‘আপনা-মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’

রাশেদ রউফ | মঙ্গলবার , ২০ মে, ২০২৫ at ৮:৪৫ পূর্বাহ্ণ

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এমন এক ব্যক্তিত্ব, যাঁর চিন্তার ক্ষেত্র বহুমুখী। তিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে পাঠবিমুখ সমাজে আলো ও আশা জাগানোর নিরন্তর প্রয়াসের এক ‘ক্লান্তিহীন স্বপ্নঅভিযাত্রী যোদ্ধা’। এই বয়সেও তাঁর কোনো অবসর নেই। শারীরিক অসুস্থতাকে উপেক্ষা করে তিনি কাজ করছেন নতুন উদ্যমে, সাংগঠনিক নানা তৎপরতায়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মতো প্রতিষ্ঠান গড়ার চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি রীতিমত কিংবদন্তিতে পরিণত হয়েছেন। বাঙালির দুর্বল সাংগঠনিক প্রতিভা নিয়ে তাঁর গভীর দুঃখ ছিল। তাঁর অসাধারণ গ্রন্থ ‘সংগঠন ও বাঙালি’র নানা পর্যায়ে এর কারণ ও উত্তরণ নিয়ে লিখেছেন। ‘বাঙালির সংগঠন টেকে না’এমন বিস্তর অভিযোগের ভিড়ে সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তৈরি করেছেন তিনি।

অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ লক্ষ করেছেন, ‘বাঙালির সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণ তার আত্মপরতা, অসহায়তা, আত্মঘাত আর উনস্বাস্থ্য’। সংগঠন ও নিজের কর্মের ব্যাপারে নানা ধরনের সমালোচনা হতে পারে। এসব সমালোচনাকে গ্রাহ্য না করার পক্ষে তিনি। ‘সমালোচক বা ক্রিটিক’ সম্পর্কে তিনি অন্যরকম ধারণা পোষণ করেন। তাঁর মতে, অকর্মণ্য এই লোকেরা বলে ‘ভালো হত আরো ভালো হলে’। কেননা বেশিরভাগ সমালোচক ভূমিকা পালন করেন নিন্দুকের। সমালোচকরা সাধারণত কাজের ‘শক্তিশালী ও দুর্বল’ উভয় দিকের অন্বেষণ করেন। আর, নিন্দুকেরা শুধু দুর্বলতাকেই বিবেচনায় নেয়। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বাঙালির সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে বলতে গিয়ে বলছেন, ‘ভুলগুলোকে শনাক্ত করতে হবেকীভাবে সে ভুলগুলোকে কমিয়ে আনা যায় তার পথ বের করার জন্যে (শক্তিশালীকেও খুঁজতে হবে সেগুলোকে বাড়িয়ে তোলার জন্যে)’। আমরা যারা সংগঠন প্রিয় মানুষ, আমাদের অনেক ভাবনা ও প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় তাঁর এই অসাধারণ গ্রন্থ ‘সংগঠন ও বাঙালি’র ভেতর। বলা যায় গ্রন্থটি একই সঙ্গে ‘চিন্তা উদ্রেককারী, মনোহর ও প্রসাদগুণময়’।

যাঁরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন এবং শিক্ষকতা করেছেন ও করছেন, তাদের নিয়ে একটা সংগঠন গড়ার লক্ষ্যে গত ১২ মে চট্টগ্রাম একাডেমির ফয়েজ নুরনাহার মিলনায়তনে আমরা এক বৈঠকে মিলিত হয়েছি। বৈঠকটি পরিণত হয়েছে লেখকশিক্ষাবিদদের মিলনমেলায়।

