দশ বছর পর আনোয়ারার জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের মানুষ আজ সোমবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোট দেবেন। ষষ্ঠ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে ইউনিয়নটিতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইবিএম) ভোটগ্রহণ হবে। একে তো এক দশক পরের নির্বাচন, সেই সাথে ইভিএম সবমিলিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী, ভোটার ও স্থানীয়দের কৌতুহলের শেষ নেই।
এ উপলক্ষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটের সরঞ্জামাদি দুই দিন আগে পাঠানো হয়। কড়া নিরাপত্তার মাধ্যমে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হবে বলে জানা গেলেও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শংকা স্বতন্ত্র প্রার্থীর। ইউনিয়নের সংরক্ষিত ৪, ৫, ৬ নং ওয়ার্ডের ইউ পি সদস্যা শারমিন হক শেফু (বই প্রতীক) জানান, নির্বাচনে এলাকায় ভোটাদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছি, প্রথম ইবিএম-এ প্রার্থী হিসেবে নিজ প্রতীকে ভোট দেওয়ার কৌতুহল-আনন্দ অন্য রকম মনে হচ্ছে, ইনশা আল্লাহ বিপুল ভোটে আমি নির্বাচিত হব।
স্থানীয় ভোটার প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল হক বলেন, এ প্রথম আনোয়ারার জুঁইদণ্ডীতে ইবিএম পদ্ধতিতে ভোট হবে। তাই এ নিয়ে ভোটারদেরও কৌতুহলের শেষ নেই।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাস্টার মো.ইদ্রীস বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর পর জুঁইদণ্ডীতে ভোট হচ্ছে, তাই সবার মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। এলাকার মানুষ আমাকে বিপুল ভোট জয়ী করবে ইনশা আল্লাহ।
স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, ‘নৌকার প্রার্থী মো. ইদ্রীস ও তার সমর্থকরা আমাকে ও আমার সমর্থকদের ভয়ভীতি, মারধর সহ এলাকায় আতংক ছড়িয়ে কেন্দ্র দখলের পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রশাসনের ভূমিকাও রহস্যজনক।’ তাই তিনি ইবিএম -এ ভোট হলেও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাস্টার মো. ইদ্রীস স্বতন্ত্র প্রার্থীর আনীত অভিযোগ ‘মিথ্যা’ ও ‘হাস্যকর’ বলে দাবি করেন।
আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৯টি কেন্দ্রে টানা ভোটগ্রহণ চলবে। নির্বাচন উপলক্ষে গত শনিবার নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও ভোটারদের প্রশিক্ষণ (মহড়া) দেওয়া হয়।
জুঁইদণ্ডী ইউনিয়নের রিটার্নিং কর্মকর্তার আবদুর শুক্কুর বলেন, মামলা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে ১০ বছর পর নির্বাচন হচ্ছে। এ ইউপিতে মোট ভোটর সংখ্যা ১২ হাজার ৮৬২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৬ হাজার ৮২৮ জন এবং নারী ভোটার ৬ হাজার ৩৪ জন।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম.দিদারুল ইসলাম সিকদার জানান, জুঁইদণ্ডীতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হবে; এতে কোনো সন্দেহ নেই। নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো কমতি থাকবে না, ভোটাররা যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারেন তার জন্য সব প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
জুঁইদণ্ডী নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৪, সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ১০ ও সাধারণ সদস্য পদে ৪৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রিচ (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরী (অটোরিকশা), আবুল হোসেন (আনারস) ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রিচের স্ত্রী রেহেনা আকতার (ঘোড়া)। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাস্টার মোহাম্মদ ইদ্রিচ ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রাশেদুল ইসলাম চৌধুরীই মূল লড়াইয়ে থাকবেন বলে জানান স্থানীয়রা।