যারা আক্রমণ করেছে, লুটপাট করেছে তারা মূলত ক্রিমিনাল। এসব ক্রিমিনালদের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা নিতে আমরা পিছ পা হব না।
গতকাল নগরীর সার্কিট হাউসে সুধীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার, রিজার্ভ বিষয়, আইন–শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার আমাদের প্রাধান্য পাবে।
পাঠ্য বইয়ে বিগত সরকারের আমলের অনেক আপত্তিকর ছবি রয়েছে বলে জানান উপদেষ্টা খালিদ হোসেন। তিনি বলেন, মাদ্রাসার সিলেবাসে হারমোনিয়ামের ছবি আছে। বাউলের ছবি রয়েছে। আমরা একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, ২০০৩–২০০৫ সালের সিলেবাস প্রিন্ট করে দিয়ে আগামী বছরের জানুয়ারির ১ তারিখে শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
হজ–ওমরা হজ ও ওয়াকফা নিয়ে অনেক সমস্যা আছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা খালিদ হোসেন বলেন, এগুলো দীর্ঘদিনের সমস্যা। ধারাবাহিকভাবে চলে আসছে। একদিনে তা সমাধান করা সম্ভব নয়। হজের বিষয়ে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিমানকে ম্যানেজ করতে পারলে ৪০ হাজার টাকা কমে আসবে। সরকারি ঘরভাড়া কমানোর জন্যও নিবিড়ভাবে কাজ করছি। হজ এজেন্সি ও হাবের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রয়োজনে সৌদি হজ মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবো। প্রধান উপদেষ্টা বিমান উপদেষ্টাও। হজের লোকসান কমিয়ে কীভাবে হজের টাকা কমানো যায়, তা আলোচনা করা হবে।
টিকেট নিয়ে সিন্ডিকেট কারসাজির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিছু অসাধ সিন্ডিকেট, এজেন্সির কারণে ব্যয় বেড়ে যায়। তা বন্ধ করার চেষ্টা করবো। সৎ, সততা ও জবাবদিহি করে যাবো। চেষ্টা করবো যাতে অবাধ, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ উপহার দিতে পারি।
তিনি আরো বলেন, আমরা অত্যন্ত নাজুক মুহূর্তে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিয়েছি। এর মেয়াদ কতদিন এটা আমাদের জানা নাই। দেশের আইন–শৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সংখ্যালঘুদের দাবিসহ কিছু সংস্কার করেই একটি সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আমরা বিদায় নেব। এটা কতদিন লাগবে আগে–ভাগে বলা মুশকিল। এজন্য আমরা রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা কামনা করেছি।
সভায় চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাকিব হাসান উপস্থিত ছিলেন।