চট্টগ্রামসহ সারা দেশের এমন কোনো স্থান নেই যেখানে প্রয়াত বিএনপির ভাইস–চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের ছোঁয়া পড়েনি। চট্টগ্রামের শিক্ষা, সাহিত্য, সাংস্কৃতি, অর্থনীতি, উন্নয়নসহ প্রত্যেক সেক্টরে তার যে অবদান তা চট্টগ্রামবাসী আজীবন মনে রাখবে। উনি আমাদের মাঝে নেই, তবে তার কাজগুলো আমাদের সবাইকে মিলেমিশে করে যেতে হবে। উনি থাকতে হাসপাতাল নির্মাণ করে গেছেন। তবে এখন সেগুলো দিয়ে সংকুলান হচ্ছে না। কারণ চট্টগ্রাম শহরে দিনদিন মানুষ বাড়ছে। চট্টগ্রাম আরও হাসপাতাল দরকার, আরও আইসিইউ, বেড দরকার। এসব কাজগুলো আমাদের এগিয়ে নিতে হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম আবদুল্লাহ আল নোমানের স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। গতকাল শনিবার সকাল ১১টায় এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন মরহুম আবদুল্লাহ আল নোমানের পুত্র সাঈদ আল নোমান তূর্য। এতে অংশ নেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ ইমরান সালেহ প্রিন্স, চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লায়ন আসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এবং চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, বাংলাদেশ জামাতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদের সদস্য, চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমীর ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী, নগর জামায়াতের এসিস্টেন্ট সেক্রেটারি মুহাম্মদ উল্লাহ, কর্মপরিষদের সদস্য আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, নগর শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল হাসান রুমি, বিএনপি নেতা আজম উদ্দীন, শায়েস্তা খান, সাংবাদিক নেতা বিএম ইমরান, শ্রমিক নেতা আবুল বাশার ভূঁইয়া, জামায়াত নেতা শহিদুল্লাহ তালুকদার, আনিছুর রহমান চৌধুরী।
বাংলাদেশ জামায়েত ইসলামী কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য এবং চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের আমীর শাহজাহান চৌধুরী বলেছেন, জাতীয় নেতা আব্দুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রামের অবিসংবাদিত নেতা ছিলেন। তিনি ছিলেন মাটি ও মানুষের নেতা। কৃষক, শ্রমিক এবং সর্বস্তরের মানুষের প্রাণস্পন্দন ছিলেন। একজন সিনিয়র সংগঠক হিসেবে তার মতো নেতাকে চট্টগ্রামে খুঁজে পাওয়া কঠিন। আমরা তার জনবান্ধব সাংগঠনিক প্রক্রিয়া ও আদর্শ অনুসরণ করি। চট্টগ্রামের সার্বিক উন্নয়নে আব্দুল্লাহ আল নোমানের অবদান চট্টগ্রামের মানুষ কখনও ভুলবে না। তিনি চট্টগ্রামকে হৃদয়ে ধারণ করতেন এবং চট্টগ্রামের সংস্কৃতিকে লালন করতেন। তিনি চাটগাঁইয়া ভাষায় কথা বলতে ভালোবাসতেন। সাঈদ আল নোমান তূর্য বলেন, আমি আমার বাবার দিকে মনভরে দেখতাম আর শিখতাম। আমি ভাবতাম, এই দিনগুলো শেষ নয়, হয়তো আব্বা আমাকে একটু সময় দিবেন। কিন্তু তিনি খুব অল্প সময়ে আমাদের একা করে চলে গেলেন। লাখো মানুষ যখন বলেন, তোমার বাবা খুব ভালো মানুষ ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার কি সম্পর্ক ছিল সেটা আমি বুঝাতে পারবো না। তখন আমি ভাবি, এই মানুষটি (আবদুল্লাহ আল নোমান) ৬৫ বছর বয়সে কি এমন করেছেন, এত মানুষের ভালোবাসা অর্জন করেছেন। ফলে আজ আমি সবাইকে জানাচ্ছি, এই সমাজের উন্নয়নে আমার যদি কোন সহযোগিতা কিংবা সম্পৃক্ততা দরকার হয়, আমাকে জানাবেন। আমার সমার্থ থাকলে আমি তা অবশ্যই করবো। এদিকে স্মরণসভাকে ঘিরে আয়োজন করা হয়েছে মেজবানের। এতে অংশ নিয়েছেন প্রায় ১৫ হাজার মানুষ। জবাই করা হয়েছে ১২টি গরু–ছাগল।