আফগানদের বিপক্ষে প্রথম টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়

ক্রীড়া প্রতিবেদক | সোমবার , ১৭ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৫১ পূর্বাহ্ণ

আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার টিটোয়েন্টি সিরিজ জিতল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে রেকর্ড জয়ের পর ওয়ানডে সিরিজে ২১ এ হেরে গিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে টিটোয়েন্টিতে দাপট দেখালো টাইগাররা। শেষটা রাঙালো তাই ৬ উইকেটের জয় দিয়ে। সিলেট স্টেডিয়ামে গতকাল শেষ ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৪ রানের। ক্রিজে ছিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান আর শামীম হোসেন। বাফাদার মোমান্দকে প্রথম বলেই চার মেরে দেন শামীম। আর তাতে করে ২০ ব্যবধানে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করে টিটোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। ৪ উইকেট হারিয়ে ১৬.১ ওভারে ১১৯ রান করে স্বাগতিকরা।

এর আগে বৃষ্টি আইনে নির্ধারিত ১৭ ওভারে ১১৯ রান করার লক্ষ্য দেয়া হয় বাংলাদেশকে। বিনা উইকেটে ৬৭ রান করা বাংলাদেশ হঠাৎ ছন্দ হারায়। ৭৬ রানে নেই ৩ উইকেট। সাকিব আল হাসান ও তাওহিদ হৃদয় হাল ধরেন। তাদের জুটিতে ১৫তম ওভারে একশ হয় বাংলাদেশের স্কোর। হৃদয় ও সাকিব ইনিংস শেষ করে আসার পথে ছিলেন। কিন্তু নিজের প্রথম ছক্কা হাঁকানোর পরের বলে হৃদয় বিদায় নিলে কিছুটা ঝুঁকিতে পড়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনা। যদিও সাকিব আর শামীম হোসেন সব শঙ্কা দূর করে খুব সহজভাবেই জয় এনে দেন। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে চার মারেন শামীম, তাতে জয় নিশ্চিত হয়। বাকি থেকে যায় ৫ বল। সাকিব ১৮ রানে অপরাজিত ছিলেন। এর আগে জবাব দিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ রনি তালুকদারের পরিবর্তে আফিফকে স্থান করে দেয় একাদশে। লিটন দাশের সাথে ইনিংস শুরু করতে নামেন আফিফ। দুজন মিলে শুরুটাও দারুণ করেছেন। পাওয়ার প্লের প্রথম ৫ ওভারে ৫০ রান তুলে নেন এদুজন। পানি পানের বিরতির আগে ৯ ওভারে তুলে নেন ৬৭ রান। কিন্তু পানি পানের বিরতির পর প্রথম ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। মুজিব উর রহমান ইনিংসের দশম এবং নিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই ফেরান লিটনকে। ৩৫ বলে ৩৫ রান করেন লিটন। তৃতীয় বলে ফিরেন আরেক ওপেনার আফিফ হোসেন। ২০ বলে ২ ছক্কায় ২৪ রান করেন তিনি। এরপর উইকেটে আসেন শান্ত এবং আগের ম্যাচের জয়ের নায়ক তাওহিদ হৃদয়। ১১তম ওভারে নাজমুল হোসেন শান্ত মাত্র ৬ বলে ৪ রান করে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের ইয়র্কারে বোল্ড হয়ে যান।

শান্ত ফেরার পরের ওভার থেকে মাত্র তিনটি রান নেন সাকিবতাওহিদ। এরপর মুজিব উর রহমানের কাছ থেকে ১২ রান আদায় করেন। রশিদ খানও দেন ৮ রান। ১৫তম ওভারে আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে ছক্কা মেরে হৃদয় বাংলাদেশকে শক্ত অবস্থানে নেন। তবে শেষ করে আসতে পারেননি। লক্ষ্য থেকে ১২ রান দূরে থাকতে আউট হন তিনি। পরের বলেই মিড অফে মোহাম্মদ নবীর সহজ ক্যাচে ইতি ঘটে ১৭ বলে ১৯ রানের ইনিংসের।

এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা আফগানিস্তানকে প্রথম ওভারেই ধাক্কা দেন তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারেই ছক্কা মেরে ঝড়ের ইঙ্গিত দেওয়া রহমানুল্লাহ গুরবাজকে ফেরান তাসকিন ওভারের পঞ্চম বলেই। আকাশে বল তুলে দেন গুরবাজ। আর সেটা তালু বন্দি করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি তাসকিনকে। নিজের দ্বিতীয় ওভারে আবার তাসকিনের আঘাত। এবার তার শিকার আরেক আফগান ওপেনার হযরতুল্লাহ জাজাই। উইকেটের পেছনে দারুন এক ক্যাচ নেন লিটন দাশ। ১৬ রানে দুই ওপেনার নেই আফগানদের। ৭.২ ওভারে আফগানিস্তানের স্কোর যখন ২ উইকেটে ৩৯ তখন শুরু হয় বৃষ্টি। সে বৃষ্টি অব্যাহত থাকে । প্রায় ৯৯ মিনিট পর আবার শুরু হয় খেলা। ততক্ষনে ২০ ওভারের ম্যাচটি নেমে আসে ১৭ ওভারে। বৃষ্টির পরের ওভারে এবার মোস্তাফিজের ধাক্কা। যদিও সে ওভারে এই পেসার দিয়েছেন ১৫ রান। তবে ফিরিয়েছেন মোহাম্মদ নবীকে। পরের ওভারে এবার সাকিবের জোড়া আঘাত। নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে সাকিবের বলে আফিফের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ইব্রাহিম জাদরান। ২২ রান আসে তার ব্যাট থেকে। ওভারের শেষ বলে বোল্ড হন নাজিবুল্লাহ জাদরান। রিভিও নিয়েও বাঁচতে পারেননি জাদরান। ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর দলকে টানার চেষ্টা করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই এবং করিম জানাত। এদুজন ৪২ রান যোগ করেন ২৯ বলে। নিজের তৃতীয় ওভারের পঞ্চম বলে মোস্তাফিজ নিজের দ্বিতীয় শিকার বানিয়ে ফেরান ২১ বলে ২৫ রান করা আজমতউল্লাহ ওমরজাইকে। ইনিংসের শেষ ওভার করতে আসা তাসকিন তৃতীয় বলেই ফেরান সেট ব্যাটার করিম জানাতকে । ১৫ বলে ২০ রান করেন এই অল রাউন্ডার। শেষ ওভারে রশিদ খানের এক ছক্কায় ১১৬ রানে থামে আফগানিস্তানের ইনিংস। তারা হারায় ৭ উইকেট। তাসকিন আহমেদ নিয়েছেন ৩ উইকেট। ২টি করে নিয়েছেন সাকিব এবং মোস্তাফিজ। প্লেয়ার অব দি ম্যাচ এবং প্লেয়ার অব দি সিরিজ হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভারতকে হারিয়ে ইতিহাস নারী ক্রিকেট দলের
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামেও সব চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বার আজ ও কাল বন্ধ