আবদুল্লাহ আল নোমান চলে গেছেন। তিনি আর ফিরবেন না। তাঁর চির বিদায়ে বড় ক্ষতি হয়ে গেল চট্টগ্রামের। তাঁর মাপের আর কোন নেতা চট্টগ্রামে নেই। না বিএনপি, না আওয়ামী লীগ। অবশ্য খসরু ভাই আছেন, তাঁর কথা মনে রেখেও আমি একথা বলছি। খসরু ভাইও বড় নেতা, তিনি এখন বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও নীতিনির্ধারক, যেটা নোমান ভাই ছিলেন না। তাছাড়া বিএনপি ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজন যে ক’জন নেতা বর্তমানে বিএনপিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আছেন, তাঁদের মধ্যে সম্ভবত মহাসচিব মির্জা ফখরুলের পরেই খসরু ভাইয়ের স্থান। তা সত্ত্বেও পাবলিক লিডারের ইমেজে নোমান ভাই এগিয়ে ছিলেন।
বিভিন্ন সময়ে আমরা কোন কোন রাজনীতিবিদকে চট্টগ্রামের অভিভাবক হিসেবে চিহ্নিত করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। এমএ আজিজ, জহুর আহমদ চৌধুরী, এম এ হান্নান, আবদুল্লাহ আল হারুন (আবদুল্লাহ আল নোমানের বড় ভাই), এমনি তিনটি নাম, যাঁরা নিজ নিজ সময়কালে চট্টগ্রামের অভিভাবক হিসেবে পরিগণিত হতেন। তাঁরা অনেক বড় মাপের নেতা, তাঁদেরকে এই আলোচনায় টেনে আনলে, তাঁরা আমাদের মধ্যে যে শ্রদ্ধার আসনে আসীন আছেন, তা হয়তো টলে যেতে পারে। এ কারণে তাঁদের পরবর্তী নেতৃবৃন্দ থেকে আলোচনা শুরু করার চেষ্টা করছি। প্রথমে মনে পড়ছে সিরাজুল হক মিয়ার কথা। তিনি শুধু রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, সামাজিক নেতাও ছিলেন। এছাড়া তিনি দুর্দান্ত সাহসী নেতা ছিলেন। এসব কারণে সিরাজ মিয়া তাঁর সময়ে চট্টগ্রামের অভিভাবক স্থানীয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন। এরপরই যাঁর কথা বলতে হয়, তিনি মান্নান ভাই। নোমান ভাইকে শুধু তাঁর সঙ্গেই তুলনা করা যেতে পারে। ধীরস্থির, শান্তশিষ্ট, প্রজ্ঞাবান, যুক্তিবাদী, দূরদর্শী এবং অতুলনীয় সংগঠক ছিলেন তিনি। নোমান ভাইও অনুরূপ গুণের অধিকারী রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। নোমান ভাই যেমন এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন, মান্নান ভাইও তেমনি এমপি ও মন্ত্রী ছিলেন। নোমান ভাই ষাটের দশকের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ছাত্রনেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের বিশিষ্ট সংগঠক ছিলেন। মান্নান ভাই এখানে তাঁর চেয়ে এগিয়ে আছেন। তিনি ৬২ সালে ছাত্র আন্দোলনের জন্য গঠিত সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলেন। নোমান ভাই আরেকটু পরে ছাত্র আন্দোলনে যোগ দেন। মান্নান ভাই ৭১–এ ৭ মার্চ রেসকোর্সে ঐতিহাসিক ভাষণে বঙ্গবন্ধু জেলায় জেলায় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংগ্রাম পরিষদ গঠনের নির্দেশ দিলে তখন চট্টগ্রামে যে সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়েছিলো, মান্নান ভাই তার অন্যতম সদস্য ছিলেন। মান্নান ভাই মুক্তিযুদ্ধে গঠিত মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) দক্ষিণ–পূর্ব অঞ্চলের অধিনায়ক শেখ ফজলুল হক মনির অধীনে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের কমান্ডার ছিলেন। নোমান ভাই মুক্তিযুদ্ধে ভারতে গিয়ে কাজী জাফর প্রমুখ বামপন্থী প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা ‘কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলা সমন্বয় কমিটি’ নামে যে সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন, নোমান ভাই তার অন্যতম সংগঠক ছিলেন। তাঁকে পূর্বাঞ্চলের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছিলো। সেসময় মেজর জিয়াউর রহমানের সাথে সমন্বয় কমিটির বৈঠক হয়েছিলো। জিয়া