আবারও বোর্ড কর্তাদের নিয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্য সাকিবের

দিলেন আইপিএল খেলতে চাওয়ার ব্যাখ্যা, হতে চান বিসিবি সভাপতি

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ২২ মার্চ, ২০২১ at ৬:৪৫ পূর্বাহ্ণ

নিউজিল্যান্ড সফর থেকে সন্তান সম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকতে ছুটি নিয়েছেন সাকিব। সেটা মানবিক দৃষ্টিতেই দেখেছেন সবাই। কিন্তু আইপিএল খেলতে শ্রীলংকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে না খেলে ছুটি নিয়েছেন সাকিব। এতে সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশের ক্রিকেট ভক্ত থেকে শুরু করে সবার। এতোদিন চুপ থাকলেও এবার মুখ খুলেছেন সাকিব। আর তাতে বিসিবি কর্মকর্তাদের নিয়ে আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন। বিশেষ করে বিসিবির অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানকে আক্রমণটা করেছেন বেশি।
পাশাপাশি বিসিবি সভাপতি হওয়ার খায়েসও দেখিয়েছেন। ক্রিকেট ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ক্রিকফ্রেঞ্জির আয়োজনে বিশেষ সাক্ষাৎকারে আইপিএল খেলতে ছুটি নেওয়া প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, আমি চিঠিতে কোথাও লিখিনি টেস্ট খেলতে চাইনা। চিঠিটা আকরাম খান পড়েও দেখেছেন বলে মনে হয়না। আর সে কারণেই তিনি বলছেন আমি টেস্ট খেলতে চাইনা। সাকিব জানান, যেহেতু আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ভারতে তাই আমি সেখানে আইপিএল খেলে নিজেকে প্রস্তুত করতে চাইছি। যা আমার নিজের জন্য যেমন কাজে লাগবে তেমনি দলের অন্যদেরও আমি সে অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারবো। যা দলের জন্য উপকারে আসবে বলে আমি মনে করি। সাকিব বলেন, ওই সময় টেস্ট সিরিজ না হয়ে অন্য খেলা থাকলেও আমি একই আবেদন করতাম। আকরাম খান চিঠিটা না পড়ে আমার সম্পর্কে টেস্ট খেলতে ইচ্ছুক না বলে মন্তব্য করেছেন।
সাক্ষাতকারের এক পর্যায়ে চালাক সাকিব অবশ্য বেশ প্রশংসা করেছেন বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন এবং বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনের। সাকিব ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খানকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেন, ক্রিকেট অপারেশন্স জাতীয় দল নিয়ে কী কাজ করেছে। কী প্ল্যান করছে? তাদের ব্যর্থতা বা সাফল্য কী ? আকরাম ভাই তো অনেক সাহসী মানুষ, এর আগে উনি পদত্যাগও করেছেন। ব্যর্থতার দায় তো তার ওপরও পড়ে। সাকিব বলেন, আমাদের এইচপি শেষ চার-পাঁচ বছরে কয়টা খেলোয়াড় তৈরি করেছে আমি জানি না। বোর্ডে এখন অনেকেই আছেন যারা একসময় বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। তারা আসলে বোর্ডে কী নিয়ে কাজ করছেন আমি জানি না। বিসিবির প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান পাপন আর পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজন ছাড়া বাকিরা কী কাজ করেছেন, ক্রিকেটের উন্নতির জন্য তা খুঁজে পাচ্ছেন না সাকিব। আমাদের একাডেমি বা এইচপিতে এমন তো কোনো কাজ দেখি না। সুজন ভাই ছাড়া কারও খুব বেশি সম্পৃক্ততা নাই। গত চার-পাঁচ বছরে আমি তো কিছু দেখি না। পাইপলাইনে এমন কোন খেলোয়াড় কি আছে যে এসে আরেকজনের জায়গাটা পূরণ করবে। এমন কিছু কি হয়েছে? বিসিবি প্রেসিডেন্টের অবদানের কথাও আলাদা করে উল্লেখ করে সাকিব বলেন, আমরা সব সময় পাপন ভাইকে দোষ দেই। পাপন ভাই আমার কাছে মনে হয় যত বেশি চিন্তা করে, তত চিন্তা ক্রিকেট বোর্ডে খুব কম মানুষই করে। সুজন ভাই চিন্তা করে বলেই ফলটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। যুবদল ভালো করছে। এই দু’জন ছাড়া কৃতিত্ব দেওয়ার মতো কোন মানুষ দেখিনা ক্রিকেট বোর্ডে। যারা আসলে ক্রিকেটটা নিয়ে ভাবছে।
সাক্ষাতকারের এক পর্যায়ে বিসিবির প্রেসিডেন্ট হতে চান বলেও জানান সাকিব। ভবিষ্যতে তার সেই ইচ্ছে আছে। শুধু তাই নয় বিসিবির ইতিহাসের সেরা প্রেসিডেন্ট কেবল তিনিই হতে পারেন বলেও মন্তব্যও করেছেন সাকিব। ক্রিকেটে যদি থাকি আর বিসিবি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সুযোগ থাকে অবশ্যই আমি হবো। আমি জানি আমি বিসিবির ইতিহাসের সেরা প্রেসিডেন্ট হবো। এটা আমি ভালোভাবে বিশ্বাস করি আমার পক্ষে তা সম্ভব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলেডি গ্যাং লিডার সিমির সহযোগী মেহেরুল অবশেষে গ্রেপ্তার
পরবর্তী নিবন্ধবাহারছড়ায় বেড়িবাঁধ কেটে মাছের ঘের নির্মাণের অভিযোগ, উত্তেজনা