নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের প্রথম বোলার হিসেবে টানা দুই ওয়ানডেতে পাঁচ উইকেট শিকারের কীর্তি গড়লেন বেন সিয়ার্স। শেষ ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে ৪৩ রানে হারিয়ে কিউইরা সিরিজ জিতে নিয়েছে ৩–০ ব্যবধানে। নিয়মিত অধিনায়কসহ নিউজিল্যান্ডের বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ব্যস্ত আইপিএলে। চোট ও অন্যান্য কারণে নেই আরও একগাদা ক্রিকেটার। এই সিরিজের দলটিকে তৃতীয় সারির দল বলতে পারেন অনেক। টেনেটুনে বড়জোর দ্বিতীয় সারির দল বলা যায়। সেই দলই টি–টোয়েন্টি সিরিজে ৪–১ ব্যবধানে জয়ের পর ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ করে ছাড়ল পাকিস্তানকে। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে শনিবার বৃষ্টির কারণে ৪২ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে নিউজিল্যান্ড তোলে ৮ উইকেটে ২৬৪ রান। পাকিস্তান ৪০ ওভারে গুটিয়ে যায় ২২১ রানে। ভাঙাচোরা দলকে সিরিজজুড়ে দুর্দান্ত নেতৃত্ব দিয়েছেন যিনি, সেই মাইকেল ব্রেসওয়েল শেষ ম্যাচেও ছিলেন অগ্রণী। ঝড়ো ফিফটির পর বল হাতে একটি উইকেট ও অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে তিনি ম্যাচের সেরা। প্রথম ম্যাচে না খেলেও সিরিজের সেরা বেন সিয়ার্স। পরের দুই ম্যাচেই যে তার শিকার পাঁচটি করে উইকেট। এই সিরিজের আগে স্রেফ একটি ওয়ানডে খেলেছিলেন তিনি। ২৭ বছর বয়সী এই পেসারই দেশের ইতিহাসে গড়লেন নতুন কীর্তি। নিউজিল্যান্ডের জয়ের ভিত গড়ে দেন আরেক নবীন রিস মাইরু। দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে নামা ওপেনার করেন দারুণ এক ফিফটি। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ড তৃতীয় ওভারে হারায় ওপেনার নিক কেলিকে (৩)। দ্বিতীয় উইকেটে ৭৮ রানের জুটি গড়েন মাইরু ও হেনরি নিকোলস। প্রথম আন্তর্জাতিক ফিফটি করে মাইরু বিদায় নেন ৬১ বলে ৫৮ রান করে। চতুর্থ উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন ড্যারিল মিচেল ও টিম সাইফার্ট। ছয় বছর পর ওয়ানডে খেলতে নেমে সাইফার্ট ফেরেন ২৬ রানে। মিচেলের পথ শেষ হয় ৪৩ রানে। নিউজিল্যান্ডের ব্রেসওয়েল লোয়ার অর্ডারদের সঙ্গী করে শেষ দিকে পাকিস্তানকে ভুগিয়ে ঝড়ের গতিতে রান তোলেন। ছয়টি ছক্কায় ৪০ বলে ৫৯ রান করে তিনি আউট হন ইনিংসের শেষ বলে। বিপিএল খেলে যাওয়া বাঁহাতি পেসার আকিফ জাভেদ ৬২ রানে ৪ উইকেট নেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে খেলতে নেমে।
রান তাড়ার শুরুতেই ধাক্কা খায় পাকিস্তান। রান নেওয়ার সময় চোয়ালে আঘাত পেয়ে তৃতীয় ওভারেই মাঠ ছাড়েন ইমাম–উল–হাক। দ্বিতীয় উইকেটে আব্দুল্লাহ শাফিক ও বাবর আজম গড়েন অর্ধশত রানের জুটি। তবে রানের গতি খুব ভালো ছিল না। ৬৮ রানের জুটি আসে ৮৩ বলে। এই জুটি ভেঙে শিকার শুরু করেন সিয়ার্স। ৩৩ রান করতে ৫৬ বল খেলেন শাফিক। ইমামের কনকাশন বদলি হিসেবে সুযোগ পাওয়া উসমান খান ১২ রান করে আউট হন ব্রেসওয়েলের দুর্দান্ত ক্যাচে। এরপর আর বলার মতো জুটি পায়নি পাকিস্তান। ফিফটি করেই উইকেট বিলিয়ে ফেরেন বাবর (৫৮ বলে ৫০)। অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ভালো খেলতে থাকলেও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে (৩২ বলে ৩৭)। পরে তাইয়াব তাহিরের ৩১ বলে ৩৩ রানে ব্যবধান কমে একটু। শেষ দিকে নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ ওয়াসিমকে টানা দুই বলে ফিরিয়ে চার উইকেট হয়ে যায় সিয়ার্সের। পরে শেষ বলে সুফিয়ান মুকিমকে আউট করে পূর্ণ করেন তিনি ৫ উইকেট। হোয়াইটওয়াশের উচ্ছ্বাসে মাঠ ছাড়ে তাদের দল।