শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ক্যাম্পাসের গোলচত্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও রোড পেইন্টিংয়ের মাধ্যমে তারা উপাচার্যের পদত্যাগের আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। খবর বিডিনিউজের।
এদিকে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাইমিনুল বাশার রাজ, সাফিন, আব্দুল্লাহ আর রাফিসহ ছয় জন উপস্থিত ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে হলটির প্রাধ্যক্ষসহ প্রভোস্ট কমিটির পদত্যাগ দাবি করেন তারা। এক পর্যায়ে তা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনের কর্মসূচি জানতে চাইলে মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, আমাদের আন্দোলনের ভাষা পরিবর্তন করা হয়েছে। আমরা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, রোড পেইন্টিং করে ভিসির পদত্যাগ আন্দোলন চালিয়ে যাব।
সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী সাফিন ১৬ জানুয়ারির পুলিশের হামলায় আহতদের চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ১৬ই জানুয়ারির পুলিশি হামলার ঘটনায় আহত এবং অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার সকল খরচ পরিশোধ করায় আমরা প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শিক্ষার্থীদের দাবি ও বিভিন্ন সমস্যা প্রসঙ্গে আলোচনার উদ্দেশ্যে শিক্ষামন্ত্রী ক্যাম্পাসে আসার
আগ্রহ প্রকাশের কথা জানিয়ে সাফিন বলেন, আমরা তার সঙ্গে আমাদের দাবি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনার জন্য উন্মুখ হয়ে আছি। এতে শিক্ষামন্ত্রীকে আমাদের ক্যাম্পাসে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমরা আশাকরি, তিনি দ্রুতই আমাদের ক্যাম্পাসে এসে আলোচনায় অংশ নিবেন। আশা করছি, ইতোমধ্যে আমাদের মূল দাবিসহ অন্যান্য ব্যাপারে যেসমস্ত আশ্বাস দেওয়া হয়েছে সেগুলোও অতিসত্বর পূরণ করা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে গত ১৩ জানুয়ারি রাতে আন্দোলনে নামেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। এর জেরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড হামলা হয়।
এরপর পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে; কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন; এক পর্যায়ে তারা আমরণ অনশনে যান।
সাতদিন পর সেই অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক জনপ্রিয় লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ইয়াসমিন হক।