আত্মসমর্পণ শব্দটি আমাদের শব্দভাণ্ডারে নেই : খামেনি

ইরান আমেরিকার মুখে কষে থাপ্পড় দিয়েছে জায়নবাদীদের পতনের ভয়ে যুদ্ধে জড়িয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র

| শুক্রবার , ২৭ জুন, ২০২৫ at ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সংঘাতে ইরানকে বিজয়ী ঘোষণা করে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যম এক্স ও টেলিগ্রামে পৃথক বার্তায় তিনি বলেন, আমাদের প্রিয় ইরান যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জয় লাভ করেছে। এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র কোনো সাফল্য অর্জন করতে পারেনি। ইরান বিজয়ী হয়েছে এবং আমেরিকার মুখে কষে এক থাপ্পড় দিয়েছে। খামেনির দাবি, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়েছে, কারণ তারা বুঝতে পেরেছিলযদি তারা তা না করে, তাহলে ইহুদিবাদী শাসনের সম্পূর্ণ পতন হবে। খবর বিডিনিউজের।

টেলিগ্রামে দেওয়া বার্তায় খামেনি লেখেন, তৃতীয় অভিনন্দন, এই অভিনন্দন ইরানি জাতির ঐক্যের জন্য। প্রায় ৯ কোটি মানুষের এই জাতি এক কণ্ঠে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সশস্ত্র বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি আরও বলেন, ইরানি জাতি তার ব্যতিক্রমী চরিত্র প্রদর্শন করেছে এবং দেখিয়েছে, প্রয়োজনে এই জাতির পক্ষ থেকে একটি মাত্র কণ্ঠস্বর শোনা যাবে।

ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার এবং ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পর দেশের মানুষের উদ্দেশে প্রথম ভিডিও বার্তা দেওয়ার আগে খামেনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব কথা বলেন। আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরায়েলের সঙ্গেও ইরানের যুদ্ধে বিজয় দাবি করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার এঙএ দেওয়া বার্তায় তিনি বলেন, ইরানের আঘাতে ইহুদিবাদী শাসন ব্যবস্থা তাদের সব দাবি ও অহংকারের সঙ্গে প্রায় চুরমার হয়ে গেছে।

ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ১২ দিনের যুদ্ধবিরতির অবসানের দুই দিন পর খামেনি এসব কথা বললেন। ইরানের স্থানীয় সময় গতকাল দুপুর ২টার দিকে রাষ্ট্রীয় টিভিতে খামেনির পূর্ণ ভিডিও বার্তা সম্প্রচার হওয়ার আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে তার ভাষণের বক্তব্য প্রকাশ্যে এসেছে। পরে রাষ্ট্রীয় টিভি তার ভিডিও বার্তা সম্প্রচার করে। এতে খামেনি ইরানে যুক্তরাষ্ট্রর হামলায় পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে উল্লেখযোগ্য কোনো ক্ষয়ক্ষতি ঘটেনি বলেই দাবি করেন। ভিডিও বার্তায় খামেনি মধ্যপ্রাচ্যের মার্কিন ঘাঁটিগুলোতে আরও হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে বলেছেন, হামলা হলে শত্রুপক্ষ এবং আগ্রাসনকারীকেও এর জন্য চড়া মূল্য দিতে হবে।

যুদ্ধবিরতির পর প্রথম প্রকাশ্য বার্তায় তিনি বলেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের হামলার প্রকৃত লক্ষ্য ছিল ইরানকে পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধে বাধ্য করা নয়, বরং দেশটিকে আত্মসমর্পণে বাধ্য করা। তিনি বলেন, কখনও তারা মানবাধিকারের কথা বলে, কখনও নারীদের অধিকার, আবার কখনও পারমাণবিক কর্মসূচি বা ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কথা তোলে। কিন্তু আসলে সবসময় তাদের একটাই লক্ষ্যইরান যেন আত্মসমর্পণ করে। খামেনির ভাষ্য, আত্মসমর্পণ শব্দটি আমাদের অভিধানে নেই। তিনি বলেন, ইরানি জনগণ তাদের ঐক্য দেখিয়েছে, এক কণ্ঠে কথা বলেছেএই জাতি ঐক্যবদ্ধ। ট্রাম্প ইরানকে আত্মসমর্পণের ডাক দিয়েছিলেন, কিন্তু এমন কথা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মুখে বেমানান। প্রেসিডেন্ট খুব বেশি বড় মন্তব্য করে ফেলেছিলেন। ইরানের মতো একটি মহান দেশ ও জাতির কাছে আত্মসমর্পণের কথা তোলাটাই অপমানজনক। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরও হামলার হুমকি দিয়ে খামেনি বলেছেন, যদি আবার কোনো হামলা হয়, তবে শত্রুপক্ষকে চড়া মূল্য দিতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপারকি সৈকতে বাঁধ ভেঙে হলো খাল, বালু চরে জমেছে পলি
পরবর্তী নিবন্ধআছদগঞ্জ থেকে আওয়ামী লীগ নেতা মুন্না গ্রেপ্তার