আনোয়ারা উপজেলায় মান্নানের পরিবর্তে লড়বেন তৌহিদ

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর সমর্থন নিয়ে নাটকীয়তা

আনোয়ারা প্রতিনিধি | বুধবার , ২২ মে, ২০২৪ at ১০:০০ পূর্বাহ্ণ

আনোয়ারায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরীকে সমর্থন দিয়েছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ। গত ১লা মে বর্ধিত সভা ডেকে তিনি এই সমর্থন দেন। ঠিক ২০ দিনের মাথায় বদলে গেল সেই সমর্থন। মান্নানকে বসিয়ে দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮ টায় বিশেষ সভায় নতুন করে সমর্থন দেয়া হয়েছে আরেক প্রার্থী ২ বারের সাবেক চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরীকে। তিনি দোয়াত কলম প্রতীকে নির্বাচন করছেন।

এ সময় সাংসদের বাম পাশে অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী ও ডান পাশে তৌহিদুল হক চৌধুরী বসা ছিলেন। দুই প্রার্থীই গত দুই সপ্তাহ ধরে ১১ ইউনিয়নে তাদের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তৌহিদ দোয়াত কলম প্রতীকে, মান্নান মোটর সাইকেল প্রতীকে নির্বাচনে ছিলেন। তবে এর মধ্যে মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা পার হয়ে গেছে। আগামী ২৯ মে ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারিত আছে।

নতুন সমর্থন ঘোষণার আগে দুই প্রার্থী সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা করেন। এরপর বক্তব্য রাখেন সাইফুজ্জামান জাবেদ এমপি। তিনি বলেন, এই মুহূর্তে ঐক্যের বিকল্প নাই। মান্নান ও তৌহিদ দুইজনই আমার মানুষ। ইতিপূর্বে আমি মান্নান চৌধুরীকে সমর্থন দেওয়ার সময়ও বলেছিলাম দুইজনই নির্বাচন করুক। নির্বাচনের ৮/১০ দিন আগে যিনি এগিয়ে থাকেন তার পক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত যাবে। এখন সেই সময় এসেছে। দুইজন নির্বাচন করলে সেটা কারো জন্য সুফল আনবে না। তাই আমার সিদ্ধান্ত হলো একজনই নির্বাচন করবেন। আমি উপজেলা সভাপতি আবদুল মান্নান চৌধুরীকে অনুরোধ করেছি। তিনি একটি বারের জন্যও কোনো মন্তব্য করেন নি। দলের জন্য ও আমার জন্য যা ভালো সে অনুযায়ী প্রার্থী চূড়ান্ত করতে বলেছেন। তাই ঐক্যের স্বার্থে একক প্রার্থী হিসাবে তৌহিদুল হক চৌধুরীকে ঘোষণা করছি। সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তৌহিদকে বিজয়ী করে দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে হবে। এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা সাবেক ভূমিমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন জানান।

অধ্যাপক মান্নান চৌধুরীও ভূমিমন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন দিয়ে বলেন, দলের স্বার্থে আমি সব সময় ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত। তবে মনে রাখতে হবে ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এখানে যারা উপস্থিত আছেন এখান থেকেও কথা বেচাকেনা হয়। তাই সবাই সতর্কতার সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন এবং সহযোগিতা করবেন যাতে আমি বাবু পরিবারের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে পারি।

এই উপজেলায় অপর প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান এমপির সমর্থন পাচ্ছেন। সাবেক ভূমিমন্ত্রী একক প্রার্থী ঘোষণা করায় এই নির্বাচন কার্যত বর্তমান ও সাবেক দুই মন্ত্রীর প্রেস্টিজ ইস্যুতে পরিণত হলো।

আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী মোজাম্মেল হক বলেন, বিজয় সৃষ্টিকর্তার হাতে। ওরা এতোদিন ভোটকে ভয় পেত। জনগণের কাছে যেতে ভয় পেত। আমি যেখানে যাচ্ছি স্বতস্ফূর্তভাবে মানুষের ঢল নামছে। মানুষ দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে ২৯ মে স্বতসফূর্ত রায় দিয়ে প্রমাণ করবে এখানে কারো জোর জবরদস্তি চলবে না।

পূর্ববর্তী নিবন্ধখাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বাঁধ ভাঙা উচ্ছ্বাস
পরবর্তী নিবন্ধরাইসির শোক মিছিলে লাখো জনতার ঢল