আধুনিকায়নে ২২৩ কোটি টাকার প্রকল্প

কক্সবাজারের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র প্রতিদিন ৪০টি অতিরিক্ত নৌকা অবতরণ করতে পারবে

আহমদ গিয়াস, কক্সবাজার | শনিবার , ৩০ মার্চ, ২০২৪ at ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ

কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে ২২৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেকের এক বৈঠকে দেশের আরো ১০টি প্রকল্পের সাথে এই প্রকল্পটিরও অনুমোদন দেওয়া হয়।

বিএফডিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পটি স্বাস্থ্যকর পানি সরবরাহ এবং কোল্ড স্টোরেজ সুবিধা উন্নত করবে। এর ফলে নৌকার মালিক, জেলে, পরিবেশক এবং শ্রমিকসহ প্রতিদিন ২ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষভাবে এবং চট্টগ্রাম ও ঢাকার মাছ বাজারের ২ লক্ষ মানুষ পরোক্ষভাবে উপকৃত হবে। এ প্রকল্পের আওতায় ৬ হাজার ১৪৯ বর্গমিটার বিশিষ্ট ৩ তলা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ভবন নির্মাণ, ১৯৫ বর্গমিটার ব্যবসায়ীদের অফিস ঘর নির্মাণ, ২ সেট পন্টুন এবং গ্যাংওয়ে (ব্রিজ, র‌্যাম্প, পিয়ার, অ্যাঙ্কর ব্লক ইত্যাদি) স্থাপন, ৩ হাজার ১৭৬ দশমিক ৬৯ বর্গমিটার রিভেটমেন্ট বা ঢালু পথ নির্মাণ, ৭১৪ দশমিক ৬০ বর্গমিটার মাছের বাজার এবং প্রার্থনা কক্ষ নির্মাণ এবং নির্মাণ সময়কালে মাছ অবতরণের জন্য ১ হাজার ৪৫৭ দশমিক ৩ বর্গমিটার অস্থায়ী একটি ইস্পাত কাঠামো শেড নির্মাণ করা হবে। এছাড়া মাছ তোলা ও বহনের জন্য ২ হাজার ১৪১ পিস সরঞ্জাম সরবরাহ করা হবে।

বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) চেয়ারম্যান সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দর জানান, এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রতিদিন ৪০টি অতিরিক্ত নৌকা অবতরণ করতে পারবে। এখানে মৎস্য অবতরণের পরিমাণ প্রতি বছর ৭ হাজার মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ১০ হাজার মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। তাছাড়া বরফ উৎপাদনও প্রতি বছর ৫ হাজার মেট্রিক টন থেকে বেড়ে ৬ হাজার ৩শ মেট্রিক টনে উন্নীত হবে। অবতরণ সময়কাল গড়ে ২ ঘন্টা কমে যাবে।

তিনি বলেন, কক্সবাজার জেলার প্রায় ৮৫% ভাগ মাছ কক্সবাজার শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারীঘাটে অবতরণ করা হয়। ২০১২ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর জেলার এই প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রটির অবস্থা বর্তমানে নাজুক। নাব্যতাও ঠিক নেই। প্রকল্পটির অধীনে একটি আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হবে কক্সবাজারকে। এতে মৎস্যজীবীদের জন্যও উন্নত কাজের পরিবেশ তৈরি হবে। প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে মানসম্পন্ন মাছের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে এবং সংগ্রহপরবর্তী ক্ষতি কমবে। এর ফলে দরিদ্র জেলে ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের আয় বৃদ্ধি পাবে। ২০২৭ সালের জুন নাগাদ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

বিএফডিসি চেয়ারম্যান জানান, ‘ইমপ্রুভমেন্ট অব ফিস ল্যান্ডিং সেন্টার অব বাংলাদেশ ফিশারিস ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন ইন কক্সবাজার ডিস্ট্রিক্ট’ শীর্ষক এ প্রকল্পে জাইকা অনুদান সহায়তা দিচ্ছে ১৬৫ কোটি (২ হাজার ২৯৪ মিলিয়ন জাপানি ইয়েন)। এ বিষয়ে গত ২৮ মার্চ এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সরকারের সাথে জাইকা একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব, বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের জাপানি রাষ্ট্রদূত, জাইকার কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ, জাপানের ইকনোমিক মিনিস্টার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং বিএফডিসির ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবনবিভাগের জব্দ বালু ফের জব্দ দেখিয়ে নিলামে তুলছেন ইউএনও
পরবর্তী নিবন্ধকর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন উৎপাদন