নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে যারা আবেদন করেছে, তাদের ছোটখাটো ত্রুটি সংশোধনে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল মঙ্গলবার ইসি উপসচিব (নির্বাচনী সহায়তা ও সমন্বয়) মাহবুব আলম শাহ্ এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসির সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় দলিলাদিসহ অন্যান্য ত্রুটি সংশোধনের জন্য দলগুলোকে বলা হয়েছে। নিবন্ধন আবেদন যারা করেছে, আজ থেকে ধাপে ধাপে তাদের কাছে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ১৪৪টি দলের ১৪৭টি নিবন্ধন আবেদন জমা পড়েছে। আগ্রহী দলগুলো নিবন্ধনের শর্তপূরণে প্রয়োজনীয় কাগজসহ ২২ জুনের মধ্যে আবেদনের শেষ সময় ছিল। এসব আবেদন যাচাই–বাছাইয়ে ইসি সচিবালয়ের ২০ জন কর্মকর্তা কাজ করছেন। খবর বিডিনিউজের।
নিবন্ধন বিধিতে বলা হয়েছে, আবেদনের সঙ্গে দলিলাদি যুক্ত করে না থাকলে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া যাবে। এ বিধি অনুযায়ী ত্রুটি সংশোধনে সময় দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় নিবন্ধন সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে। সেই অনুযায়ী গতকাল থেকে দলগুলোকে চিঠি দেওয়া শুরু হয়েছে। আবেদনপত্র যাচাই–বাছাই শেষে টিকে থাকা দলগুলো নিবন্ধন শর্ত পূরণ করছে কিনা তা যাচাই করতে মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন নেবে কমিশন। কোনো দলের নিবন্ধন নিয়ে কারো আপত্তি রয়েছে কিনা তাও দেখা হবে।
বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পর আপত্তি পেলে দুই পক্ষের শুনানি নিয়ে আবেদন মঞ্জুর বা নামঞ্জুর করবে কমিশন। বাছাইয়ে টিকে গেলে এবং দাবি–আপত্তি নিষ্পত্তি হয়ে গেলে শেষ ধাপে নিবন্ধন সনদ পাবে দলটি।
আবেদনের সঙ্গে কী কী যুক্ত করা হয়েছে বা হয়নি তা তুলে ধরে সংশ্লিষ্ট দলের চেয়ারম্যান বা মহাসচিবকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে : ১. দলটির ফরম পূরণের সময় প্রমাণক সংযুক্ত করা হয়েছে কিনা ২. দলের পক্ষে আবেদন করার ক্ষমতাপত্র সংযুক্ত করা হয়েছে কিনা ৩. দলের অস্তিত্ব ও ধারাবাহিকতার প্রমাণক হিসেবে দল গঠনের পর বা সর্বশেষ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পর হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন কার্যক্রম এবং পূর্বসূরীদের ধারাবাহিকতার সমর্থনে তথ্য প্রমাণ বা পেপার ক্লিপিংসহ বিস্তারিত বিবরণ সংযুক্ত করা হয়েছে কিনা ৪. গঠনতন্ত্রে কেন্দ্রীয় কমিটিসহ সব পর্যায়ের কমিটিতে সদস্য নির্বাচনের বিধান রাখা হয়েছে কিনা ৫. কোনো পর্যায়ের কমিটিতে ৩৩% নারী সদস্য পদ সংরক্ষণের বিধান রাখা হয়েছে কিনা ৬. গঠনতন্ত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক বা ছাত্র, বিভিন্ন পেশার সদস্য এবং আর্থিক, বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের সমন্বয়ে সহযোগী বা অঙ্গ সংগঠনের বিধান রাখা হয়েছে কিনা ৭. সংসদ সদস্য নির্বাচনের লক্ষ্যে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা বা উপজেলা বা ক্ষেত্রমতো জেলা কমিটির সদস্যদের প্যানেল থেকে দলের কেন্দ্রীয় সংসদীয় বোর্ডের মাধ্যমে প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করার বিধান রাখা হয়েছে কিনা ৮. গঠনতন্ত্রে দেশের ভৌগোলিক সীমার বাইরে অফিস, শাখা বা কমিটি গঠন ও পরিচালনার বিধান রাখা হয়েছে কিনা ৯. দলের কোনো দলিল বা কার্যক্রম সংবিধান পরিপন্থি নয় এবং দলে কোলাবরেটর (স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল) অর্ডার ১৯৭২ এবং ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস (ট্রাইব্যুনাল) অ্যাক্ট ১৯৭২ এর অধীন দণ্ডিত কোনো ব্যক্তি নেই মর্মে দলীয় প্রধানের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করা হয়েছে কিনা ১০. গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী দলের গঠনতন্ত্র আছে কিনা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে ইসির চাহিদা অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করতে হবে। শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে নিবন্ধনের অযোগ্য বলে গণ্য হবে।