আনলাকি থার্টিনের কবলে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে!

১৩ ওভারহেড বৈদ্যুতিক লাইনের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গার্ডার বসানোর কাজ

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৫ পূর্বাহ্ণ

‘আনলাকি থার্টিনে’র কবলে পড়তে যাচ্ছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। রাস্তার উপর দিয়ে নেওয়া ১৩টি ওভারহেড লাইনের কারণে এক্সপ্রেসওয়ের গার্ডার বসানোর কাজ আগামী সপ্তাহে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার উপর থেকে বৈদ্যুতিক লাইনগুলো সরানো না হলে গার্ডার স্থাপনসহ কর্ণফুলী ইপিজেড এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চালু রাখা অসম্ভব হবে। ওভারহেড লাইনের জন্য তিনটি পিলারও করা সম্ভব হয়নি।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, নগরীর যান চলাচলে গতি আনতে লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে টানেল রোড পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। পাঁচ ধাপে ভাগ করে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে লালখান বাজার-বারিক বিল্ডিং পর্যন্ত প্রথম ধাপ, বারিক বিল্ডিং-সল্টগোলা ক্রসিং দ্বিতীয় ধাপ, সল্টগোলা ক্রসিং থেকে সিমেন্ট ক্রসিং তৃতীয় ধাপ, সিমেন্ট ক্রসিং থেকে কাঠগড় চতুর্থ ধাপ এবং কাঠগড় থেকে পতেঙ্গার ল্যান্ডিং পয়েন্ট পর্যন্ত পঞ্চম ধাপ চিহ্নিত করা হয়।
এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল শেষ ধাপ থেকে। বর্তমানে ল্যান্ডিং পয়েন্ট থেকে সিমেন্ট ক্রসিং পর্যন্ত দুটি ধাপের (৪র্থ ও ৫ম) কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এই দুই ধাপে গার্ডার স্থাপনের কাজ চলছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ফ্লাইওভারের এই অংশের কাজ ৮০ শতাংশেরও বেশি শেষ হয়েছে। কিন্তু এই অংশের কাজ শেষ করার ক্ষেত্রে ‘আনলাকি থার্টিনের’ মতো ১৩টি ওভারহেড বৈদ্যুতিক লাইন সংকট সৃষ্টি করেছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে তিন হাজার গার্ডার স্থাপন করা হবে। ৩৭৫টি স্প্যানের মাঝে এসব গার্ডার স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে বর্তমানে ৬শর মতো গার্ডার স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। বর্তমানে কেইপিজেড এলাকায় গার্ডার স্থাপনের কাজ চলছে। তবে ওভারহেড বৈদ্যুতিক লাইনগুলো সরানো না হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে ওই এলাকায় গার্ডার বসানোর কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।
সিডিএ সূত্র জানায়, ওভারহেড ১৩টি লাইনসহ ওই এলাকার বৈদ্যুতিক লাইন ও খুঁটি সরানোর জন্য ১৮ কোটি টাকা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড লাইনগুলো না সরানোয় গার্ডার বসানোর কাজ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমার গতকাল বলেন, আমরা ৬শ গার্ডার স্থাপন করেছি। প্রতি স্প্যানে ৮টি করে গার্ডার বসানো হচ্ছে। কেইপিজেড এলাকায় সর্বোচ্চ আর সাত দিন কাজ করতে পারব। এর মধ্যে ওভারহেড ১৩টি লাইন সরানো না হলে কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। কারণ, তারের জন্য গার্ডার স্থানান্তর করে পিলারের উপরে তোলা সম্ভব হবে না।
উল্লেখ্য, প্রতিটি গার্ডার নিচে তৈরি করে বিশেষ ব্যবস্থাপায় পিলারের উপর স্থাপন করা হয়।
এ বিষয়ে পিডিবির চিফ ইঞ্জিনিয়ার দেওয়ান সামিনা বানু বলেন, আমরা কাজ করছি। সিডিএ আমাদেরকে অনেক পরে জানিয়েছে। তারা আরো আগে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে আজ এমন পরিস্থিতি তৈরি হত না। তাছাড়া টাকাও দেরিতে দিয়েছে। টাকা পাওয়ার পর আমরা ঠিকাদার নিয়োগ করেছি। কাজ চলছে।
তিনি বলেন, কাজগুলো অনেক জটিল। পুরো এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে কাজ করতে হয়। এতে অন্যান্য কারখানার উৎপাদনের পাশাপাশি গরমের দিনে মানুষ কষ্ট পান। তবুও আমরা কাজ করছি। সব দিক সামাল দিয়ে ওভারহেড লাইন সরানোসহ আনুষাঙ্গিক কাজ শেষ করার প্রক্রিয়া চলছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনৌ ও বিমান বাহিনী যেন আধুনিক বিশ্বের সাথে তাল মেলাতে পারে : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