আন্দোলনের সব পরীক্ষায় বিএনপি ফেল করেছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপি আন্দোলন নিয়ে পরীক্ষা–নিরীক্ষা করুক। এতদিন ধরে যে আন্দোলন করেছে সবগুলো পরীক্ষায় তারা ফেল করেছে। এখন তারা আবার পরীক্ষা–নিরীক্ষা করুক, আরো বেশি করে পড়াশোনা করুক, তারপর আমরা দেখব তারা কী করে। অবশ্যই নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করার ক্ষেত্রে সরকার কাউকে বাধা দেবে না। কিন্তু তারা ইতঃপূর্বে আন্দোলনের নামে যে সহিংসতা নৈরাজ্য করেছে, সেগুলো আর করতে দেয়া হবে না।
গতকাল নগরের সিআরবি শিরীষ তলায় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) আয়োজিত অমর একুশে বই মেলায় ‘মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদক’ প্রদান অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিককের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে বিএনপি এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন হাছান মাহমুদ। এ সময় তার পাশে ছিলেন সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার পরিবর্তন করতে হলে বিএনপিকে আগামী ২৯ সালের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। তখন জনগণ যাদেরকে ভোট দিবে তারাই সরকার গঠন করবে। আমাদের ভোট দিলে প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) আবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন। যদি জনগণ অন্য কিছু বেছে নেয়, যাদের বেছে নেবে তারাই সরকার গঠন করবে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকার সমপ্রতি ঘোষণা দিয়েছে তারা আবারো অভিযান চালাবে। এদিকে অনেক রোহিঙ্গা সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে, সরকার এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেবে?-এমন প্রশ্নে হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দেশে আমরা ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। প্রতিবছর ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করে। অর্থাৎ প্রতিবছর এই সংখ্যাটা বাড়ছে। আবার নতুন করে রোহিঙ্গাদের গ্রহণ করার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের পক্ষে আর কোনো রোহিঙ্গাকে গ্রহণ করা সম্ভব নয়। যাদেরকে ইতঃপূর্বে মানবিক কারণে আশ্রয় দেয়া হয়েছে, তাদেরকে কীভাবে ফেরত পাঠানো যায়, আমরা সেটা নিয়েই কাজ করছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সমস্ত রাষ্ট্রসমূহের সহায়তা কামনা করেছি, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে মিয়ানমারের সরকারের ওপর যাতে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়। সেজন্য ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চায়নাসহ বিভিন্ন দেশের সাথে আমরা আলাপ–আলোচনা করেছি।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন–প্রধানমন্ত্রী কয়েকদিন আগে মিউনিখ সিকিউরিটি কনফারেন্সে গিয়েছিলেন। সেখানেও আমরা বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আলোচনা করেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের যে প্রতিনিধি দল আসছে, এটি আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরো গভীরতর করার ক্ষেত্রে সহায়ক। সেখানে নিশ্চিতভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আমরা আলোচনা করব।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের রাখাইনে আবারো অভিযান চালানোর ঘোষণা প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, অভিযান পরিচালনা করাটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু সেটির কারণে আমাদের এখানে উত্তেজনা ইতঃপূর্বে তৈরি হয়েছে এবং সেখানকার মর্টারশেল আমাদের দেশে এসে পড়েছে, দুইজন নিহতও হয়েছে। সেটির প্রতিবাদ আমরা পরারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে আমরা জানিয়েছি। সুতরাং আমরা আশা করব ইতঃপূর্বে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল এবং ৩৩০ জনের মতো তাদের সেনা ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য আমাদের দেশে এসেছিল এবং তারা আবার তাদেরকে ফেরত নিয়ে গেছে এমন পরিস্থিতি আবার উদ্ভব হবে না।