পিএসসির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে আলোচিত গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জীবনের বিরুদ্ধে পৌনে চার কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন–দুদক। গতকাল রোববার তার ও পরিবারের বিরুদ্ধে মোট তিনটি মামলা করা হয় বলে জানিয়েছেন সংস্থার মহাপরিচালক আক্তার হোসেন। তিনি দুদক কার্যালয়ে ব্রিফিংয়ে বলেন, আবেদ আলীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ৩ কোটি ৭২ লাখ ৯৯ হাজার ৯৯৭ টাকা আয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তার ১২টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ২০ কোটি ৮৮ লাখ ১৬ হাজার ৯৭১ টাকা জমা এবং ২০ কোটি ৪১ লাখ ৩ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা উত্তোলনের তথ্য পাওয়া গেছে। এই লেনদেনকে দুদক ‘সন্দেহজনক’ হিসেবে দেখছে জানিয়ে মহাপরিচালক আক্তার বলেন, ‘দুর্নীতি ও ঘুষের’ মাধ্যমে পাওয়া অর্থ বা সম্পত্তির উৎস গোপন করার অভিযোগ আনা হয়েছে আবেদের বিরুদ্ধে। খবর বিডিনিউজের।
দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয় বলে জানান দুদকের ডিজি আক্তার। তিনি বলেন, আবেদ আলীর স্ত্রী শাহরিন আক্তার শিল্পী ও তার ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে শিল্পীর বিরুদ্ধে ১ কোটি ২৬ লাখ ৬৩ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার দুটি ব্যাংক হিসাবে ১ কোটি ৭৮ লাখ ৭৬ হাজার ৬৩৬ টাকা জমা এবং ১ কোটি ৭৭ লাখ ৬৪ হাজার ৯৫ টাকা উত্তোলনের তথ্য মিলেছে। একে সন্দেহজনক লেনদেন হিসেবে মামলার অভিযোগে বর্ণনা করা হয়েছে।
আবেদ আলীর মতো তার স্ত্রীর বিরুদ্ধেও দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪–এর ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। দুদক মহাপরিচালক আক্তার জানান, আবেদ আলীর ছেলে সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়ামের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারায়।
পিএসসির তথ্যানুযায়ী, আবেদ আলী ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর গাড়িচালক হিসেবে সংস্থাটিতে যোগ দেন। ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিলে নন–ক্যাডার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ‘সহকারী মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার’ পদে লিখিত পরীক্ষায় লিখিত উত্তরপত্র সরবরাহ করার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয় এবং অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তিনি চাকরিচ্যুত হন।