আনোয়ারার চৌমুহনী ও কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আনোয়ারা প্রতিনিধি জানান, আনোয়ারার ব্যস্ততম চৌমুহনী বাজারে গতকাল রোববার দিবাগত মধ্যরাতে ভয়াবহ আগুন লাগে। রাত ১২টার দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছিল। ঘটনাস্থল থেকে প্রত্যক্ষদর্শী মো. সোহেল জানান, ভোজনবাড়ি নামে একটি রেস্টুরেন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এই ভবনে বেসরকারি একটি ব্যাংকের শাখাও রয়েছে। এছাড়া নীচে গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানসহ কয়েকটি দোকান রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের আনোয়ারা ও সিইউএফএলের দুটি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে। তবে ক্ষয়ক্ষতি কেমন হতে পারে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি দমকলকর্মীরা।
আনোয়ারা থানার ওসি মোহাম্মদ হাসান রাত একটার দিকে জানান, ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে যুক্ত হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশ ও স্থানীয়রা কাজ করে যাচ্ছে। চাতরী ইউপি চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন চৌধুরী সোহেল জানান, ভোজনবাড়ি রেস্টুরেন্টের ৩ তলা বিশিষ্ট মার্কেটের দোতলা ও ৩য় তলা প্রায় পুরোটাই পুড়ে গেছে। দোতলায় রেস্টুরেন্ট ও এবি ব্যাংকের শাখা ছিল। রাত ১টার দিকে দোতলা থেকে এক ব্যক্তিকে দেয়াল ভেঙে উদ্ধার করা হয়েছে। তখনও ভবনে আগুন জ্বলছিল।
এদিকে পটিয়া প্রতিনিধি জানান, কর্ণফুলী উপজেলার শিকলবাহা ইউনিয়নের মির্জা গোষ্ঠী এলাকায় বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের আগুনে পুড়ল ১৪টি বসতঘর। রবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আমেনা রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মির্জা গোষ্ঠীর বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে ১৪টি পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
স্থানীয় ডিস ব্যবসায়ী আকিব জাবেদ জানান, হঠাৎ একটি ঘরে আগুন দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে মুহূর্তেই আগুন পাশের তেরটি ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় খবর পেয়ে দমকল বাহিনীর কর্মীরা আধঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তরা হলেন, কামাল আহমেদ, জামাল আহমেদ, বুুলুু আহমেদ, হাকিম আলী, আবদুর রব, মদন আলী, রমজান আলী, মঙ্গল আলী, মো: আবছার, শাহ আলম, বুলু মাঝি, মো: শফি, মো: আবছার, হালিমা খাতুন। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে পরিদর্শনে আসেন কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মামুনুর রশিদ। লামা বাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার কামরুজ্জামান জানান, আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে বসতবাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তাৎক্ষণিকভাবে আগুন লাগার কারণ বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
শিকলবাহা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, কর্ণফুলী উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বানাজা বেগম নিশি, নবনির্বাচিত ভাইস-চেয়ারম্যান ডা. ফারহানা মমতাজ, শিকলবাহা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোহাম্মদ আজাদ প্রমুখ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।