আদালতের হাজতখানা থেকে আসামিকে বেয়াই’র গাড়িতে চড়িয়ে কারাগারে নেয়াসহ একাধিক অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষিতে মহানগর হাজতখানার ওসির পদ থেকে সরানো হয়েছে মো. নুরুল বশরকে। নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ গতকাল আজাদীকে হাজতখানার ওসি রদবদলের কথা স্বীকার করলেও এটা নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে দাবি করেন। তিনি বলেন, ওনার (নুরুল বশর) তো হাজতখানায় অনেকদিন হয়ে গেছে। তাই নিয়মিত বদলির অংশ হিসেবে তাকে বদলি করা হয়েছে। দু-তিনদিন হচ্ছে হাজতখানার ওসির পদ থেকে বদলি হয়ে বর্তমানে পরিদর্শক (এডমিন) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। কাজী শাহাবুদ্দিন জানান, হাজতখানায় নতুন ওসি হিসেবে যোগ দিয়েছেন সিএমপি’র এডমিন হিসেবে দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক অংশুক। গত ২২ জানুয়ারি দৈনিক আজাদীতে ‘বেয়াই’র গাড়িতে চড়ে আদালত থেকে কারাগারে!’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, ঘটনাটির অনুসন্ধানে পুলিশের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এডিসি পলাশ কান্তি নাথের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে হাজতখানার ওসিসহ চার পুলিশ সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে জানা যায়। জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার পলাশ কান্তি নাথ আজাদীকে বলেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনায় হাজতখানা থেকে আসামিকে তার বেয়াই’র গাড়িতে করে কারাগারে নেয়ার বিষয়ে সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে অভিযুক্ত ওসিসহ অন্যান্য পুলিশ সদস্যরা দাবি করেন, আসামি অসুস্থ থাকায় পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে তাকে প্রিজন ভ্যানের বদলে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
অভিযোগ রয়েছে, সামপ্রতিক সময়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে একাধিক বন্দীকে ভিআইপি সুবিধা দিয়ে ব্যক্তিগত ও ভাড়া গাড়িতে চড়িয়ে কারাগারে আনা-নেয়া করা হয়েছে। অনৈতিকভাবে আসামিদের এ ধরনের সুবিধা দেয়া হলেও এতে মারাত্মক নিরাপত্তার ঝুঁকি কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া অনৈতিক সুবিধা নিয়ে হাজতখানায় আসামিদের সাথে দেখা করার সুযোগ দেয়াসহ আরও বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে পুলিশের একটি চক্রের বিরুদ্ধে। গত ২০ জানুয়ারি ডবলমুরিং থানার হত্যা মামলার আসামিদের হাজতখানা থেকে বের করে ছবি তোলার ঘটনা নিয়ে হাজতখানার পুলিশ ও আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি ও হট্টগোল সৃষ্টির ঘটনাও ঘটে। ওই ঘটনায় তাৎক্ষণিক চার পুলিশ কনস্টেবলকে হাজতখানা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।