চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের একমাত্র ম্যামোগ্রাফি মেশিনটি দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। নারীর স্তনের টিউমার ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের কাজে ব্যবহৃত অত্যাবশকীয় মেশিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কম খরচে সেবা পাচ্ছেন না দরিদ্র রোগীরা।
রেডিওলজি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নষ্ট হয়ে যাওয়া ম্যামোগ্রাফি মেশিনটি স্থাপিত হয় ২০১৮ সালের পহেলা আগস্টে। কোটি টাকা মূল্যের মেশিনটি ৩ বছর ওয়ারেন্টি সময়ের মধ্যে চারবার নষ্ট হয়ে যায়। ওয়ারেন্টির সময়সীমা ৩ বছর থাকলেও ম্যামোগ্রাফি মেশিনটি সব মিলিয়ে সচল ছিল ১ বছর ১১ মাস ২৯ দিন। এছাড়া বর্তমানে ৪ বছর ২ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। প্রথম দফায় স্থাপনের ৫ মাস ২৬ দিন পরে বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে ১ বছর ৫ মাস ১৪ দিন পর চালু হয়। তবে এবার চালু হওয়ার মাত্র ৩ মাস ২৭ দিন পর আবারও বিকল হয়ে যায় মেশিনটি। তারপর বন্ধ ছিল ৬ মাস ২৩ দিন। চালু থাকে ৮ মাস ৬ দিন। বন্ধ থাকার ৪ মাস ৬ দিন পর চালু হলেও এবার স্থায়ীত্ব হয় আরো ৬ মাস। এরপর গত ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর থেকে মেশিনটি স্থায়ীভাবে বন্ধ রয়েছে। সেই থেকে টানা প্রায় আড়াই বছর ধরে বিকল পড়ে আছে ম্যামোগ্রাফি মেশিন।
জানা গেছে, রেডিওলজি বিভাগে সিঙ্গল (একটি) স্তনের ম্যামোগ্রাফ পরীক্ষা ৪০০ টাকা এবং ডাবল (দুটি) স্তনের পরীক্ষা ফি নিতো ৮০০ টাকা। তবে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে এই ফি প্রায় চারগুণ নিয়ে থাকে।
রেডিওলজি বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, ম্যামোগ্রাফি মেশিনটি চালু থাকলে গরীব রোগীরা কম টাকায় সেবা পেতেন। মেশিনটির ৩ বছরের ওয়ারেন্টি সময়সীমা থাকলেও সচল ছিল ২ বছরেরও কম সময়। তাই রোগীরাও প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
জানতে চাইলে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন দৈনিক আজাদীকে বলেন, ম্যামোগ্রাফি মেশিনটির একটি যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে গেছে। সেটি আসলে পুনরায় সচল করা যাবে মেশিনটি।
উল্ল্েলখ্য, গত ২০১৬ সালে চমেক হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জন্য একটি করে মেশিন বরাদ্দ দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইতালি থেকে আমদানি করা দুটি মেশিনের খরচ পড়ে ৩ লাখ ৮১ হাজার ইউরো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা তিন কোটি ৩২ লাখ ৩ হাজার ৯২১ টাকা। সে সময় সে হিসেবে প্রতিটির মূল্য পড়ে ১ কোটি ১৬ লাখ টাকারও বেশি। কিন্তু কোটি টাকা মূল্যের অত্যাধুনিক এ যন্ত্র চমেক হাসপাতালে বাঙবন্দি ছিল প্রায় বছর ধরে। পরবর্তীতে প্রায় দেড় বছর পর ২০১৮ সালে অবশেষে সেবা চালু হয়। চালু হওয়ার পর থেকে দফায় দফায় বিকল হয়ে যাওয়ায় সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।