তাঁদেরকে যুদ্ধে অংশগ্রহণের সুযোগ অবারিত করেছিলেন এবং অস্ত্র সরবরাহ করেছিলেন। সেসময় ক্যাপ্টেন ঘোষ নামে ভারতীয় বাহিনীর একজন অফিসার জিয়াকে সহযোগিতা করেছিলেন। ক্যাপ্টেন ঘোষ সিপিএম’এর সমর্থক ছিলেন। ক্যাপ্টেন ঘোষকে যুদ্ধের ট্রেনিং নেওয়ার জন্য ভারতের হরিণায় গিয়ে আমি দেখেছি এবং একদিন শুভপুর ব্রিজ উড়িয়ে দেয়ার জন্য মেজর জিয়া আমি এবং আরো তিনচারজন মুক্তিযোদ্ধাকে ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি শুভপুরে নিয়ে গিয়েছিলেন। তখন ক্যাপ্টেন ঘোষও আমাদের সঙ্গে ছিলেন।
মান্নান ভাই তাঁর সময়ে চট্টগ্রামের অভিভাবক হিসেবে পূজিত হতেন। তাঁর পরে বাবু ভাই (আখতারুজ্জামান চৌধুরী) এবং সর্বশেষ মহিউদ্দিন ভাইকে চট্টগ্রামের অভিভাবক মানা হতো।
নোমান ভাই এমপি ও মন্ত্রী হয়ে চট্টগ্রামের জন্য এককভাবে যা করেছিলেন, সেটা ভেবেই আমি বলছি, তাঁর মৃত্যুতে চট্টগ্রামের অপরিসীম ক্ষতি হয়েছে। এবার তিনি চট্টগ্রামের জন্য কি করেছেন, সেটা বলি। নোমান ভাই তিনবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। প্রথম ৯১ খ্রিস্টাব্দে মহিউদ্দিন চৌধুরীকে পঞ্চম জাতীয় সংসদের সদস্য, দ্বিতীয় ষষ্ঠ জাতীয় সংসদে এবং অষ্টম জাতীয় সংসদে ৩য় বারের মত জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৯১ তে প্রথমে বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী এবং পরে মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রী; ষষ্ঠ জাতীয় সংসদের মেয়াদকালে শ্রম ও পরিবেশ এবং মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রী; অষ্টম সংসদের মেয়াদকালে মৎস্য ও পশুসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
নোমান ভাই তাঁর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে সরকারে অধিষ্ঠিত থাকার সুবাদে যে সমস্ত উন্নয়ন কাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রেখে কৃতিত্ব অর্জন রেখেছেন, তার কিছু এখানে উল্লেখ করা হলো : ক. ২০০৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর দাবির প্রেক্ষিতে সরকার চট্টগ্রামকে বাণিজ্যিক রাজধানীতে উন্নীতকরণের ঘোষণা দেয়। খ. আবদুল্লাহ–আল নোমান জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আল্টিমেটামের মাধ্যমে তৃতীয় কর্ণফুলী পিলার সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করতে সরকারকে বাধ্য করেন। গ. চট্টগ্রামে ভেটেরিনারি সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন। ঘ. চট্টগ্রাম টিভি কেন্দ্র স্থাপন। ঙ. আন্তর্জাতিক মানে চট্টগ্রাম স্টেডিয়ামের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ। চ. চট্টগ্রাম–ঢাকা মহাসড়ক চার লেন প্রশস্তকরণ প্রকল্প গৃহীত হয় তাঁরই উদ্যোগে। ছ. মিরসরাই থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত সাগর ও নদী পাড়ের উপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ। জ. এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা। ঝ. চট্টগ্রাম মহানগরীর খাজা রোডের ড্রেন নির্মাণসহ উন্নয়ন। ঞ. চট্টগ্রাম মহানগরীকে আইসিসিটি ও সম্পূর্ণ মাস্টার প্ল্যানের আওতায় আনয়নের উদ্যোগ গ্রহণ। ট. আগ্রাবাদে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার প্রতিষ্ঠা। ঠ. নিজস্ব ভূমিতে চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড প্রতিষ্ঠা ও বোর্ড ভবন নির্মাণ। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর নির্মাণ। ড. শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা। ঢ. চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালকে ২৫০ বেডের হাসপাতালে উন্নীতকরণ। ণ. রাউজান বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ২১০ মেগাওয়াটে উন্নীতকরণ। ত. টিএন্ডটির মাধ্যমে চট্টগ্রামে ৮১,০০০ টেলিফোন সংযোগের ব্যবস্থাকরণ ইত্যাদি।
