আটকে গেল হাই কোর্টের আদেশ, ডাকসু নির্বাচনে বাধা নেই

| মঙ্গলবার , ২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ at ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ

হাই কোর্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন দুই মাস স্থগিতের যে আদেশ দিয়েছিল তা এক ঘণ্টার মধ্যে আপিল বিভাগে আটকে গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব গতকাল সোমবার বিকালে হাই কোর্টের ওই আদেশ স্থগিত করে দেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেছেন, চেম্বার আদালতের এই অন্তর্বর্তী আদেশের ফলে ডাকসু নির্বাচন প্রক্রিয়া চলতে কোনো বাধা থাকল না।

এর ঘণ্টাখানেক আগে ডাকসু নির্বাচনের এক প্রার্থীর করা একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর হাই কোর্ট বেঞ্চ নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দেয়। রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। খবর বিডিনিউজের।

হাই কোর্টের আদেশ স্থগিতের পর শিশির মনির বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকসু নির্বাচন আয়োজন করা এবং অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে খুবই সিরিয়াস এবং সিনসিয়ার। একটা রিট পিটিশন করে একটা রুল নেয়া হয়েছে এবং নির্বাচনটাকে স্থগিত করে দেওয়া হয়েছিল। তাৎক্ষণিকভাবে চেম্বার জজ আদালতে শরণাপন্ন হওয়ার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, এটি ইনস্ট্যান্টলি আমরা মাননীয় চেম্বার জজের আদালতে এই বিষয়টির যে গুরুত্ব এবং ইম্পোর্টেন্স বলেআমরা চেম্বার জজের আদালতে হাতে লিখিতভাবে আবেদন করেছি। এই লিখিত আবেদন গ্রহণ করে মাননীয় চেম্বার জজহাই কোর্ট ডিভিশন ডাকসু নির্বাচনকে স্থগিত করে যে আদেশ দিয়েছিল, এই আদেশকে সিএমপি ফাইল বা সিভিল মিসিলেনিয়াস পিটিশন ফাইল এবং শুনানির আগ পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ এই মুহূর্তে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে এই মুহূর্তে কোনো বাধা থাকল না। এবং যে যেখানে প্রচারণা করছেন, নির্বাচনের যে যেখানে প্রতিযোগিতা করছেনতাদের প্রতিযোগিতা করার ক্ষেত্রেও এবং প্রচারণা করার ক্ষেত্রেও কোনো বাধা নাই।

শিশির মনির বলেন, আমরা আগামীকালকে (মঙ্গলবার) সকালে অফিস খুললে সিএমপি দায়ের করব। আশা করি আগামীকালকেই গুরুত্বের বিচারে বাকিটা আদালতে শুনানি হবে। কিন্তু ইন দা মিনটাইম হাই কোর্ট ডিভিশনের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত থাকবে। অর্থাৎ ডাকসু নির্বাচন আয়োজন, পরিচালনা, ক্যাম্পেইন, ছাত্রদের উৎসব, উৎসাহএই ব্যাপারে কোনো স্থগিতাদেশ থাকল না।

তিনি বলেন, একজন ক্যান্ডিডেট তিনি নিজেও ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চাননি, তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন একজন প্রার্থীর ব্যাপারে। ফলে ডাকসু নির্বাচন স্থগিত থাকাটা কেউই ভালোভাবে নেবে বলে আমি মনে করি না। এই কনসার্ন বিবেচনায় নিয়ে মাননীয় চেম্বার জজ সিএমপি ফাইল এবং শুনানি পর্যন্ত এই (হাই কোর্টের) আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত করে দিয়েছেন।

এর আগে হাই কোর্ট বেঞ্চে রিট আবেদনের শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। হাই কোর্ট শুনানি নিয়ে আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত নির্বাচন স্থগিত করে এবং আদেশের ১৫ দিনের মধ্যে জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালকে।

৫ অগাস্টের আগে এস এম ফরহাদ ‘ছাত্রলীগের কমিটিতে’ ছিলেন, এর পরও তিনি কীভাবে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোটের প্রার্থী হলেনএমন প্রশ্ন তুলে তার প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে রোববার একটি রিট মামলা হয়। তিন বাম সংগঠন সমর্থিত ‘অপরাজেয় ৭১অদম্য ২৪’ প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলম এ মামলা করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসহজ জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ
পরবর্তী নিবন্ধঅবশেষে ছয় ফুট প্রশস্ত হচ্ছে খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়ক