আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল। নিজে নিজেই কথা বলি। প্রশ্ন করি নিজেকে বারবার, হাজারবার! ভাবছি, মন আর আত্মা নিয়ে। হৃদয় বা আত্মা হলো, স্বচ্ছ স্ফটিকের মতোই। সেখানে জীবনের প্রতিটা ঘটনা প্রভাব ফেলে। আনন্দের ঘটনায় স্ফটিক ঝলমল করে ওঠে। দুঃখ–কষ্ট বা বেদনার ঘটনায় স্ফটিকে দাগ পড়ে কালচে হয়ে যায়। মন ও আত্মা দুটি আলাদা অংশ। মন হলো, সচেতন ও অবচেতন অংশ আর আত্মা হলো, অতিচেতনের স্বরূপ। আত্মার খাবার দিতে ব্যর্থ হলে মন বিক্ষুব্ধ হয়ে যায়। কিছুই ভালো লাগে না তখন। মনের…… যা দেখে তাই–ই ভালো লাগে! মনকে সহজেই তুষ্ট করা যায়। কিন্তু আত্মা! হাজারটা না পাওয়ার মাঝেও ভেতর থেকে সুখ অনুভূত হয় আত্মার কারণেই। আত্মার খাবার দিতে ব্যর্থ হলে মন রেগে যায়! তাই, যখন আত্মা তৃপ্ত হয় না, ব্যর্থতার পর ব্যর্থতা আসে, ভালো ঘটনাগুলো ও অনুভূতিগুলোকে উপভোগ করা যায় না আর। শুধুই আশংকা হয়….. নতুন কোনো ব্যর্থতার! তখন মনে আতংক বিরাজ করে। তখনই মন নেতিবাচক চিন্তা করতে শুরু করে। এটা ধীরে ধীরে হয়, একদিনে নয় কিন্তু।
আত্মা চায়, আমরা ভালো কাজ করি, মন্দ থেকে দূরে থাকি! আত্মা চায়, আমরা মানুষের জন্য কাজ করি। আত্মা নিজে কিছু পেতে চায় না। কারণ, দেওয়ার মাঝেই আত্মা আনন্দ পায়! এটাই মানুষের স্বভাব ধর্ম। কিন্তু আমরা যদি কারো নামে মিথ্যা অপবাদ দিই, নিজে মিথ্যা বলি, নিজের ও অন্যের সাথে শঠতা করি, নিজের সময় নষ্ট করি, নিজের খুঁত নিজে বের না করে অন্যের খুঁত বের করি, ঘৃণা করি বাছবিচার না করে, ঈর্ষা করি, ক্ষমা করতে ভুলে যাই, প্রশংসা না করি, অন্যের সাথে দুর্ব্যবহার করি, নির্মম আচরণ করি, অর্থাৎ যত মন্দ আবেগ ও অভ্যাস আছে তা করতেই থাকি, তখন আসলে আমরা আমাদের আত্মাকেই কষ্ট দিতে থাকি! আত্মা তখন পশুতে পরিণত হয়ে পড়ে। তখন না মানুষকে ভালোবাসতে পারি, না নিজেকে!
পরিশেষে বলতে ইচ্ছে করে, নেতিবাচক চিন্তা করে, সেগুলোকে প্রশ্রয় দিয়ে, মনের ভিতর লালন করে নিজের জীবনকে শেষ করার মাঝে কোনো সার্থকতা নেই। বাঁচতে হলে অন্তরে আনন্দ নিয়ে বাঁচতে হবে। প্রাণ ভরে নিঃশ্বাস নিয়ে বাঁচতে হবে। একটাই জীবন। আজকের দিনটা গতই হয়ে যায় জীবন থেকে! এই পৃথিবী, এই জীবন আমাদেরই! ভালো কাজই হোক পাথেয়।