পরের ছিদ্র অন্বেষণে বা সমালোচনায় নিজেরা যে ভাবে তৃপ্ত হই। নিজের সমালোচনায় বা আত্ম অন্বেষেণের প্রয়োজনীয়তা আমরা খুব একটা অনুভব করি না। অথেচ পরের অকল্যাণে সময় ব্যয় করতে গিয়ে নিজের অকল্যাণের সুপ্ত বীজ নিজেই বপন করি। যা পরবর্তীতে ফল হয়ে এসে নিজের জীবনকে অতিষ্ঠ করে। নিজের কর্মের ফল নিজেই ভোগ করি। ব্যক্তিগত লোভ, হিংসা, আসক্তি ও মোহে আমরা জর্জরিত। এ অবস্থা হতে উত্তরণের জন্য নিজেকে র্নিমোহ, অলোভ ও সংযমতায় প্রতিষ্ঠিত করার উপায় অনুশীলন করতে হবে। আর সেই উপায় হচ্ছে আত্ম অন্বেষণের অনুশীলন ‘বিদর্শণ’। ‘বিদর্শণ’ হচ্ছে নিজের ভিতরে নিজেকে শান্ত রাখা, এটিই মহা সত্যের উপাসনা। পরচর্চায় যেমন নিজের ক্ষতি হয়, আত্মচর্চায় তেমনি জ্ঞান উৎপন্ন হয়। এ জ্ঞান বা বোধি বা প্রজ্ঞা উৎপন্ন করার উপায় ‘বিদর্শণ’। বিদর্শণ হচ্ছে নিজেকে রক্ষার আবরণ। বিশ্ব বিখ্যাত ম্যাগাজিন ‘টাইমস’ এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, একুশ শতকের সম্পদ হচ্ছে জ্ঞান। তেল নয়, গ্যাস নয়, গাড়ি বা বিমানের ফ্যাক্টরি নয়, যুদ্ধাস্ত্রের কারখানা বা সোনা, রূপা, ডায়মন্ডের খনি নয়। একুশ শতকের সম্পদ হলো ‘জ্ঞান’। তাহলে এ জ্ঞান বা প্রজ্ঞা অর্জনের উপায় নিয়ে সারা বিশ্ব মাতোয়ারা আজ। আর তা অর্জনের অন্যতম সহজ উপায় হচ্ছে নিজের ভিতর ভুবন সৃষ্টি করা। এ ভূবনের সাথে যদি আত্ম অন্বেষণের নিবিড় পরিচর্যা ‘বিদর্শণ’ যুক্ত থাকে তাহলে জ্ঞান বা প্রজ্ঞা অর্জনের পথ হয় মসৃণ। জ্ঞান বা প্রজ্ঞা অর্জনের সর্বোচ্চ মানসিক ও বৌদ্ধিক ক্ষমতা ব্যবহারের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে বিদর্শণ। বিদর্শণ মানে একাগ্রতার স্মৃতি অনুশীলনে একটি বিষয়ে চিত্তকে নিবিষ্ট রাখা। এ অভ্যাস নিয়মিত করলে আপনার দৈনন্দিক কাজের ক্ষমতা বেড়ে যাবে বহুগুণ। সদা প্রাণচঞ্চল ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন, সৃজনশীল, আত্মবিশ্বাসী মানুষে পরিণত হবেন আপনি। বিদর্শণ অনুশীলনের ফলে আপনি এক অনন্য ও মানবীয় যোগ্যতা নিজের ভিতর অনুভব করবেন। আসলে ‘বিদর্শণ’ অতটা কঠিন কিছু নয়। আপনার আগ্রহ, চেষ্টা থাকলে খুব সহজেই আপনি ‘বিদর্শণ’ অনুশীলন করতে পারেন। লেখক: সংগঠক












