দীর্ঘ ৬৫ দিনের মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর গত ২৪ জুলাই রাত ১২ টার পর থেকে সাগরে নেমেছিলেন জেলেরা। পূর্ণিমার তিথিতে (জো) আশানুরূপ ইলিশ না পেয়ে হতাশ আনোয়ারা উপকূলের ৪ হাজারের বেশি জেলে পরিবার। এরই মধ্যে দাদন ও বিভিন্ন কিস্তিতে টাকা নিয়ে যেসব জেলেরা সাগরে জাল বসিয়েছে তাদের কপালে দুঃচিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
দীর্ঘ ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর গত ২৪ জুলাই মধ্যে রাত থেকে সাগরে মাছ ধরা শুরু হলে আনোয়ারায় সমুদ্র উপকূলে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ৪/৫ হাজারের বেশি মৎস্যজীবীর বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার ব্যস্ততা শুরু হয় । কিন্তু পূর্ণিমার তিথির শেষ ৩ দিনে আশানুরূপ মাছ না পেয়ে হতাশার মাঝে আবারো ৫/৬ দিনের জন্য মাছ ধরায় বিরতি নামে।
আনোয়ারা উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারায় রেজিঃভূক্ত ৯২২টি মাছ ধরার ইঞ্জিন চালিত নৌকা ও ট্রলার রয়েছে। সেই সাথে উপজেলায় নিবন্ধনভূক্ত ৭ হাজার ৪৩১ জন মৎস্যজীবী রয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩/৪ হাজারের বেশি মৎস্যজীবী সাগরে ইলিশ মাছ ধরে থাকেন। উপকূলের ঘাট গুলোর মধ্যে পারকি, পড়ুয়াপড়া, গলাকাটা, উঠান মাঝি, ফকির হাট (ঘাটকূল), খুইল্যা মিয়া ঘাট ইলিশ ঘাট হিসেবে পরিচিত হলেও তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ইলিশ ঘাট হচ্ছে রায়পুর ইউনিয়নের গহিরা উঠান মাঝির ঘাট। গত ২/৩ বছর মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর এ মৌসুমে এসব ঘাটে ঘাটে পূর্ণিমার তিথিতে চলে ইলিশ উৎসব। কিন্তু এ বছর আশানুরূপ মাছ না পেয়ে ঘাটগুলোর চিত্র ভিন্ন। জেলেদের চোখে মুখে দেখা গেছে হতাশা।
উঠান মাঝি ঘাটের মৎস্যজীবী মো.লোকমান জানান , গত বছরের তুলনায় এ বছর মাছ অনেক কম, যেটুকু মাছ ধরা পড়েছে আকারেও অনেক ছোট। আমরা আশা করছিলাম ৬৫ দিন মাছ ধরা বন্ধ থাকার পর জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে। কিন্তু যেটুকু মাছ ধরা পড়ছে তাতে আমাদের খরচও উঠেনি, লাভ তো অনেক দূরের কথা। আমার মত অনেক জেলে দাদন ও বিভিন্ন কিস্তির টাকা নিয়ে সাগরে জাল বসিয়েছে। এখন আমাদের মাঝে দুঃচিন্তা আর হতাশা। আগামী (জো) তিথিতে কি পরিমাণ মাছ ধরা পড়বে এখন আমরা সে চিন্তায় আছি। তাই প্রত্যাশিত মাছ ধরা না পড়ায় মৎস্যজীবীদের চোখে মুখে হতাশার শেষ নেই ।
স্থানীয় আড়তদার ছালে আহমদ জানান, এই তিথিতে আশানুরূপ মাছ ধরা না পড়ায় আমরা সবাই হতাশ। ধরা পড়া মাছের সাইজও অনেক ছোট। তাই আগামী তিথির অপেক্ষায় আছি সবাই।
আনোয়ারা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো.রাশিদুল হক জানান, গত ২৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে সাগরে ইলিশ ধরা শুরু হয়। আমরা আশা করছিলাম এ তিথিতে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে। কিন্তু জেলেরা তাদের প্রত্যাশিত মাছ পায়নি, আমরা আশা করছি আগামী তিথিতে ভাল মাছ ধরা পড়বে।