আনোয়ারায় কিস্তির টাকা পরিশোধ ও পারিবারিক কলহের জেরে মেয়ের জামাইয়ের হাতে শাশুড়ি খুনের ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (৯ মার্চ) সকাল ৬টার সময় উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়নে ওষখাইন পূর্বপাড়া গ্রামে এঘটনা ঘটে। নিহত রশিদা খাতুন (৪৫) পূর্বপাড়া গ্রামের বাদশা মিয়ার স্ত্রী। মেয়ের জামাই ঘাতক হেলাল উদ্দিন মানিক (২৪) একই গ্রামের ফরিদুল ইসলামের ছেলে।
ঘটনার পর ঘাতক হেলাল উদ্দিন পালিয়ে যায়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।
নিহতের মেয়ে হাফসা আক্তার (২০) বলেন, দুই বছর আগে হেলাল উদ্দিনের সাথে আমার বিয়ে হয়। আমাদের সংসারে এক বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের অত্যাচারে আমি বাবার বাড়ি চলে আসি।
অভাব অনঠনের কারনে আমি আনেয়ারায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেই। এরই মধ্যে জুয়া ও মাদকাসক্ত স্বামীর তিন লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ করতে আমার বেতনের টাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করে।
রবিবার ভোর সাড়ে ৫ টায় আমার স্বামী আমার বাবার বাড়ি এসে আমার ভাই ও আমাকে হামলা করলে আমরা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে আমার মা রশিদা খাতুনকে সামনে পেয়ে একটি গাছ দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করলে ঘটনাস্থলে আমার মা মারা যায়।
স্থানীয়রা জানায়, বিয়ের পর থেকেই হেলাল উদ্দিন মানিক ও স্ত্রী হাফসা আকতার সাথে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। হেলাল জুয়া খেলে এবং ঋণগ্রস্থ। স্ত্রীর বেতনের টাকা দিয়েই ওই ঋণ পরিশোধ করে। ভোরে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়, পরে আমরা চিৎকার শুনে বের হলে বাড়ির পাশে জমিতে রশিদা খাতুনের লাশ দেখতে পায়।
স্ত্রীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করলে শাশুড়ির সাথে জামাই হেলাল উদ্দিন মানিকের কথাকাটাকাটি হতো। ঘটনার দিন সকালে স্বামী-স্ত্রী সাথে ঝগড়ার পর স্ত্রী কর্মস্থল চলে গেলে শাশুড়ির সাথে ঝগড়া বাধে মেয়ে জামাইয়ের। এসময় মেয়ের জামাই গাছের গুঁড়ি দিয়ে শাশুড়িকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই শাশুড়ির মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে ঘাতক মেয়ের জামাই পলাতক রয়েছে বলেও জানান স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনোয়ারা থানার ওসি (তদন্ত) মো. তৈয়ব জানান, খুনের ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনার পর ঘাতক হেলাল উদ্দিন পালতক রয়েছে। এ ঘটনায় আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।