চারদিকে অনেকের মধ্যে সবসময় হতাশা, দুঃখ, গ্লানিবোধ দেখি। অমুকের বা আমার ঐ আত্মীয় বন্ধুর কত সাফল্য, কত সম্পদ, কত বড় ব্যবসা, চাকরি আছে। আমার তো সেই তুলনায় কিছুই নেই। অথচ আমি কি কোনও অংশে ওর চেয়ে কম? অনেক ছোট খাট বিষয় বা অপ্রাপ্তিতে আমরা খুব মন খারাপ করি। কখনো বিমর্ষ হই। আবার উল্টোপিঠে এরকমও হয় আপনি কোনও ভালো চাকরি করেন, সুন্দর গান করেন বা লেখালেখি করেন এগুলোর জন্যও অনেকের কটাক্ষের শিকার হতে হয় অনেক সময়। আমি বলি, রাখুন তো এসব পাওয়া না পাওয়ার হিসেব অথবা কারো অবহেলা, কটাক্ষ। নিজের মত করে বাঁচুন। মাথা থেকে একেবারে ঝেড়ে ফেলে দিন ঐসব নাম পুরুষ বা মধ্যম পুরুষ সম্পর্কের ব্যক্তিবর্গকে যারা আপনার ব্যক্তিজীবনে, পারিবারিক জীবনে অশান্তি বা বিরক্তির উদ্রেক ঘটায়। ওরা নিজেও ভালো থাকতে জানে না আবার অপরের ভালো থাকাও সহ্য করতে পারে না। কথায় বলে– ‘হিংসুক জ্বলিয়া মরে হিংসার আগুনে’। ছোটখাট তুচ্ছ বিষয়গুলো একদমই এড়িয়ে চলুন। অবসরে কোনও হাসির নাটক বা সিনেমা দেখুন। দূরে কোথাও বেড়াতে যাওয়া সম্ভব না হলে কাছাকাছি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত কোনও স্থানে ঘুরে আসুন। সঙ্গী করতে পারেন আপনার সেই প্রিয় মানুষটিকে বা সেই মনের মত বন্ধুটিকে যাকে অন্তত ঈর্ষা বা পরশ্রীকাতরতায় বিরক্তিকর মানুষ মনে না হয়। কে কী বলছে আপনাকে নিয়ে তা একেবারেই না ভেবে ঐ সময়ে কোনও বই পড়ুন, ছাদবাগান করতে পারেন। আবার কৈশোর বা তারুণ্যের সেই পুরনো দিনগুলোর মত হারমোনিয়াম বা গিটার নিয়ে গলা ছেড়ে গানও করতে পারেন আপন মনে। ভাবুক না যে যা ভাবার, বলুক না যে যা বলার। আনন্দে থাকুন, আনন্দে বাঁচুন। এক জীবনে মানুষের সব কিছু পাবার বা থাকার দরকার পড়ে না। খুব সাধারণ মানুষ হয়েও অনেক কিছু না পেয়েও জীবন শুধু চলে না বরং দৌড়ায় যদি আপনি জীবনকে উপভোগ করতে পারেন। ইচ্ছে করলেই আপনি আনন্দে থাকতে পারেন আনন্দে বাঁচতে পারেন। সৃষ্টিকর্তার ওপর বিশ্বাস রাখুন। অযথা দুশ্চিন্তা আর অন্যের সাথে নিজের অবস্থা তুলনা করে নেগেটিভ ভাবনাগুলো ভাবতে ভাবতে আপনি নিজের অজান্তেই জীবন থেকে সুস্থতা ও আনন্দ হারিয়ে ফেলবেন। আপনি দীর্ঘদিন সুস্থ থাকবেন, দীর্ঘায়ু হবেন যদি হাসিখুশি আর মানসিক চাপ বা স্ট্রেস মুক্ত থাকেন। এটা বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত। আপনাকে কে মূল্যায়ন করল, কে অবহেলা করলো সব চিন্তা একেবারেই ছেড়ে ফেলুন মাথা থেকে। নিজেকে ভালোবাসুন, নিজের যত্ন নিন। এভাবেই আসুন, আনন্দে থাকি আর আনন্দে বাঁচি।