বিজিএমই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. ওবায়দুল করিমের সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপককথাসাহিত্যিক প্রফেসর ড. হায়াত হোসেন, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য সমাজবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এএফএম ইমাম আলি, কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভারসিটির সাবেক উপাচার্য ভাষাবিজ্ঞানী প্রফেসর ড. মো. আবুল কাসেম, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মোহীত উল আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক কবি সাহিত্যিক প্রফেসর ড. নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. এম এ গফুর, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক বিশ্বজিৎ চৌধুরী, প্রথম আলোর বার্তা সম্পাদক কবি সাহিত্যিক ওমর কায়সার, মহিলা কলেজ চট্টগ্রামএর অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক সাহিত্যিক এলিজাবেথ আরিফা মুবাশশিরা, সরকারি চারুকলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর রীতা দত্ত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন কবি প্রফেসর হোসাইন কবির, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক প্রাবন্ধিক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিভাগের অধ্যাপক লেখক প্রফেসর ড. মো. আবুল কাসেম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং এন্ড ফিন্যাস বিভাগের অধ্যাপক, লেখক প্রফেসর ড. সালেহ জহুর চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক লেখক প্রফেসর ড. আদনান মান্নান, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার দেব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক প্রাবন্ধিক প্রফেসর ড. উদিতি দাশ সোমা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক প্রাবন্ধিক ড. মো. মোরশেদুল আলম, কবি সম্পাদক সংগঠক ইউসুফ মুহম্মদ, পটিয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক কথাসাহিত্যিক ড. শারমিন মুস্তারী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক লেখক ফারিহা জেসমিন ইসলাম, গাছবাড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. নারায়ন বৈদ্য, মহিলা কলেজ চট্টগ্রামএর সাবেক অধ্যক্ষ সাহিত্যিক তহুরীন সবুর ডালিয়া, বাঁশখালী উপকূলীয় ডিগ্রি কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা প্রাবন্ধিক মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান, সীতাকুণ্ড ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ গবেষক শিমুল বড়ুয়া, হুলাইন সালেহ নূর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রাবন্ধিক ছন্দা চক্রবর্তী, ইউএসটিসির রেজিস্ট্রার প্রাবন্ধিক দিলীপ কুমার বড়ুয়া, প্রাবন্ধিককলামিস্টসমাজবিশ্লেষক মুহাম্মদ মুসা খান, বিএড কলেজের অধ্যাপক প্রাবন্ধিক ড. শামসুদ্দীন শিশির, কথাসাহিত্যিক প্রাবন্ধিক ড. আজাদ বুলবুল, চিকিৎসাবিদ লেখক ড. প্রণব কুমার চৌধুরী, ভাষাবিজ্ঞানী ড. শ্যামল কান্তি দত্ত, গবেষক প্রাবন্ধিক ড. সেলিম জাহাঙ্গীর, প্রাবন্ধিক কলামিস্ট কাজী রুনু বিলকিস, বিএড কলেজ চট্টগ্রামের উপাধ্যক্ষ প্রফেসর দিলরুবা আক্তার চৌধুরী, কথাসাহিত্যিকব্যাংক নির্বাহী নাসের রহমান, প্রাবন্ধিক সংগীতজ্ঞ অধ্যাপক মৃণালিনী চক্রবর্তী, বাংলাদেশ নৌবাহিনী কলেজের সহকারী অধ্যাপক কথাসাহিত্যিক বিচিত্রা সেন, প্রাবন্ধিক গবেষক শাকিল আহমদ, প্রাবন্ধিক সংগঠক নিজামুল ইসলাম সরফী, বায়েজিদ মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. মাজহারুল হক, আইনজীবী প্রাবন্ধিক কলামিস্ট শঙ্কর প্রসাদ দে, প্রাবন্ধিক কলামিস্ট রেজাউল করিম স্বপন, কবি গল্পকার জিন্নাহ চৌধুরী, প্রাবন্ধিক রিটন কুমার বড়ুয়া, ব্যাংক নির্বাহী লেখক রূপক কুমার রক্ষিত, নিজামপুর সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রধান প্রাবন্ধিক কাঞ্চনা চক্রবর্তী, লেখক কবি অধ্যাপক নাসিম আখতার রীনা, হাজেরা তজু কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক লেখক সাইয়্যেদা জয়নাব শিউলী, কবি সাংবাদিক ইসমাইল জসীম, কবি সংগঠক জি এম জহির উদ্দীন, লেখক সংগঠক মুহাম্মদ মহসীন চৌধুরী, কবিচিত্রশিল্পী সৈয়দা করিমুননেসা, কবি শিশুসাহিত্যিক মারজিয়া খানম সিদ্দিকা, দৈনিক পূর্বকোণের সহকারী সম্পাদক প্রাবন্ধিক আবসার মাহফুজ, বোয়ালখালী হাজী নুরুল হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক প্রাবন্ধিক পিংকু দাশ, কবি সুলতানা নীলুফা, কবি রন্ধনশিল্পী রোকেয়া হক, প্রাবন্ধিক গবেষক সংগীতশিল্পী ইকবাল হায়দার, কবি অধ্যাপক নিশাত হাসিনা শিরিন, কবি অধ্যাপক শেখ মঈনুল হক চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন কায়সার নীলুফার কলেজের অধ্যক্ষ প্রাবন্ধিক এস এম ওমর ফারুক, কবিশিশুসাহিত্যিক আল জাবেরী, কবি নাট্যজন সনজীব বড়ুয়া, কবি নিবেদিতা বড়ুয়া, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা লেখক সাইফুদ্িদন আহমদ সাকী, টেকনাফ সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক কবি জাবীদ মাইনুদ্দীন, মোহছেন আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক প্রাবন্ধিক অনুবাদক কামরুল আনোয়ার চৌধুরী, কবি গল্পকার শিক্ষক শিউলী নাথ, লেখক আবৃত্তিশিল্পী দিলরুবা খানম, কবি কৌশিক রেইন, শৈলীর পরিচালক আবৃত্তিশিল্পী আয়েশা হক শিমু, লেখক প্রকাশক মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম নিপু, ব্যাংকার লেখক মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, মাদরাসাতৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া’র অধ্যক্ষ লেখক বদিউল আলম রিজভি, কবি শিশুসাহিত্যিক অপু চৌধুরী, কবি গল্পকার মাহবুবা চৌধুরী, লেখক আদনান তাহসিন আলমদার, কবি শিক্ষক নিলুফা ইয়াসমিন জয়িতা প্রমুখ। বৈঠকে ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় লেখক পরিষদের’ খসড়া গঠনতন্ত্র উপস্থাপন করা হয়। সংযোজন বিয়োজন পূর্বক পরিচালনা পরিষদের সভায় তা অনুমোদনের সিদ্ধান্ত হয়।

