আবদুল্লাহ আল নোমান আমৃত্যু মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভায় নেতৃবৃন্দ

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৯ মার্চ, ২০২৫ at ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

আবদুল্লাহ আল নোমান আমৃত্যু মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান কিংবদন্তী রাজনীতিবিদ ছিলেন। দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপিকে সংগঠিত করতে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন। চট্টগ্রাম বিএনপি তার হাতে গড়া সংগঠন এবং তিনি ছিলেন আমাদের সকলের নেতা। আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন কর্মী ও নেতা সৃষ্টির কারিগর।

তিনি গতকাল শনিবার বিকেলে নগরের জিইসি কনভেশন সেন্টারে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের উদ্যোগে আয়োজিত সদ্য প্রয়াত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের শোকসভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বক্তব্য রাখেন আবদুল্লাহ আল নোমানের সন্তান তরুণ রাজনীতিবিদ সাঈদ আল নোমান।

শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, একটি শোষণবঞ্চনামুক্ত, দুঃখদারিদ্র্যমুক্ত আধুনিক বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমাদের সবাইকে রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমি দেশবাসীকে তারেক রহমানের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লড়াইয়ে এগিয়ে যাবার আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান শুধু চট্টগ্রামের নেতা ছিলেন না, শুধু এই বীর চট্টগ্রামের বীর সন্তান ছিলেন না, তিনি সারা বাংলাদেশের শোষিতবঞ্চিত মানুষের মধ্যে মিশে আছেন। শোষণবঞ্চনামুক্ত একটি রাষ্ট্র, সবার সমান অধিকারের একটি রাষ্ট্র গঠনের জন্য নোমান তার যৌবনে যে বিপ্লবী আদর্শে দীক্ষিত হয়েছিলেন, মানুষের জন্য সংগ্রামের যে রাজনীতি তিনি শুরু করেছিলেন, সেই রাজনীতির একজন সহযোদ্ধা আমিও ছিলাম।

শিমুল বিশ্বাস বলেন, আমৃত্যু নোমান ভাই সংগ্রামের রাজনীতিকেই আঁকড়ে ধরে ছিলেন। জীবনে কী পেলেন আর কী পেলেন না, রাজনীতিতে কী পেলেন আর কী পেলেন নাসেই ব্যক্তিগত প্রাপ্তির চিন্তাভাবনাকে তিনি তুচ্ছজ্ঞান করে দূরে সরিয়ে রেখেছেন আজীবন। এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, কুলি, মুটে, মজুর, জেলে, কামার, কুমার, মেহনতি মানুষ, সর্বহারাসবার মুখে হাসি ফোটানোর রাজনীতিই তিনি করে গেছেন। দেশমাতৃকার জন্য যুদ্ধ করেছেন, সেই দেশপ্রেম নিয়েই আমৃত্যু ছিলেন।

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, আবদুল্লাহ আল নোমান ছিলেন চট্টগ্রামের উন্নয়নের রূপকার। ’৯১ ও ২০০১ সালে সরকারের মন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি চট্টগ্রামে অসংখ্য উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছেন। চট্টগ্রামের সিংহভাগ মেগা প্রকল্প আবদুল্লাহ আল নোমানের সরাসরি তত্ত্বাবধানে বাস্তবায়িত হয়েছে। তিনি সিটি কর্পোরেশনকে আমব্রেলা প্রজেক্টের মাধ্যমে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে মহানগরীর সড়কগুলোর ব্যাপক উন্নয়ন করেছিলেন।

সাঈদ আল নোমান বলেন, আমার বাবা ছিলেন একজন সৎ, পরিচ্ছন্ন ও উদারপন্থী রাজনীতিবিদ। তিনি মনে করতেন ব্যক্তির চেয়ে দল বড় এবং এই নীতিকে তিনি ব্যক্তি জীবনে ধারণ করেছেন। তিনি বিএনপি এবং শ্রমিকদলকে সংগঠিত ও শক্তিশালী করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করেছেন। তিনি মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত শহীদ জিয়ার আদর্শকে ধারণ করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে গেছেন।

তিনি বলেন, আজ এখানে হাজার হাজার শ্রমিক ভাইয়েরা আবদুল্লাহ আল নোমানের জন্য শোক জানাতে এসেছেন। আপনাদের মাঝে আমি আমার পিতাকে দেখতে পাচ্ছি। এ দেশের আপামর শ্রমিকের ঘামের গন্ধে আমার বাবার গন্ধ লেগে আছে। আবদুল্লাহ আল নোমান আপনাদের নেতা, আপনাদের একজন ছিলেন। ছোটবেলা থেকে গলা জড়িয়ে ধরে বাবা ডাকার জন্য আমি কখনো উনাকে পাইনি। তিনি সবসময় আপনাদের মাঝে ছিলেন, আপনাদের মাঝেই থাকবেন। বাবার মতো করে আমিও আপনাদের সঙ্গে মিশে থাকতে চাই। আর আমরা সকলে আগামীর বাংলাদেশ গঠনের জন্য রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকব।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহশ্রমিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খাঁন, কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ড. সিদ্দিক আহমেদ চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিছ মিয়া, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর আলম, একরামুল করিম, এম এ সবুর ও ইয়াছিন চৌধুরী লিটন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপঞ্চগড় সীমান্তে গুলিতে নিহত যুবকের লাশ নিয়ে গেছে বিএসএফ
পরবর্তী নিবন্ধমুরাদপুরে ম্যাক্সিমা চালকদের সড়ক অবরোধ, যানজট