এছাড়াও, তিনি মসজিদ, মাদ্রাসা, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা, কবরস্থান, খেলার মাঠ, ছোট–বড় রাস্তা, নালা–নর্দমা নির্মাণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে নগরীর প্রভূত উন্নয়ন সাধনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। তিনি ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত অল ইন্ডিয়া কংগ্রেসে যোগ দেন এবং ফারাক্কা বাঁধের কারণে বাংলাদেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার উপর বলিষ্ঠ বক্তব্য রাখেন।
আবদুল্লাহ আল নোমান ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির চর্চা করতেন। তিনি তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কখনও সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দেননি। বরং তাঁর জীবনকালে যতবার সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে বা হওয়ার উপক্রম হয়েছে, তিনি তা প্রতিরোধ করার জন্য চেষ্টা করেছেন। হিন্দু সাম্প্রদায়ের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হতে দেখতে তিনি অটল হিমাদ্রির মত দাঁড়িয়ে যেতেন। একারণে চট্টগ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় দলগতভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন বা ভোটদান করলেও ব্যক্তিগতভাবে আবদুল্লাহ–আল নোমানকে তারা সমর্থন করতেন এবং নির্বাচনে অনেকেই তাঁর পক্ষে ভোটদান করতেন। তিনি মন্ত্রী থাকাকালে তাঁর বড় ভাই আবদুল্লাহ আল হারুনের প্রেরণায় রাউজানে মাস্টারদা সূর্যসেনের সমাধিতে মাস্টারদা সূর্যসেন কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠান করেছিলেন।
আবদুল্লাহ আল নোমান ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে রাউজান থানার গহিরা গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আহমদ কবীর চৌধুরী ও পিতামহ আবদুল লতিফ মাস্টার দু’জনই বিশিষ্ট শিক্ষাব্রতী ও সমাজহিতৈষী ছিলেন। তাঁর পিতা রাউজান স্কুল, বড় ভাই আবদুল্লাহ আল হারুন রাউজান কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন এবং নোমানও বাকলিয়ায় একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন।
আবদুল্লাহ–আল–নোমান শৈশব থেকে সমাজ সচেতন, সংস্কৃতিমনস্ক ও রাজনীতির প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। দীর্ঘ অর্ধশতাধিক বছরের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে বিভিন্ন সাংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থেকে অসংখ্য আন্দোলন–সংগ্রামে নেতৃত্ব দেন। মঙ্গলবার যখন তিনি অনন্তধামে প্রস্থান করছেন, তখনও তিনি বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।
স্কুলে থাকতেই ১৯৫৯–১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে তিনি কাজেম আলী হাইস্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় স্কুলের বার্ষিকী সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে রাউজান হাইস্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন। সেটা ছিল ঢাকা বোর্ডের শেষ ব্যাচ। এসএসসি পাস করে ভর্তি হন চট্টগ্রাম সরকারি কলেজে।
আবদুল্লাহ আল নোমান ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দের শরীফ শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট ও ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট ও সামরিক আইন বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দের সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি কমিটি এবং আইয়ুব বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন।
