আফগানিস্তানে ৩১ আগস্ট ২০২৫ তারিখে ৬.০ মাত্রার ভূমিকম্পে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত ও ৩,০০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। মাত্র ৬ মাত্রার ভূমিকম্পও ছিল অসহনীয় শক্তিশালী এবং প্রান্তিক মানুষদের বাঁচানো ছিল চ্যালেঞ্জিং। প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই পরিস্থিতিতে দ্রুত উদ্ধার কার্যক্রম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হলেও দেখা গেছে, নারীদের জন্য সহায়তা অন্যান্যদের তুলনায় দেরিতে পৌঁছেছে। এটি কেবল মানবিক সংকটই তৈরি করে না, বরং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ন্যায্যতার বিষয়েও বড় প্রশ্ন তোলে। তবে আফগানিস্তানি নারীরা কেন দেরিতে সহায়তা পাচ্ছেন? এর পেছনের কারণ কি?
প্রথমত, সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা বড় ভূমিকা রাখে। কুনার প্রদেশসহ রক্ষণশীল অঞ্চলে নারীকে সরাসরি পুরুষ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা দেওয়ায় ধর্মীয় ও সামাজিক বাধা থাকে। অনেক সময় পরিবার ও সমাজের সংস্কার নারীদের জরুরি চিকিৎসা গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে, জরুরি পরিস্থিতিতেও নারীরা যথাযথ সেবা পায় না।
দ্বিতীয়ত, নারী স্বাস্থ্যকর্মীর ঘাটতি। উদ্ধার ও চিকিৎসা কার্যক্রমে পর্যাপ্ত নারী স্বাস্থ্যকর্মী না থাকায় নারী রোগীরা চিকিৎসা বা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হন। নারীর স্বনির্ভরতা ও সম্মানজনক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নারী কর্মীর উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি।
তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক সহায়তার সীমাবদ্ধতা। অনেক সাহায্য সংস্থা প্রাথমিকভাবে পুরুষদের প্রতি মনোযোগ দেয়, অথবা পর্যাপ্ত নারী কর্মী ও উপকরণ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। এতে নারীদের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য, ঔষধ ও চিকিৎসা পৌঁছাতে বিলম্ব হয়।
উদ্বেগজনক এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় কয়েকটি পদক্ষেপ জরুরি:
নারী স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ: প্রত্যন্ত এলাকায় নারী স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে নারীরা সম্মানজনক ও নিরাপদ চিকিৎসা পান।
সাংস্কৃতিক সচেতনতা বৃদ্ধি: স্থানীয় সমপ্রদায়ের মধ্যে নারীর চিকিৎসা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা এবং মানবিক অধিকার নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
আন্তর্জাতিক সহায়তা সমপ্রসারণ: সাহায্য সংস্থাগুলো নারী সেবা ও সরবরাহে সমন্বয় বাড়িয়ে কার্যক্রম সমপ্রসারণ করা।
এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করলে শুধু নারীর জীবন রক্ষা নয়, বরং সমগ্র সমাজে নারীর স্বাস্থ্য ও মর্যাদা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।












