বিগত সরকারের আমলে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) পাস হওয়া চট্টগ্রামের কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলাধীন ‘চাতরী (চৌমুহনী) সিইউএফএল–কর্ণফুলী ড্রাইডক (মেরিন একাডেমি) ফকিরনীরহাট (এন ১২৯) জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ স্থান–মান প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটি বাতিলের আবেদন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। গতকাল বুধবার কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির লিগ্যাল এইড কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম ফোরকান ও সদস্য সচিব এডভোকেট মো. গোলাম মোর্শেদ চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে এ স্মারকলিপি প্রদান করেন।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, কর্ণফুলী নদীতে সদ্য নির্মিত কর্ণফুলী টানেলের পূর্ব তীরে জনমত যাচাই ব্যতীত কর্ণফুলী ও আনোয়ারা উপজেলাধীন ‘চাতরী (চৌমুহনী) সিইউএফএল–কর্ণফুলী ড্রাইডক (মেরিন একাডেমি) ফকিরনীরহাট (এন ১২৯) জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ স্থান–মান প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ সড়ক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের আওতাভুক্ত কর্ণফুলী থানাধীন মেরিন একাডেমি সড়ক কয়েকটি ইউনিয়নের ওপরে অতিক্রম করে শিকলবাহা চৌমুহনীতে চট্টগ্রাম পিএবি সড়কের সাথে সংযুক্ত হয়। উক্ত সড়কের ২ পাশে বৈরাগ, বদলপুরা, দক্ষিণ শাহমীরপুর, জুলধা, শাহমীরপুর, শিকলবাহা ইউনিয়নের এলাকায় অসংখ্য ডেইরি ফার্ম ও হাজার হাজার লোকের বসতবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাজার, কবরস্থান, স্কুল, বাজার ইত্যাদি রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এসব যাচাই–বাছাই না করে সাবেক সরকারের ভূমিমন্ত্রী ও একজন সচিবের অনৈতিক মনোবাসনা পূরণকল্পে ২০২৩ সালে তড়িঘড়ি করে উক্ত সড়ক প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। প্রকৃত পক্ষে উন্নয়নের নামে সরকারি অর্থের লুণ্টন কার্য বাস্তবায়ন করতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয় বলে অভিযোগ করা হয় স্মারকলিপিতে। এতে উল্লেখ করা হয়, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে প্রায় ২০ হাজার লোক বসতবাড়ি হতে উচ্ছেদ হবে ও এলাকার অসংখ্য ডেইরি ফার্ম, বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, মাজার, কবরস্থান ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হলে রাষ্ট্রের ৫৮৭ কোটি টাকা অপচয় হবে। প্রকৃতপক্ষে বর্তমান বিদ্যমান সড়কসমূহ কর্ণফুলী টানেলের গাড়ি চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত। নতুন করে রাস্তা প্রশস্থকরণের কোনো প্রয়োজন নেই। জনশ্রুতি রয়েছে, একটি ড্রাইডক কোম্পানিকে ট্রান্সপোর্ট সুবিধা দিতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও এক সচিব অনৈতিকভাবে প্রকল্পটি গ্রহণ করেন।
কর্ণফুলী উপজেলা বিএনপির লিগ্যাল এইড কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম ফোরকান বলেন, ‘চাতরী (চৌমুহনী) সিইউএফএল–কর্ণফুলী ড্রাইডক (মেরিন একাডেমি) ফকিরনীরহাট (এন ১২৯) জাতীয় মহাসড়ক যথাযথ স্থান–মান প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটি বিগত সরকারের আমলে একনেকে অনুমোদন হয়। আমরা মনে করি এই প্রকল্পটি বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে অপরিকল্পিত ও জনস্বার্থ বিরোধী একটি প্রকল্প। এটি বাস্তবায়ন হলে এলাকার কয়েক হাজার পরিবারের বসত ঘর, স্কুল, মাদরাসা, কবরস্থান, মাজারসহ অসংখ্য স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
একনেকে অনুমোদিত ৫৮৭ কোটি টাকা প্রকল্পের ব্যয় নির্ধারণ করা হলেও প্রকল্পের ৫৮৭ কোটি টাকা খরচের বিষয়টি নিয়েও আমাদের সন্দেহ তৈরি হয়েছে। কেনানা বিগত সরকারের প্রতিটি মেগা প্রকল্পে দুর্নীতি করার জন্য অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আমরা জনস্বার্থে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে এ প্রকল্প বাতিলের আবেদন করেছি। সেই সাথে জনগণের সম্পদের ক্ষতি না করে নতুন করে ভূমি অধিগ্রহণের মাধ্যমে নতুন প্রকল্প গ্রহণের দাবি করছি।