পরিষদের উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে : . চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষক এবং বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, যাঁরা লেখক, তাঁদের মাঝে আন্তঃযোগাযোগ প্রতিস্থাপন করা; লেখকদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করা; . লেখালেখি বা সাহিত্যের অগ্রগতিতে ভূমিকা পালনকারী ব্যক্তিদের সৃষ্টিকর্মের মূল্যায়ন করা; . সাহিত্যের প্রবহমান ধারাকে আরো বেগবান ও সুসংহত করার লক্ষ্যে ভূমিকা গ্রহণ করা; বছরে অন্তত একবার কোনো এক সুবিধাজনক স্থানে লেখকদের মিলনমেলার আয়োজন করা; সঙ্গে বইমেলার আয়োজন করা; . সাহিত্যে যাঁদের বিশেষ অবদান রয়েছে, সেই সব প্রয়াত ব্যক্তিত্বদের জীবনী ও সৃষ্টিকর্ম নিয়ে আলোচনা, রচনা সংগ্রহ এবং প্রয়োজনে পুনঃপ্রকাশ করা; . বিভিন্ন বিষয়ে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম আয়োজন করা; সাময়িকীবুলেটিন প্রকাশ করা; . পরিষদের সেইসব সদস্য, যাঁরা আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বই প্রকাশ করতে পারছেন না, অথচ দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্যচর্চা করে মেধার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন, তাঁদের বই প্রকাশে সহায়তা করা; . গবেষণায় উৎসাহিত করা এবং প্রয়োজনে সহায়তা দান করা; . চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান তরুণ শিক্ষার্থীদের লেখালেখি চর্চায় উৎসাহিত করতে কর্মশালার আয়োজন করা; . প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য অর্জনে প্রয়োজনীয় বিবেচিত হতে পারে এমন অন্যান্য সব কার্যক্রম গ্রহণ করা ইত্যাদি। উদ্যোক্তা সদস্যদের মধ্যে যাঁরা জীবন সদস্য হবেন, তাঁদের মধ্য থেকে পরিচালনা পরিষদ গঠন করা হবে। এরপর গঠিত হবে উপদেষ্টা পরিষদ ও পরামর্শক পরিষদ। এতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষকশিক্ষাথীযাঁরা লেখালেখির সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা যোগ দিতে পারবেন। ‘আপনামাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’কবিগুরুর এই বাণীকে বুকে ধারণ করে সবাইকে সংযুক্ত করতে চাই আমরা। ‘বাঙালির সংগঠন টেকে না’এমন অপবাদ ঘুছিয়ে আমরা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের মতো অগ্রসর হতে চাই। এরজন্য দরকার সকলের ইতিবাচক পরামর্শ।

লেখক : সহযোগী সম্পাদক, দৈনিক আজাদী;

ফেলো (নম্বর৪২২), বাংলা একাডেমি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের উন্নয়ন সমস্যা ও সম্ভাবনা
পরবর্তী নিবন্ধকাল শিক্ষানুরাগী ওয়াহেদ মাস্টারের ১২ তম মৃত্যুবার্ষিকী