আন্তঃনগরে সাড়ে ৪ ঘণ্টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম

আখাউড়া-লাকসাম ৭২ কিমি ডুয়েলগেজ ডাবল রেললাইন উদ্বোধন ২০ জুলাই ।। অন্যান্য ট্রেনের সময়ও কমবে

শুকলাল দাশ | রবিবার , ১৬ জুলাই, ২০২৩ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

ঢাকাচট্টগ্রাম রেলপথের লাকসামআখাউড়া ৭২ কিলোমিটার ডাবল রেললাইনের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই ডাবল লাইনের উদ্বোধন করা হবে। এই খবর ঢাকাচট্টগ্রাম রুটের ট্রেন যাত্রীদের জন্য আনন্দের এবং অনেক বড় প্রাপ্তিও বটে। স্বাধীনতার ৫২ বছরে এসে প্রথমবারের মতো ঢাকাচট্টগ্রাম ৩২১ কিলোমিটার রেলপথ ‘ডাবল লাইনে’ উন্নীত হলো।

এরমধ্যে দিয়ে ঢাকাচট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রামঢাকা রুটের প্রতিটি আন্তঃনগর এবং মেইল এক্সপ্রেসের যাত্রার সময় ঘণ্টা বাঁচবে। প্রতিটি টেন নির্দিষ্ট গতিসীমায় (দ্রুতগতিতে) ছুটতে পারবে। এখন তূর্ণা নিশীতা, সুবর্ণ এক্সপ্রেসে সাড়ে ৫ ঘণ্টা থেকে পৌনে ৬ ঘণ্টা সময় ব্যয় হয় ঢাকাচট্টগ্রাম রুটে। সোনার বাংলায় সময় লাগে সাড়ে ৫ ঘণ্টা। রেলওয়ে পরিবহন বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, এখন প্রতিটি আন্তঃনগর ট্রেনের দেড় ঘণ্টা সময় সাশ্রয় হবে। সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাচট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রামঢাকা পৌঁছতে পারবে।

ঢাকাচট্টগ্রাম রেলপথের ১১৮ কিলোমিটার আগে থেকেই ডাবল লাইন ছিল। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনটি প্রকল্পের মাধ্যমে আরও ১৩১ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বাকি ৭২ কিলোমিটার রেলপথ ডুয়েল গেজ লাইনে উন্নীত করার জন্য লাকসামআখাউড়া ডাবল লাইন প্রকল্প নেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে। যা গত ৮ বছর ধরে চলেছে। শুরুতে লাকসামআখাউড়া ডাবল লাইন প্রকল্পটির পরিচালক ছিলেন সাগর কৃষ্ণ চক্রবর্তী। তারপরে দায়িত্ব দেওয়া হয় মো. লিয়াকত আলীকে। তৃতীয় পর্যায়ে দায়িত্ব পান মোজাম্মেল হক। চতুর্থ পিডি ছিলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের সাবেক মহাপরিচালক ধীরেন্দ্র নাথ মজুমদার। পঞ্চম পরিচালক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মো. আরিফুজ্জামান, ষষ্ঠ পিডি ছিলেন রেলের তখনকার যুগ্ম মহাপরিচালক (প্রকৌশল) রমজান আলী। সপ্তম প্রকল্প পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় মো. শহিদুল ইসলামকে। তিনি অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) পদোন্নতি পাওয়ার পর সর্বশেষ এই প্রকল্পে পরিচালক হিসেবে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয় পূর্বাঞ্চলের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সুবক্তগীনকে। মূলত তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর এই প্রকল্পের ছোটখান নানান জটিলতা কাটিয়ে প্রকল্পের কাজ বর্তমান সরকারের মেয়াদের মধ্যে শেষ করার উদ্যোগ নেন। দ্রুতগতিতে রাতদিন কাজ করে প্রকল্পের কাজ শেষ করেন। যা আগামী ২০ জুলাই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

এই ব্যাপারে প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী মো. সবুক্তগীন আজাদীকে বলেন, আখাউড়ালাকসাম ৭২ কিলোমিটার ডুয়েলগেজ ডাবল রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই উদ্বোধন হবে। এই ৭২ কিলোমিটার ডাবল লাইনের মধ্যদিয়ে ঢাকাচট্টগ্রাম রেললাইন পুরোটাই ডাবল লাইন ডুয়েলগেজে উন্নীত হয়েছে। ঢাকাচট্টগ্রাম পুরোটাই ডাবল লাইন ডুয়েলগেজে উন্নীত হওয়ার মধ্যদিয়ে প্রতিটি ট্রেনযাত্রার সময় অনেকটা কমে আসবে। বিশেষ করে আন্তঃনগর ট্রেনগুলোকে আমরা সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকাচট্টগ্রাম পৌঁছানোর চেষ্টা করবো।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, আখাউড়ালাকসাম রেলপথ ডুয়েল গেজ লাইনের কাজ যৌথভাবে বাস্তবায়ন করেছে চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন, বাংলাদেশের তমা কনস্ট্রাকশন ও ম্যাঙ ইনফ্রাকস্ট্রাকচারসহ যৌথ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান (সিটিএম জয়েন্ট ভেঞ্চার)। এই প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ৫০৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। এরমধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকএডিবি ঋণ দিয়েছে ৪ হাজার ১১৮ কোটি ১৪ লাখ টাকা এবং ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যংকইআইবি ১ হাজার ৩৫৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। বাকি ১ হাজার ২৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস আজ
পরবর্তী নিবন্ধসমস্যার সমাধান সংলাপে : জাপা