আনোয়ারা উপজেলায় নিষিদ্ধ সময়ে সামুদ্রিক মাছ পরিবহন করায় বিভিন্ন প্রজাতির ৭ হাজার ১১০ কেজি মাছসহ আটজনকে আটক করেছে নৌ পুলিশ। এ সময় মাছ পরিবহনে ব্যবহৃত দুইটি ট্রাক ও একটি পিকআপ গাড়ি জব্দ করা হয়। জব্দকৃত মাছের মধ্যে সাড়ে ৫ হাজার কেজি ওজনের দুই ট্রাক মাছ উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের তদারকিতে উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করা হয়। অপর পিক–আপের মাছ নৌ পুলিশ বিতরণ করলেও মৎস্য কর্মকর্তা বলছেন, নৌ–পুলিশের জব্দকৃত মাছ বিতরণ করার সুযোগ নেই। এদিকে জব্দ করা মাছগুলো বিতরণে নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জব্দকৃত মাছের মালিকের দেওয়া তথ্য আর বিতরণের তথ্যের মধ্যে গরমিল রয়েছে।
আনোয়ারা সিনিয়র মৎস্য অফিসার রাশেদুল হক জানান, আমাদের বাদ দিয়ে নৌ–পুলিশের জব্দকৃত মাছ বিতরণ করার সুযোগ নেই। তারা কি কারণে মাছগুলো নিয়ে গেছে সেটা আমরা বলতে পারবো না। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলব।
গত শনিবার দিবাগত রাত ৩টায় পিএবি সড়কের তৈলারদ্বীপ সেতুুর টোল প্লাজা থেকে মাছগুলো জব্দ করে নৌ পুলিশ। এ সময় গাড়ি চালক ও হেলপার সহ ৮ জনকে আটক করা হয়। আটককৃতরা হলেন, কায়সার মিয়া (৫৫), রেজাউল আজিম (২৯), আবদুল করিম (৩৪), জাবের হোসেন (৩৯), রেজাউল করিম (৪২), বেলাল হোসেন (২৫), মো.আজিম (২৮) ও আবদুল শুক্কুর (২৮)।
এ বিষয়ে নৌ পুলিশের মো. ফারুক হোসেন জানান, তিন গাড়ি মাছ তারা জব্দ করেছেন। তার মধ্যে দুই গাড়ি মাছ উপজেলায় মৎস্য অফিসের মাধ্যমে বিতরণ করা হয়েছে। আর নৌ পুলিশ উপকূলীয় বিভিন্ন এতিমখানায় বিতরণ করেছে।
মাছের মালিক বাঁশখালী উপজেলার বাসিন্দা মো. সেকান্দরের (৪০) অভিযোগ করে বলেন, আমি বাঁশখালীর জাহাঙ্গীর ও চকরিয়া উপজেলার এমরান এই তিনজন ৯ টনের মত মাছ গহিরা থেকে কিনে নিয়ে যাবার সময় তৈলারদ্বীপ সেতুর টোল প্লাজায় নৌ পুলিশ এসে আমাদের গাড়িগুলো জব্দ করে নিয়ে যায়। আমরা সাগর থেকে মাছ ধরিনি; গহিরা থেকে কিনেছি। সাগর থেকে মাছ ধরে উপকূলে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হলো; অথচ পুলিশ সেখানে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিচ্ছে না। আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইশতিয়াক ইমন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
এ বিষয়ে বার আউলিয়া ঘাট নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই টিটু দত্ত বলেন, এক ট্রাক মাছ দোভাষী হাটের ৭টি এতিমখানায় বিতরণ করি এবং বাকি দুই ট্রাক উপজেলায় মৎস্য অফিসে পাঠানো হয়। সেখানের কর্মকর্তারা ৭৮টি এতিমখানায় মাছগুলো বিতরণ করেন। মাছ বিতরণে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি বলে জানান তিনি।