আধুনিক হচ্ছে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

পাইলট প্রকল্পের আওতায় ষোলশহরের ৮০০ বাড়ি ।। পর্যায়ক্রমে ৪১ ওয়ার্ডে কার্যকরের পরিকল্পনা

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ at ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ

নগরে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এর অংশ হিসেবে একটি ‘পাইলট প্রকল্প’ গ্রহণ করেছে সংস্থাটি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে থাকবে না খোলা ডাস্টবিন ও উন্মুক্ত ড্রেন-নালা। একইসঙ্গে নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলার প্রবণতাও বন্ধ হবে। পাশাপাশি বাসা-বাড়ি থেকে সংগৃহীত বর্জ্যের একটি অংশ ডাম্পিং করার আগেই উৎপাদনশীল খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ডাম্পিংয়ের পর রিসাইক্লিং করে বাকি বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করা হবে।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে নগরের ৭নং পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ডের নবীনগরে। এজন্য ওই ওলাকার ৮০০ বাড়ির ৩০০ পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। চিহ্নিত প্রতিটি বাড়ির সামনে একটি করে ঢাকনাযুক্ত বিন দেয়া হবে। কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা নির্দিষ্ট সময়ে ওই বিন থেকে বাড়ির মালিকদের ফেলা গৃহস্থালী বর্জ্য সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন। তবে ডাস্টবিনে থাকবে পলিথিন। অর্থাৎ পলিথিনে মুড়িয়ে বর্জ্যগুলো নিয়ে যাওয়া হবে। এতে ডাস্টবিনটিও অপরিচ্ছন্ন হবে না। এছাড়া প্রতি দুই বাড়ি পর পর একটি করে অগ্নি নির্বাপক যন্ত্র স্থাপন করা হবে। আগামী ১ অক্টোবর প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
চসিক সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে নবীনগরের বিভিন্ন নালা-নর্দমার উপর স্ল্যাব বসানো হয়েছে। এতে কেউ চাইলেও নালায় ময়লা ফেলতে পারবে না। এছাড়া সেখানে দেয়াল চিত্র করা হবে। দেয়ালচিত্রের মাধ্যমে বর্জ্য কিভাবে ফেলতে হবে, সেইসব বার্তা দেয়া হবে। আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ‘সেভ দ্যা চিলড্রেন’ এর অর্থায়নে ইপসা নগরে ঝুঁকি হ্রাস প্রকল্প প্রয়াস-২ এর মাধ্যমে পাইলট প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোবারক আলী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আধুনিক ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যেই পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করেছি। সাফল্য পেলে পর্যায়ক্রমে ৪১ ওয়ার্ডে তা কার্যকর করা হবে।
তিনি বলেন, বিন থেকে বর্জ্য সংগ্রহের পর তা ডাম্পিং করার আগে যাচাই করা হবে। কারণ গৃহস্থলী বর্জ্যে অনেক সময় এমন কিছু উপকরণ থাকে যা বিভিন্ন ভাঙারি দোকানে বিক্রিযোগ্য। ওসব বিক্রি করে যে আয় হবে তা দিয়ে ডাস্টবিনে দেয়া পলিথিনের ব্যয় নির্বাহ করা হবে। তাছাড়া বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করতে রিসাইক্লিং করা হবে।
প্রকল্প সমন্বয়ক সানজিদা আক্তার দৈনিক আজাদীকে বলেন, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে গৃহীত প্রকল্পটি বাংলাদেশে প্রথম বাস্তবায়ন হবে চট্টগ্রাম শহরে। পাইলট প্রকল্পের জন্য যে বাছাইকৃত এলাকাটিতে নিম্ন আয়ের লোকজন বসবাস করে। এখানকার মানুষকে যুক্ত করে উন্নত বর্জ্য সংগ্রহ পদ্ধতি, পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং বর্জ্যকে সম্পদে পরিণত করার মাধ্যমে টেকসই বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করার পরিকল্পনা আছে আমাদের। এ মডেল পুরো শহরেই কার্যকর করা যেতে পারে।
এদিকে গতকাল বর্জ্য পাইলট প্রকল্পটি নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, বর্জ্যও সম্পদ। এই পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা তা প্রমাণ করতে চাই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবংশানুক্রমে চাকরি পাবে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