মা, বড় বোন এবং ১০ মাস বয়সী ছোট্ট আদুরে বোনটিকে হারিয়ে নির্বাক হয়ে গেছে মুশফিকা ইয়াছমিন আফরিন (১৩)। শোকে স্তব্ধ আফরিনকে সান্ত্বনা দেবে কে?
বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় লামা পৌরসভার চাম্পাতলী গ্রামে ঘাতকরা নিজ ঘরে মর্মান্তিকভাবে খুন করে মা মাজেদা বেগম (৪০), বড় বোন রাফি আক্তার (১৫) এবং ১০ মাস বয়সী বোন নুরী আক্তারকে। বাড়িতে না থাকায় ঘাতকের হাত থেকে ভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় অষ্টম শ্রেণীতে পড়া আফরিন।
জানা যায়, বাবা নুর মোহাম্মদ পরিবার দীর্ঘদিন ধরে কুয়েতে প্রবাসী। মা মাজেদা বেগমই তাদের ৩ বোনকে আদর মমতায় আগলে রেখেছিলেন। পরিবারের সুখ-স্বাচ্ছন্দে জীবন ভালোই কাটছিল। ঘাতকের নির্মমতায় শিশু বয়সেই মা ও বোনদের হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ল আফরিন।
নুর মোহাম্মদের ছোট ভাই মো. খালেক জানান, স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে নতুন নির্মিত বিল্ডিংয়ে বসবাস করছিল নুর মোহাম্মদের পরিবার। আফরিন দাদির সাথে আলীকদম উপজেলায় বেড়াতে যায়। শুক্রবার সকাল থেকে ভাবী মাজেদা বেগম ও অন্যদের সাড়া না পেয়ে এবং ঘরের বাইরে থেকে তালা দেওয়া দেখতে পেয়ে ভেবেছিলেন তারা বেড়াতে গেছে। সন্ধ্যায় জানালার ফাঁক দিয়ে ভেতরে দেখার চেষ্টা করলে ভাবীর মৃতদেহ চোখে পড়ে। সাথে সাথে তিনি পুলিশসহ স্থানীয়দের খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তালা ভেঙে তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে।
গতকাল সকালে চাম্পাতলী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আফরিন চাচাদের ঘরে দাদি ছকিনা খাতুনের সাথে রয়েছে। ছকিনা খাতুন নাতনিকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, আফরিন বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছে। মা ও বোন হারানো মেয়েটিকে কী বলে সান্ত্বনা দেবেন তিনি জানেন না।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আফরিন জানায়, তার মায়ের সাথে কারো বিরোধ ছিল না। কারা, কেন এভাবে তার মা ও বোনদের নির্মমভাবে হত্যা করল সে বিষয়ে কোনো ধারণাই করতে পারছে না সে। সে জানতে চায়, তার মা ও বোনদের হত্যাকারী ধরা পড়বে? ঘাতকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে?