আমদানির ৮ বছর পর ধরা পড়ল মিথ্যা ঘোষণার চালান

ক্যাপিটাল মেশিনারির ঘোষণায় এলো সনি টিভি ও বেনসন সিগারেট

জাহেদুল কবির | মঙ্গলবার , ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪ at ৭:৫৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে ক্যাপিটাল মেশিনারির ঘোষণায় আসা কন্টেনারভর্তি ৩২ ইঞ্চি সনি টিভি ও বেনসন সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টমসের অডিট ইনভেস্টিগেশন অ্যান্ড রিসার্চ (এআইআর) শাখা এবং কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রামের কর্মকর্তারা। গতকাল চট্টগ্রামের কাস্টমস কর্র্তৃপক্ষ অখালাসকৃত পণ্য নিলামের তোলার জন্য ইনভেন্ট্রি (গণনা) চলাকালে মিথ্যা ঘোষণায় আসা চালানটি জব্দ করা হয়। তবে কাস্টমস কর্তারা বলছেন, ইনভেন্ট্রির কাজ এখনো শেষ হয়নি। মিথ্যা ঘোষণায় কি পরিমাণ টিভি ও সিগারেট এসেছে এবং শুল্ক ফাঁকির পরিমাণ ইনভেন্ট্রি শেষে জানা যাবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের এআইআর শাখা সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর খিলক্ষেতের ডুমনি এলাকার হেনান আনহুই এগ্রো এলসি নামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গত ২০১৭ সালে চীন থেকে ১৪৪ প্যাকেজে কারখানার ক্যাপিটাল মেশিনারি আমদানির ঘোষণা দেয়। চালানটি খালাসে আমদানিকারকের প্রতিনিধি নগরীর ধনিয়ালাপাড়া ডিটি রোডের সিএন্ডএফ এজেন্ট রাবেয়া এন্ড সন্স গত ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। যার নম্বর২৯১৪২১। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর চট্টগ্রাম এবং কাস্টমসের এআইআর শাখা চালানটি বিল অব এন্ট্রি দাখিলের দিনই লক করে দেয়। ফলে আটকে যায় খালাস কার্যক্রম।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপকমিশনার মো. সাইদুল ইসলাম দৈনিক আজাদীকে বলেন, ক্যাপিটাল মেশিনারির ঘোষণায় রাজধানীর একজন আমদানিকারক সনি টিভি ও সিগারেট নিয়ে এসেছে। চালানটি এখনো গণনার কাজ শেষ হয়নি। গণনা শেষে কি পরিমাণ এসেছে এবং আমদানিকারক কি পরিমাণ শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা করেছে, সেটি জানা যাবে। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির জন্য আমদানিকারকের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের কয়েকজন সেবাগ্রহীতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, যে চালানটি এখন জব্দ করা হয়েছে, সেটি ২০১৭ সালে এসেছে। অর্থাৎ প্রায় ৮ বছর আগে। মূলত আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় সেই সময় পণ্য এনে খালাসের সুযোগ না পেয়ে খালাস নেয়নি। তবে তারপরেও একশ্রেণীর অসাধু আমদানিকারক জালিয়াতির নিত্য নতুন পন্থা আবিস্কার করে দিব্যি পণ্য চালান খালাস করে নিয়ে যান। এসব চালান খালাসে কিছু অসাধু কাস্টমস কর্মকর্তার সহায়তার সংশ্লিষ্টতাও বিভিন্ন সময় পাওয়া গেছে। তাই মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য চালান আমদানির সাথে জড়িত আমদানিকারকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া দরকার।

উল্লেখ্য, ঢাকার তোপখানা রোডের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান লোটাস সার্জিক্যাল হুইল চেয়ারর ঘোষণায় তিন কন্টেনারের মধ্যে দুই কন্টেনার ইট ও ৩৯টি হুইল চেয়ার নিয়ে আসে। গত ২২ ডিসেম্বর নিলামে তোলার জন্য চালানটির ইনভেন্ট্রি চলাকালে বিষয়টি ধরা পড়ে। গত ২০১৯ সালের এপ্রিলে আমদানিকারক পণ্য চালানটির নথিপত্র অনলাইনে জমা দিলেও জালিয়াতির বিষয়টি প্রায় সাড়ে ৫ বছর উদঘাটন করেন কাস্টমসের কর্মকর্তারা। চালানটি চীনের গুয়াংডংয়ের গুয়াংডং সেইলিং ট্রেড গ্রুপ থেকে চালানটি আমদানির কথা বলা হয়। তবে কাস্টমস কর্মকর্তাদের দাবি করেন, হুইল চেয়ার আমদানির ঘোষণায় আমদানিকারক মূল্যহীন ইট এনে অর্থপাচার করেছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধযুক্তরাজ্যে টিউলিপের ওপর চাপ বাড়ছে
পরবর্তী নিবন্ধএস আলমের ৮ প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করতে দুদকের চিঠি