আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছে গোসাইলডাঙ্গা যুবক গোষ্ঠী

ক্রীড়া প্রতিবেদক

তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লিগ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ | শনিবার , ২৯ জুন, ২০২৪ at ৪:৪০ পূর্বাহ্ণ

দেশে ফুটবলার কিংবা ক্রিকেটর সৃষ্টির বড় মাধ্যম হচ্ছে নিচের দিকের লিগগুলো। বিশেষ করে কিশোর, পাইওনিয়ার, তৃতীয় বিভাগ কিংবা দ্বিতীয় বিভাগ লিগ। কিন্তু এসব লিগ নিয়েই যেন যত গন্ডগোল। খেলোয়াড়দের বয়স চুরি, ঠিকানা বদল, ছবি বদলে ফেরা সহ এহেন কাজ নেই যা এসব লিগে হয়না। ফলে খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষ্যটা এখানে ব্যাহত হয়। আবার কখনো কখনো আয়োজকদের বিপক্ষে উঠে নানা প্রশ্ন এবং অভিযোগ। এবারে যেমন তুলল গোসাইলডাঙ্গা যুবক গোষ্ঠী। তৃতীয় বিভাগ ফটুবল লিগের এবারের আসরে তেমনই একটি কান্ড ঘটে গেছে। লিগের গ্রুপ পর্ব শেষে ‘গ’ গ্রুপের চারটি দলের মধ্যে তিন দলের পয়েন্ট সমান হয়ে যায়। দল তিনটি হচ্ছে গোসাইলডাঙ্গা, রাইজিং জুনিয়র এব রিজেন্সী এস সি। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লিগের বাইলজ অনুযায়ী গ্রুপ পর্ব শেষে একাধিক দলেল পয়েণ্ট সমান হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্স আপ নির্ধারনের জণ্য গোল গড় বিবেচনা করা হবে। সেখানেও সমান হলে লটারীর মাধ্যমে স্থান নির্ধারিত হবে। কিন্তু গোসাইলডাঙ্গা যুবক গোষ্ঠীর অভিযোগ তাদের বেলায় বাইলজের এই ধারা মানা হয়নি। সরাসরি লটারীর মাধ্যমে স্থান নির্ধারণ করা হয়। তবে চট্টগ্রাম জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন বাইলজের একটি ধারায় লেখা রয়েছে গোল গড়ে স্থান নির্ধারিত হবে। তবে সেটা লিগ টেবিল নির্ধারনের জণ্য। গ্রুপ পর্বে স্থান নির্ধারনের জণ্য হেড টু হেড বা লটারীর আশ্রয় নেওয়ার কথা রয়েছে। যদিও গোসাইলডাঙ্গার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে কোরবানের ঠিক আগে সবাই যখন ব্যস্ত তখন তড়িগড়ি করে লটারী করা হয়। আর সেখানে ছিলনা তাদের কোন প্রতিনিধি। অথচ তার আগে দ্বিতীয় রাউন্ডের ফিকশ্চারও প্রনয়ন করা হয়। আর সেটা প্রচারও করা হয়। যেখানে ছিল গোসাইলডাঙ্গার নাম। পরে ক্লাবটির পক্ষ থেকে একটি চিটি দিয়ে সে রায়েল বিপক্ষে আপিল করা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ডিএফএ। ক্লাবটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের সহ সভাপতি নজরুল ইসলাম লেদু অনেকটা চাপ সৃষ্টি করে এই পদ্ধতিতে দ্বিতীয় রাউন্ডের দল নির্বাচন করেন। তবে তিনি এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এখানে যা হয়েছে সবকিছু ডিএফএ এর সভায় হয়েছে। কারো কোন ব্যক্তিগত মতামত এখানে প্রধান্য পায়নি। আর কারো ব্যক্তিগত মতামত দেওয়ার সুযোগও নেই। সবকিছু সর্বোচ্চ ফোরামে আলোচনার মাধ্যমেই হয়েছে। কাজেই আমাকে এখানে জড়ানোটা একবোরেই উদ্দেশ্য প্রনোদিত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে কোন একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দিতেই এধরনের কাজ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নজরুল ইসলাম লেদু বলেন আমি এই লিগের কোন দলের সাথে কোনভাবেই সংম্পৃক্ত নই। কোন দলের সাথে কোন পর্যায়ে কোন ধরনের সম্পৃক্ততা আমার নেই। কাজেই আমি কেন কোন দলকে সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করব। এটা কোন কোন মহল আমার বিপক্ষে অপপ্রচার করছে। আর তারা সেটা কেন করছে তারাই ভাল বলতে পারবে। এরই মধ্যে এই ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সে কমিটির দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে গত বৃহষ্পতিবার জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের নির্বাহি কমিটির সভায় গোসাইলডাঙ্গা যুবক গোষ্ঠীকে বাদ রেখে পরের রাউন্ডের ফিকশ্চার প্রনয়নের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়। লটারীতে তারা হেরে গেছে। তবে নির্বাহি কমিটির এই সভায় দ্বিধা বিভক্তি ছিল বলে জানিয়েছেন একাধিক কর্মকর্তা। বাইলজ নিয়েও সেখানে আলোচনা হয়। যেখানে বাইলজের ধারা অনুসারে সিদ্ধান্ত দেওয়ার প্রস্তাব করেন কেউ কেউ। কিন্তু তাদের সে প্রস্তাব গৃহীত হয়নি। তাই লটারীর মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে সেটাই বহাল থাকছে বলে জানা গেছে। এদিকে গোসাইলডাঙ্গা যুবক গোষ্ঠীর একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন তারা এখনো চিটি পাননি। চিটি হাতে পেলে তারা পরবর্তী করনীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারা যেহেতু এখানে ন্যায় বিচার পায়নি তাই তারা হয়তো আদালতেও যেতে পারেন। চট্টগ্রামে বারবার এসব ফুটবল লিগে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকে। এর আগেও একবার বাঁশখালী উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা এ ধরনের হটকারী সিদ্ধান্তের কারনে খেলা থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দিয়েছিল। যদিও তারা পরবর্তীতে তারা আবার মাঠে নেমেছিল। কিন্তু বারবার কেন এমন হচ্চে ? তার কোন সদুত্তর নেই। কখনো রেফারীর বিপক্ষে অভিযোগ, কখনো ডিএফএ কর্মকর্তাদের বিপক্ষে অভিযোগ, কখনো তৃতীয় কোন পক্ষের হস্তক্ষেপের অভিযোগ। এ ধরনের নানা হস্তক্ষেপের কারনে বারবার ব্যাহত হচ্ছে নিচের দিকের লিগ গুলোর উদ্দেশ্য। এবারেও যেমন হলো। কে জানে এদের কবল থেকে কবে বেরিয়ে আসবে চট্টগ্রামের খেলাধুলা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমাস্ক পরা নিয়ে অখুশি এমবাপে
পরবর্তী নিবন্ধচন্দনাইশে ডিসি কাপ আন্তঃ স্কুল ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধন