প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়ে দেশকে যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন’, চীন তাকে সবসময় সম্মান করে বলে ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলামের সঙ্গে দেখা করতে যান। দুজনের আলোচনায় তিনি ওই মন্তব্য করেন বলে মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়। খবর বিডিনিউজের। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চীনের রাষ্ট্রদূত ব্রিকসে বাংলাদেশের যোগদানের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এতে বাংলাদেশের সাথে চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবে। ইয়াও ওয়েন এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, শেখ হাসিনা যেভাবে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়ে নিজ দেশকে এগিয়ে যাচ্ছেন, তা চীন সবসময় সম্মান করে। অথচ আন্তর্জাতিক নিয়মনীতি ও জাতিসংঘ সনদ অনুযায়ী কোনো দেশ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা অনুচিৎ। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন সম্প্রতি বেইজিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের পাশে আছে তার দেশ। বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি প্রণয়ন এবং র্যাবের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে শেখ হাসিনার প্রতিক্রিয়ার দিকে ইঙ্গিত করে ওই মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশকে নিয়ে চীনের ওই বক্তব্য আসার পর পরররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে বলে, বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকারের প্রশ্নে সবাই সম্মান দেখাবে, সেটাই সরকার চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নতির ভূয়সী প্রশংসাও চীনের রাষ্ট্রদূত করেন বলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে। চীনের রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, বাংলাদেশের এগিয়ে চলা অন্যান্য এশিয়ান দেশের জন্য অনুপ্রেরণার উদাহরণ। চীন বাংলাদেশের এই অগ্রগতিতে বিশ্বস্ত সঙ্গী হিসাবে পাশে থাকতে চায়।
নব্বইয়ের দশকে চীনের শেনজিংয়ে নিজের ভ্রমণের স্মৃতিচারণ করে মন্ত্রী তাজুল বলেন, চীনের অবকাঠামো, সক্ষমতা এবং প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের প্রমাণ তখনই অনুধাবণ করা যেত। চীনকে বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তি উল্লেখ করে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, এশিয়ান দেশ হিসাবে এ অর্জন আমাদের সবার জন্যই গর্বের।
চীনের এখন জিডিপি ১৯ দশমিক ৩৭ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার উল্লেখ করে দেশটির রাষ্ট্রদূত বলেন, উভয় দেশ পারস্পরিক লাভ ও মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে পারে। রাষ্ট্রদূত দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে চীনা অর্থায়নের বিষয়টি উল্লেখ করে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করার ফলে পরিবেশের সুরক্ষার সাথে সঙ্গে প্রকল্প সংলগ্ন মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে বলে জানান।
রাজশাহীতে নির্মিত হতে যাওয়া উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ভূ–উপরস্থ পানি শোধনাগার প্রকল্পে চীনা সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন আরও ভূমিকা রাখতে চায় বলেও ইয়াও ওয়েন জানান। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ যদি প্রকল্প প্রস্তাব দেয় তাহলে চীন দুদেশের মধ্যে সম্পৃক্ততা আরও বাড়াতে চায়। স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে চীনা সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।