আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ‘হত্যাচেষ্টার’ মামলা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল চেয়ে শাহবাগসহ সারাদেশে বিক্ষোভ ১ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি

| রবিবার , ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ

কারাগারে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর প্রতিবাদে শাহবাগে মশাল মিছিলকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আটক সাতজনের বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ আনা হয়েছে। গত শুক্রবার মধ্যরাতে শাহবাগ থানায় দায়ের করা এই মামলায় সাতজনকে রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে ওই থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মাহবুব আলম জানিয়েছেন। রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে তিন দিনের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গতকাল মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূইয়া নির্দেশ দিয়েছেন। খবর বিডি/বাংলানিউজের।
এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো। এসময় শুক্রবার মশাল মিছিল থেকে গ্রেপ্তার সাত জন ছাত্রনেতার মুক্তি দাবি করেন। গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে লেখক ও কলামিস্ট মোস্তাক আহমেদের হত্যার প্রতিবাদ ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে এ বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করা হয়। এসময় প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ১ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ ‘হত্যাচেষ্টার’ মামলা: শাহবাগে মশাল মিছিলকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আটক সাতজনের বিরুদ্ধে পুলিশ সদস্যদের ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় আটক সাতজনকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বলেছে আদালত। রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে তিন দিনের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করতে শনিবার ঢাকার মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূইয়া নির্দেশ দিয়েছেন। সাত জনের পক্ষে আইনজীবী মন্টু ঘোষসহ কয়েকজন রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। জামিন শুনানির জন্য ৩ মার্চ দিন রাখেন বিচারক। আসামিরা হলেন- তামজীদ হায়দার, নজিব আমিন চৌধুরী জয়, এ এস এম তানজিমুর রহমান, আকিব আহম্মেদ, আরাফাত সাদ, নাজিফা জান্নাত, জয়তী চক্রবর্তী।
শাহবাগ থানার ওসি মামুনুর রশীদ জানান, শাহবাগে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতানামা আরও ১০০-১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদি এসআই মিন্টু মিয়া।
শাহবাগে বিক্ষোভ: প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় থেকে মানববন্ধন ও সমাবেশ শেষে শাহবাগ মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে। মানুষের মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সংবিধানকে অবমাননা করেছে। তাই অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন লেখক ও কলামিস্ট মোস্তাক আহমেদকে হত্যা করেছে। আজকে সরকার যদি এই হত্যাকাণ্ডের বিচার না করে তাহলে জনগণের আদালতে আমরা এ বিচার দাবি করছি। একদিন অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণ এর বিচার করবে।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল কাদেরী জয় বলেন, লেখক ও কলামিস্ট মোস্তাক আহমেদের মৃত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। এ মৃত্যু একটি পরিকল্পিত মৃত্যু। ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। এ খুনের দায় এদেশের সরকার, বিচার ব্যবস্থাকে নিতে হবে। এর সঠিক তদন্ত করতে হবে। লেখক কলামিস্ট মোস্তাক আহমেদের হত্যার বিচার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল এবং বর্তমান সময়ে যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বন্দি আছে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, মশাল মিছিল থেকে জয়, নাফিসা, আরাফাতসহ সাত জন গ্রেফতার ছাত্রনেতাদের ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ সময় তিনি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ১ মার্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন। এসময় প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি
পরবর্তী নিবন্ধশেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণ অবশ্যই ইতিহাস : ফখরুল