১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে চট্টগ্রাম কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি কলেজের সাহিত্য ও ম্যাগাজিন সম্পাদক নির্বাচিত হন। স্কুলে থাকতেই তিনি ১৯৫৯–১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। তিনি ১৯৬৩–৬৪ খ্রিস্টাব্দে প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের শহর শাখার সাধারণ সম্পাদক, ১৯৬৬–৬৭ খ্রিস্টাব্দে জেলা কমিটির সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃত্বে থেকে সংগঠনকে সংগঠিত ও নেতৃত্ব দেন। ১৯৬৮–৬৯ খ্রিস্টাব্দে কেন্দ্রীয় সহ–সভাপতি নির্বাচিত হন।
তিনি ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদে’র যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি ১৯৬৮ খ্রিস্টাব্দে গ্রেফতার হন এবং কারাগার থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানকালে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে গণআন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের ২২ ফেব্রুয়ারির এক জনসভায় বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা বলার কারণে তৎকালিন ইয়াহিয়া খানের সামরিক আদালত তাঁকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে।
১৯৬৪ খ্রিস্টাব্দে ছাত্রদের পক্ষ থেকে গঠিত ‘সামপ্রদায়িক সমপ্রীতি’ কমিটির নেতা হিসাবে ছাত্রদের নেতৃত্ব দেন। তিনি ছাত্রদের নিয়ে সামপ্রদায়িক দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে কাজ করেন। ঐ সময় মোমিন রোডে হরিখোলা মাঠে ত্রাণ কমিটির অফিস ছিল।
৬৮ খ্রিস্টাব্দে থার্ড ডিভিশন আন্দোলনে নেতৃত্বদানকালে মুসলিম হাইস্কুলের সামনে থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। ১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে মুক্তিলাভ করেন।
১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে ছাত্রদের ১১ দফার মাধ্যমে সৃষ্ট গণঅভ্যুত্থানকে চট্টগ্রামে সংগঠিত করেন। ৬৮–৬৯ সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হলে তিনি অন্যতম আহবায়ক নিযুক্ত হন। অপর তিন আহবায়ক ছিলেন আবু তাহের মাসুদ, সৈয়দ শামসুল আলম ও মোখতার আহমদ।
আবদুল্লাহ আল নোমানের স্ত্রী তাসমিন আরা বেগম অর্থনীতিতে বি.এ. অনার্স ও এম.এ; তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক। এনায়েত বাজার মহিলা কলেজ থেকে অবসর নেন।
নোমান এক পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। তাঁর শ্বশুর সৈয়দ এজাজউদ্দিন আহমদ ছিলেন চাকরিজীবী। নিবাস রাউজান থানার কোয়েপাড়া গ্রামের মৌলভী পাড়া সাব রেজিস্ট্রার বাড়ি। পুত্র সাঈদ–আল–নোমান যুক্তরাষ্ট্রের মিচিগান ইউনিভার্সিটি থেকে বিজনেস স্টাডিজ–এ অনার্স ও মাস্টার্স। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্স এন্ড পলিটিকেল সায়েন্স (এল.এস.ই) এ পাবলিক পলিসি এন্ড পাবলিক চয়েস বিষয়ে পি.এইচ.ডি গবেষণারত। পুত্রবধূ সাজিয়া–আবদুল্লাহ (যুক্তরাষ্ট্রের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটিতে ইন্টারন্যাশনাল মার্কেটিং এন্ড ম্যানেজমেন্ট–এ মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। কন্যা ডা. তাজিন নোমান (এম.বি.বি.এস) বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিসিন বিভাগে মেডিক্যাল অফিসার হিসাবে কর্মরত। জামাতা ডা. মুহাম্মদ সাদেকুল হক (এফ.সি.পি.এস,বি.সি.এস। স্বাস্থ্য) বর্তমানে বিদেশে অধ্যয়নরত।
লেখক: সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, সাংস্কৃতিক সংগঠক।