আনোয়ারায় লবণ পানির কারণে ১৩শত হেক্টরের বেশি জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এতে উপজেলার ৫ ইউনিয়নের শত শত কৃষকের কপাল পুড়েছে। ফলে ফসল ঘরে তুলতে না পারায় চরম হতাশ কৃষকেরা। আনোয়ারা কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারায় লবণমুক্ত চাষাবাদের জন্য বরুমচড়া ভরা শঙ্খ খালের মুখে দেশের প্রথম হাইড্রলিক রাবার ড্যাম নির্মাণ করা হয়েছে। সাত শত কোটি টাকার বেশি ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে বেড়িবাঁধ, কৈখাইন এলাকায় আনোয়ারা ইছামতি ও কোদলা খালের মুখে নির্মিত হয় বাঁধ। যার ফলে গত দুইবছর আনোয়ারায় লবণ পানি মুক্ত চাষাবাদ হয়েছে।
কিন্তু এ বছর কর্ণফুলী নদীর লবণ পানি কাকতালীয় ভাবে শিকলবাহা খাল দিয়ে এ এলাকার খাল সমূহে প্রবেশ করে। লবণ পানি দিয়ে সেচ কাজ পরিচালনার ফলে বোরো চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়। যার ফলে উপজেলার বরুমচড়া, বারখাইন, আনোয়ারা, চাতরী, পরৈকোড়া ইউনিয়নের শত শত কৃষকের জমির ফলন নষ্ট হয়। ঘরে ফলন তুলতে না পারায় কৃষক পরিবারে চরম হতাশা বিরাজ করছে। সেই সাথে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবার আর্থিক ভাবেও ক্ষতির শিকার হয়।
শোলকাটা গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. মহি উদ্দীন বলেন, লবণ পানি নিয়ে সেচ কাজ পরিচালনা করায় এলাকার আমার মতো এলাকার শত শত কৃষকের কপাল পুড়েছে। লবণ পানির কারণে শত করা ৮০ জন কৃষকের জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়ে যাওয়ায় এলাকার শত শত কৃষক চাষাবাদ করেও জমির ধান কাটতে পারেনি।
আনোয়ারা উপজেলা উপ–সহকারী উদ্ভীদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সরোয়ার আলম জানায়, আনোয়ারায় লবণ পানির কারণে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বোরো চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে আনোয়ারায় ছোট বড় দেড় শতাধিক এলএলপি সেচ প্রকল্প বসানো হয়েছিল। লবণ পানির কারণে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।
আনোয়ারা উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব উপ–সহকারী প্রকৌশলী (বিএডিসি) আজমানুর রহমান বলেন, চট্টগ্রামের কর্ণফুলী শিকলবাহা খাল দিয়ে সুদূর অতীতে লবণ পানি আসার রেকর্ড না থাকলেও চলতি বোরো মৌসুমে হঠাৎ এ খাল দিয়ে লবণ পানি ঢুকে পড়ে। এতে স্থানীয় চাষিরা এলএলপি (সেচ প্রকল্প ) দিয়ে সেচ করায় আনোয়ারা আর চন্দনাইশ উপজেলায় চাষাবাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
তার মধ্যে আনোযারা উপজেলার চাতরী, পরৈকোড়া, আনোয়ারা, বারখাইন ও বরুমচড়া ইউনিয়নের ১৩ শত হেক্টরের অধিক জমির বোরো চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে কৃষকেদের মাঝে ব্যাপক হতাশা নেমে এসেছে। তিনি আরো বলেন, কয়েকদিন আগে শোলকাটা এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছ থেকে স্কীম ম্যানেজারেরা প্রতি কানি জমির সেচ বাবদ ২০০০ টাকা দাবি করে। এ বিষয় নিয়ে আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশতিয়াক ইমন কৃষক এবং সেচ প্রকল্প পরিচালকদের (ম্যানেজার) বক্তব্য শোনার পর মানবিক বিবেচনায় সেচের মূল্য প্রতি কানি ১১শ টাকা নির্ধারণ করে দেন।