আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ, লক্ষ্য সিরিজ জয়

ভারতের সাথে দ্বিতীয় ওয়ানডে আজ

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বুধবার , ৭ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ

ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ এক জয়ে প্রথমবারের মতো সিরিজে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম প্রতাপশালী দল ভারতের বিপক্ষে এমন সাফল্য এবারই প্রথম। এই সাফল্যকে এখন ধরে রাখার মিশন টাইগারদের। যদিও কাজটা বেশ কঠিন। কারণ ভারত এমনই একটি দল যারা যেকোনো সময় ঘুরে দাঁড়াতে পারে এবং প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে। এমন নজির ভারত রেখেছে বড় দলগুলোর বিপক্ষেও। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে তিন ম্যাচের সিরিজে এখন পর্যন্ত ৮ বার প্রথম ম্যাচ হেরেও ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প লিখেছে ভারত। এর মধ্যে গত চার বছরেই এমনটি দেখা গেছে ৪ বার। সর্বশেষ নজিরটি একদমই টাটকা। গত মাসে ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ ৯ রানে হারে ভারত। পরের দুই ম্যাচ ৭ উইকেটে জিতে সিরিজ জিতে নেয় রোহিত শর্মার দল। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ২০২০ সালে দেশের মাঠে ও ২০১৯ সালে অস্ট্রেলিয়ায় একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটায় ভারত। ২০১৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও প্রথম ম্যাচ হেরে সিরিজ জিতেছিল ভারত। তাই ভারতের বিপক্ষে জয় দিয়ে সিরিজ শুরু করা মানেই নির্ভার থাকার সুযোগ নেই। আর সেটা বেশ ভাল করেই জানে বাংলাদেশ দল।

তারপরও হাল ছেড়ে দিতে নারাজ টাইগাররা। প্রথম ম্যাচের পারফরম্যান্স আশা জাগাচ্ছে টাইগার শিবিরে। কারণ বাংলাদেশের যে হারানোর কিছু নেই। যা আছে তার সবই কেবল পাওয়ার। বাংলাদেশ দলের পেসার এবাদত হোসেন মনে করেন প্রথম ম্যাচে জিতে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগটা কাজে লাগানো উচিত। আর তাই বাংলাদেশ দল শুরুর জয়কেই কাজে লাগাতে চায়। প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেট নেওয়া পেসার ইবাদত হোসেন বলেন, আগের ম্যাচের আত্মবিশ্বাসকে সঙ্গী করে তারা এগিয়ে যেতে চান নতুন সাফল্যের পথে। তিনি বলেন, আমরা সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে আছি। তার মানে এই নয় যে সিরিজ জিতে গেছি। তবে দলের সবাই মানসিকভাবে চাঙা আছে। পরের ম্যাচে সবাই মিলে আরও ভালো খেলার চেষ্টা করব।

প্রথম ম্যাচে বোলাররা মূলত ম্যাচের লাগামটা টেনে ধরে। সাকিবের ৫ উইকেট আর ইবাদতের ৪ উইকেট বাংলাদেশকে ম্যাচে এগিয়ে দিয়েছিল প্রথম ভাগেই। যদিও ব্যাটিংয়ে শুরুতে তেমন আলো ছড়াতে পারেনি। এক সময়তো হারের মুখেও পড়েছিল স্বাগতিকরা। অবশ্য সব কৃতিত্বের দাবিদার একজন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার বীরত্বে বাংলাদেশ পায় ঐতিহাসিক এক জয়। যা এগিয়ে রাখছে বাংলাদেশকে। পুরো শক্তির ভারতও যেন এই ম্যাচে হেরে অনেকটাই ব্যাকফুটে।

ম্যাচে ব্যাটিংয়ে উপরের সারির ব্যাটসম্যানদের কথা বাদ দিলে বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ে পুরো কর্তৃত্ব বজায় রেখেছে বাংলাদেশ। তাই আজকের ম্যাচেও সামর্থ্যের শতভাগ উজাড় করে দিতে চায় বাংলাদেশ। তবে এটাও ঠিক যে ভারত আজকের ম্যাচে কোনো ধরনের সুযোগ দেবে না। শক্তি, সামর্থ্য আর পরিসংখ্যানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের সঙ্গী আজকের ম্যাচে তাই প্রথম ম্যাচের জয় এবং লড়াই করার মানসিকতা। হারার আগে হার নয় এই মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ সিরিজ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে। যা কখনোই অর্জন করা হয়নি বাংলাদেশের। বরং বরাবরই ‘এত কাছে তবু কতদূর’ এর মত তীরে গিয়ে তরী ডুবাতে হয়েছে।

এবারই প্রথম যে তীরে গিয়ে আর তরী ডুবায়নি বাংলাদেশ। শত চেষ্টায়ও মিরাজের ইস্পাতদৃঢ় সংকল্পে ফাটল ধরাতে পারেনি ভারতীয় বোলিং। তাই আহত সিংহের মত আজ ঝাঁপিয়ে পড়বে ভারত তেমনটি বলাই যায়। বাংলাদেশ দল আজ জিতলেই সিরিজ জয় নিশ্চিত। এতে সিরিজের শেষ ম্যাচটাতে নির্ভার হয়ে মাঠে নামতে পারবে চট্টগ্রামে। কিন্তু ভারত চাইবে শেষ ম্যাচটাকে ফাইনালে পরিণত করতে। যাতে মানসিক একটি চাপ দেওয়া যায়। এখন দেখার বিষয় বাংলাদেশের ইতিহাস নাকি ভারতের ঘুরে দাঁড়ানো। আজ বাংলাদেশ সময় বেলা ১২টায় শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি রোধ করা হোক
পরবর্তী নিবন্ধবিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় বাংলাদেশের সানজিদা