বর্ষায় ভারী বৃষ্টিতে বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা নতুন উদ্যোমে মাঠে নেমেছেন। পটিয়া–কর্ণফুলীতে আমন চাষে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ১০ হাজার কৃষক। এর মধ্যে পটিয়ায় সাড়ে ৬ হাজার ও কর্ণফুলীতে সাড়ে ৩ হাজার কৃষক আমন চাষে বর্তমানে পুরদমে মাঠে কাজ করছেন। বর্তমানে পটিয়ায় ১০ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে ও কর্ণফুলীতে ১ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ শুরু হয়েছে। দুই উপজেলার কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিগত বন্যা ও পাহাড়ি ঢল এবং ভারী বৃষ্টির ফলে কৃষকদের আমন বীজতলা, রোপা আমন ও শরৎকালীন সবজিসহ চাষাবাদে ব্যাপক ক্ষতি হয়। কৃষকদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দুই উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কৃষকদের সাথে সমন্বয় করে নতুন করে আমন চাষ শুরু করেছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষক মাঠ স্কুল/প্রশিক্ষণ, উঠান বৈঠকসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে কৃষকদের নানামুখী প্রশিক্ষণ ও পরামর্শের ভিত্তিতে আমন চাষে নতুন করে স্বপ্ন বুনছেন কৃষকরা।
জানা যায়, পটিয়া উপজেলায় ২০২৩–২৪ মৌসুমে উফশী ১০ হাজার ৩৪৫ হেক্টর, হাইব্রিড–১০০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৪৩০ হেক্টরসহ মোট ১০ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এখন পর্যন্ত উফশী ৭ হাজার ২৫৫ হেক্টর, হাইব্রিড ২৪৪ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের ৩২৪ হেক্টরসহ মোট ৭ হাজার ৮২৩ হেক্টর আমন আবাদ অর্জিত হয়েছে। আবাদ কার্যক্রম এখনো চলমান রয়েছে। প্রায় ২৫ হাজার কৃষক আমন আবাদ করেছেন। প্রণোদনার আওতায় পটিয়া উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন এবং পৌরসভার ৮০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ধানের বীজ বিতরণ করা হয়। এছাড়াও রাজস্ব প্রকল্পের আওতায় ২০টি এবং আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃষক পর্যায়ে উন্নতমানের ধান, গম, পাট বীজ উৎপাদন সংরক্ষণ ও বিতরণ প্রকল্পের আওতায় ১২টি আমন প্রদর্শনী বাস্তবায়নের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। গত ২০২২–২৩ মৌসুমে বাস্তবায়িত আমন প্রদর্শনীর সংরক্ষিত ২৯ মেট্রিক টন বীজ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মাঝে বীজ বিনিময় করা হয়।
এদিকে কর্ণফুলী উপজেলায় বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ১৮৭.২ হেক্টর এবং ৭৯ কোটি ৭৩ লাখ ২৮ হাজার টাকার ক্ষতি হয়। এতে ২ হাজার ১২০ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৮২ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল নষ্ট হয়। বর্তমানে কর্ণফুলীতে আমন ধানের চাষ করছেন সাড়ে ৩ হাজার কৃষক এবং ১ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে এবার আমন চাষ হচ্ছে।
পটিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার কল্পনা রহমান জানান, বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে চাষাবাদ ও আমনের চারা আদান প্রদানসহ বিভিন্নভাবে কৃষকদের মাঝে সমন্বয় করা হচ্ছে। তাছাড়াও কৃষকদের পরামর্শ প্রশিক্ষণ এবং প্রণোদনার মাধ্যমে কৃষকদের আমন চাষে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।
কর্ণফুলী উপজেলা কৃষি অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মেহিদী হাসান বলেন, প্রণোদনা মুটিবেশনের মাধ্যমে কৃষকরা আমন চাষে সফলতা পাবে। যার জন্য উপজেলার বিভিন্ন কৃষি অফিসাররা মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সাথে সমন্বয়য়ের মাধ্যমে কাজ করছে।