আদিবাসীদের স্বীকৃতির প্রশ্নে ঐতিহাসিক গণভোট অস্ট্রেলিয়ায়

| রবিবার , ১৫ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:৩৯ পূর্বাহ্ণ

সংবিধানে স্থানীয় আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেওয়ার প্রশ্নে নিজেদের রায় জানতে ঐতিহাসিক গণভোটে ভোট দিচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরা। প্রায় ২৫ বছরের মধ্যে শনিবারই প্রথম একটি গণভোটে ভোট দিচ্ছেন অস্ট্রেলীয়রা। দেশটির আদিবাসী নেতাদের ছয় বছর আগে জানানো অনুরোধে সাড়া দিয়ে এ ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। আদিবাসী ও টরেস আইল্যান্ডের মানুষদের স্বীকৃতি এবং ‘ভয়েস টু পার্লামেন্ট’ নামের আদিবাসী পরিষদ গঠন করতে ১২২ বছরের পুরনো সংবিধান পরিবর্তন করতে তারা রাজি কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে ব্যালট পেপারে অস্ট্রেলীয়দের শুধু হ্যাঁ অথবা না লিখতে হবে। খবর বিডিনিউজের।

ইনডিজেনাস ভয়েস টু পার্লামেন্ট’ শীর্ষক গণভোটে হ্যাঁ জয়ী হলে অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ৫০ বছরের মধ্যে প্রথম সংবিধানে পরিবর্তন আসবে। সংবিধানে স্বীকৃতি পাবে আদিবাসী এবং টরেস আইল্যান্ডের মানুষেরা। তাদের নিয়ে গঠিত হবে ভয়েস টু পার্লামেন্ট নামে নতুন একটি সংসদীয় উপদেষ্টা পরিষদ। পরিষদ আদিবাসী ইস্যুতে সরকারকে পরামর্শ দেবে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে।

তবে ৫০ লাখেরও বেশি অস্ট্রেলীয় ইতোমধ্যে আগাম ভোট দিয়ে দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের জন্য ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় ভোট গ্রহণ বন্ধ হবে। বিভিন্ন ভোট কেন্দ্র থেকে ফলাফল আসতে শুরু করলেই তা প্রকাশ করা শুরু করবে অস্ট্রেলিয়ার নির্বাচন কমিশন। ২০১৭ সালে ‘উলুরু স্টেটমেন্ট ফ্রম দ্য হার্ট’ নামের এক ঐতিহাসিক নথিতে ভয়েস টু পার্লামেন্টের সুপারিশ করা হয়েছিল। এটি বৃহত্তর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আদিবাসীদের মিটমাট ও সমন্বয়সাধনের একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে।

২৫০ এর বেশি আদিবাসী নেতা এর খসড়া তৈরি করেছিলেন। এর সমর্থকরা বিশ্বাস করেন, প্রস্তাব সফল হলে অস্ট্রেলিয়া ঐক্যবদ্ধ হবে এবং দেশটির আদিবাসীদের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। অস্ট্রেলিয়ার মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩ দশমিক ৮ শতাংশ আদিবাসী। তারা প্রায় ৬০ হাজার বছর ধরে বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া নামে পরিচিত ভূখণ্ডটিতে বসবাস করে এলেও রাষ্ট্রটির সংবিধানে তাদের কোনো উল্লেখ নেই।

প্রায় সব ধরনের আর্থসামাজিক হিসাবেও তারা দেশটির সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষ। অস্ট্রেলিয়ায় সবশেষ গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। দেশটিতে সাংবিধানিক গণভোট বিরল এবং পাস করাও কঠিন। এর আগে ৪৪টি প্রচেষ্টার মধ্যে মাত্র ৮টি সফল হয়েছে। আসন্ন গণভোট ঘিরেও দেশটিতে সমর্থন ও বিরোধিতা উভয়ই আছে।

সর্বশেষ জরিপগুলোতে না ভোট জয়ী হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে। তেমনটি হলে কয়েক বছর ধরে চলা মিটমাট ও সমন্বয়সাধনের প্রচেষ্টা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ গত মার্চে বিষয়টি নিয়ে গণভোট আয়োজনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিশ্রাম দিয়ে দলকে চাঙ্গা করতে চায় বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধফিলিস্তিনের স্বাধীনতাই সংকটের একমাত্র সমাধান : পুতিন