বেড়েই চলেছে আদার দাম। চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আদার দাম বেড়েছে ৫০–৬০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব সময় চীনা আদায় বাজার সয়লাব থাকতো। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা চীন থেকে আদা আনতে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে পারেননি। এর ফলে পণ্যটির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যায়। পরবর্তীতে ব্যবসায়ীরা বিকল্প বাজার মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে আদা আমদানি করেন। এদিকে অভিযোগ রয়েছে– আদা বাজারে আসতে আসতে আমদানি মূল্যের দ্বিগুণ–তিনগুণ পর্যন্ত হয়ে যায়। ফলে আদার বাজারে বাড়তে থাকতে অস্থিরতা।
ভোক্তারা বলছেন, আদা যারা আমদানি করেন, তাদের আমদানি মূল্যের সাথে বিক্রয় মূল্যের তুলনা করে যদি বাজার তদারকি করা হয়, তবে আদার বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ সামনে কোরবানির ঈদ। তখন আদার চাহিদা বেড়ে যায়। সেই চাহিদাকে পুঁজি করে কারসাজি করে আরো দাম বাড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। চাক্তাই খাতুনগঞ্জের আদার বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে প্রতি কেজি ভিয়েতনামের আদা বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, মিয়ানমারের আদা ২২০–২৪০ টাকা এবং থাইল্যান্ডের আদা বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকায়। তবে বাজারে এখন ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার আদা নেই। আগামী সপ্তাহের শুরুতে দেশ দুটি থেকে আদার বেশ কিছু চালান বাজারে আসবে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।
চাক্তাই আড়তদার ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম বলেন, চীনা আদা আমদানি না হওয়ায় আদার বাজার বেড়েছে। আসলে অনেক ব্যবসায়ী ডলার সংকটসহ নানা কারণে এলসি করতে পারেনি। এর প্রভাবে বাজারে হঠাৎ করে আদার সরবরাহ সংকট দেখা দেয়। সে কারণে দাম বেড়ে যায়। তবে আগামী সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়া ও ভারতীয় আদা আসবে। আশা করি কোরবানের ঈদ আসার আগেই আদার বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইদ্রিস বলেন, আসলে আদা–পেঁয়াজ ও রসুন এসব পণ্যের ক্ষেত্রে আমরা বেশি আমদানি নির্ভর। এই আমদানি নির্ভরতার কারণে দাম উঠানামা বেশি করছে। কারণ অনেক সময় পণ্যের বুকিং দর বেড়ে যায়। আবার আমদানির ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিন দিয়ে আমদানি করতে হচ্ছে। সব কিছু মিলে বাজারে আদার সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে।
আরেকটি বিষয় হচ্ছে মোট তিন ভাগের এক ভাগ মতো উৎপাদন হয়। বাকি দুই ভাগ আমাদের আমদানি করে প্রয়োজন মেটাতে হয়। এটিও একটি বড় সমস্যা। আগে চীনা আদার বুকিং দর ছিল ৮০০–৯০০ ডলার। এখন সেটি হয়ে গেছে আড়াই হাজার ডলার। আমদানি খরচই পড়ছে ৩২০–৩৩০ টাকা। তাই ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে ভিয়েতনাম, মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ থেকে আমদানি করছে। আবার সেসব দেশেও বুকিং দর বেড়েছে। এছাড়া এলসি করার পরেও যথাসময়ে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না।