নগরীর ডবলমুরিং থানার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় গতকালও টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদিকে চট্টগ্রামের বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে হাজির করা হয়নি। এ জন্য দুজন সাক্ষীকে সাক্ষ্য না দিয়েই ফেরত যেতে হয়েছে। তারা হলেন, কক্সবাজার জেলা রেজিস্ট্রি অফিসের স্টাফ জসিম উদ্দিন ও প্রনব বড়ুয়া।
দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু দৈনিক আজাদীকে বলেন, বদি বর্তমানে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন। কারা কর্তৃপক্ষের প্রতি আদালতের নির্দেশনা ছিল, আজকে (গতকাল) যাতে বদিকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ সেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা বদিকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসেনি। যার কারণে আদালতে উপস্থিত থেকেও দুজন সাক্ষীর সাক্ষ্য রেকর্ড করা যায়নি। গত ১২ জানুয়ারিও একই ঘটনা ঘটেছে। সেদিনও বদিকে কাশিমপুর কারা কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রামে নিয়ে আসতে ব্যর্থ হয়। সেদিন আদালতে হাজির ছিল তিনজন সাক্ষী। তাদেরকেও গতকাল হাজির থাকা সাক্ষীদের মতো সাক্ষ্য না দিয়ে ফেরত যেতে হয়।
দুটি ধার্য তারিখেই কারা কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানিয়েছে, আসামি আব্দুর রহমান বদিকে স্থানান্তরের জন্য গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ থেকে পুলিশ দল চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও তা পাওয়া যায়নি। যার কারণে বদিকে চট্টগ্রামে স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি। আদালত সূত্র জানায়, এ মামলার মোট সাক্ষী ৪১ জন। এর মধ্যে ১৩ জন ইতোমধ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর টেকনাফ থানার একটি হত্যা মামলায় নগরীর জিইসি এলাকায় গ্রেপ্তার হয়ে প্রথমে কঙবাজার কারাগারে, এরপর ৬ সেপ্টেম্বর থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন বদি। পরে তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। সম্পদের তথ্য গোপন, জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও দখলে রাখার অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৭ ডিসেম্বর নগরীর ডবলমুরিং থানায় বদির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন দুদকের সাবেক উপ–পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বদি, তার স্ত্রী শাহীন আকতার ও মেয়ে সামিয়া রহমানের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ১ কোটি ১১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৭৭ টাকা। কিন্তু দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ও ২০০৬ থেকে ২০০৭ করবর্ষের রিটার্নে বদি স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছেন ৫৬ লাখ ১১ হাজার ৫০০ টাকা ও ৩১ লাখ ৯৬ হাজার ৫৮০ টাকা। সেই হিসেবে বদি সর্বমোট ৭৯ লাখ ৩৭ হাজার ৭৯৭ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। যা তিনি অবৈধ উপায়ে অর্জন করেছেন। আইন অনুযায়ী এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ২০০৮ সালের ২৪ জুন এ মামলায় বদির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়। এর এক যুগ পর ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর চার্জ গঠনের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়।