আজাদী : আবার নির্বাচিত হলে এলাকাবাসীর জন্য কী কী করবেন?
হাসান মুরাদ বিপ্লব : আমি আবার নির্বাচিত হলে আমার এলাকায় যারা শিক্ষিত বেকার যুবক আছে তাদের জন্য কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খোলার পরিকল্পনা আছে। এ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ পেলে তাদের কর্মসংস্থান অনেক সহজ হবে। আর যারা শিক্ষিত নারী আছেন তাদের জন্য সেলাই ও বিউটিশিয়ান কোর্সে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করব, যাতে তারা স্বাবলম্বী হতে পারেন। সেইসাথে আমার এলাকার প্রতিটি মোড়ে যেখানে ওয়াসার সংযোগ আছে সেখানে ফিল্টার স্থাপন করে সুপেয় পানির ব্যবস্থা করব, যাতে এলাকাবাসীসহ পথচারীরা বিশুদ্ধ পানি পায়।
সৌন্দর্যবর্ধনের ব্যাপারে আমি বলব, এ এলাকাকে একটি আধুনিক ফিরিঙ্গিবাজারে রূপ দিতে চাই। ইতোমধ্যে কোতোয়ালী মোড় হতে মেরিনার্স রোড পর্যন্ত রাস্তার ডিভাইডার ও ফুটপাতগুলোতে টাইলস লাগিয়ে সুন্দর করেছি। সেগুলোর আরো আধুনিকায়নে কাজ করব, যাতে ফিরিঙ্গিবাজার একটি দৃষ্টিনন্দন এলাকা হয়ে ওঠে।
ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডটি কর্ণফুলী নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর তীরে যে জায়গা আছে সেখানে একটি বিনোদন কেন্দ্র করার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব। তারা যদি না করে তাহলে আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে মাননীয় মেয়রের সহযোগিতা নিয়ে এখানে একটি বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলার চিন্তা আছে। এখানে থাকবে ভাসমান রেস্তোরাঁ, বিভিন্ন রকম রাইডস, খেলার সুযোগ-সুবিধা। সেখানে মুক্তিযুদ্ধের একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের পরিকল্পনাও আছে। মোট কথা আমি সেখানে একটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে চাই।
তাছাড়া মেরিনার্স রোডে ওয়াকওয়ে তৈরি করতে চাই, যাতে বয়োবৃদ্ধরা প্রাতঃভ্রমণ ও সান্ধ্যভ্রমণ করতে পারেন। এসব কিছু করা গেলে নগরীর ৩৩ নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডটি একটি আধুনিক ওয়ার্ডে পরিণত হবে।
মাদকের বিরুদ্ধে আপনার পদক্ষেপ কী হবে?
বিপ্লব : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। আমি কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় আমার ওয়ার্ডের পাড়া-মহল্লায় কাউন্সেলিং করেছি। যারা মাদকাসক্ত তাদেরকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে পাঠিয়েছি এবং তাদের পরিবারের সাথে কথা বলেছি, যাতে তারা মাদকের পথ থেকে ফিরতে পারে। এলাকার মাদকবিক্রেতাদের একটা তালিকা প্রশাসনকে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি।
কিশোর অপরাধ দমনে কী করতে চান?
বিপ্লব : যারা স্কুলে যায় তারা সন্ধ্যার পর যাতে যেখানে-সেখানে আড্ডা না দেয় সেজন্য তাদের অভিভাবকদের নজর রাখতে হবে। তাদের জানতে হবে তাদের সন্তানরা কোথায় যায় কিংবা আড্ডা দেয়, তার বন্ধু কারা। আমরা সম্মানিত ব্যক্তিদের মধ্য থেকে প্রতিনিধি নিয়ে সমন্বিতভাবে কাউন্সেলিং করব। এতেও কাজ না হলে প্রশাসনের সহায়তা নেব।
এলাকার সমস্যা সমাধানে কী করেছেন?
বিপ্লব : এক বর্গকিলোমিটারের বেশি জায়গার ওয়ার্ড ফিরিঙ্গিবাজারে বসবাস করে এক লাখেরও বেশি মানুষ। ভোট আছে প্রায় ২১ হাজার। সমস্যা সব জায়গায় আছে। আগের বার কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর রাতে এলাকায় টহল দিতাম। ফলে যে তরুণরা ছিনতাই কিংবা অন্য কোনো ধরনের অপরাধে জড়িত ছিল তারা সেগুলো থেকে বিরত হয়। আমি এলাকাকে এ সমস্যা থেকে মুক্ত করতে পেরেছি।
ভাঙা রাস্তা সংস্কার করেছি। জনগণের সাথে দূরত্ব কমিয়ে জনবান্ধব হয়েছি। তাদের দোরগোড়ায় গেছি। সেবা পাওয়ার ব্যাপারটি সহজ করেছি। আগে জাতীয়তা সনদপত্র, জন্মনিবন্ধন, প্রত্যয়নপত্র, ওয়ারিশ সনদপত্র পেতে এলাকার জনগণকে ভোগান্তিতে পড়তে হতো। আমি সেটা ওয়ান স্টপ সার্ভিসের মতো সহজ করে দিয়েছি।
শিক্ষাক্ষেত্রে আপনার ভূমিকা কী ছিল?
বিপ্লব : এলাকার যেসব শিক্ষার্থী পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি, এইচএসসিতে ভালো ফলাফল করেছে তাদের বৃত্তি দিয়েছি, ভর্তিতে সহযোগিতা করেছি। তাদেরকে মা-বাবাসহ সংবর্ধনা দিয়েছি, যেন তারা সুশিক্ষিত হয়ে নেতৃত্ব দিতে পারে।
আবর্জনা অপসারণে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন?
বিপ্লব : আগে মূল সড়কে আবর্জনা ফেলার জন্য ডাস্টবিন ছিল এমন ২০টি জায়গা থেকে ডাস্টবিন তুলে সেখানে ফুলের বাগান করেছি। আমাদের সেবকরা ৩টা বাজলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ময়লা-আবর্জনা সংগ্রহ করেন। কিন্তু অনেকে ময়লা পলিথিনে বেঁধে নালায় ছুড়ে ফেলেন, যা পরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। এ ব্যাপারে জনগণকে সচেতন হতে হবে।
নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আপনি কতটুকু আশাবাদী?
বিপ্লব : নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। আমার বিশ্বাস, এলাকাবাসী আমার আগের কর্মকাণ্ড বিবেচনায় নিয়ে মিষ্টি কুমড়া প্রতীকে ভোট দিয়ে আমাকে আবারও কাউন্সিলর নির্বাচিত করবেন।