চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তিতুল্য শিল্পী সনজিত আচার্য্য আর নেই। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে নগরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি তিন মেয়ে ও স্ত্রী স্বপ্না আচার্য্যসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের এই গুণী শিল্পীর মৃত্যুর খবরে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকে ছুটে যান হাসপাতাল এবং এ সংগীতজ্ঞের পাথরঘাটার বাসায়।
সনজিত আচার্য্য একাধারে গীতিকার, সুরকার, নাট্যকার, সংগীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। তার জীবদ্দশায় তিনি সহস্রাধিক গান লিখেছেন। তার অনেক গান তুমুল জনপ্রিয়। শিল্পী সনজিত আচার্য্য চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার চাপড়া গ্রামের কীর্তনীয়া মনোরঞ্জন আচার্য্যরে ছেলে। তার জন্ম ১৯৫৩ সালের ২৫ জুন।
পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। তিনি পরিবার নিয়ে নগরের পাথরঘাটা ইকবাল রোডে নিজস্ব বাসায় থাকতেন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানে শেফালী ঘোষ ও শ্যামসুন্দর বৈষ্ণবের কালজয়ী জুটির পর সঞ্জিত আচায্যূ–ক্যলাণী ঘোষ জুটিই হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি। শিল্পী সনজিত আচার্য্য–শেফাল ঘোষ, সনজিত–কল্যাণী এবং সনজিত–কান্তা নন্দীর দ্বৈতকণ্ঠে গাওয়া গানগুলো চট্টগ্রামসহ সারাদেশের মানুষের মুখে মুখে আজো ফেরে। দ্বৈতকণ্ঠে গাওয়া গানগুলোর মধ্যে ‘বাজান গিয়ে দইনর বিলত/পাটি বিছাই দিয়্যি বইও ঘরত…’, বাঁশ ডুয়ার আড়ালত থাই/ আঁরে ডাকর কিয়রল্লাই…’ গানগুলো তুমুল জনপ্রিয়। এছাড়া ‘বাঁশখালী মইশখালী/পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুড়গুড়াই টানে/তোরা হন হন যাবি আঁর সাম্পানে,’ ওরে কর্ণফুলী রে..স্বাক্ষী রাখিলাম তোরে…’ ‘গুরা গুরা হতা হই/ বাগানর আড়ালত বই/ পিরিতির দেবাইল্যা আঁরারে বানাইলা’ ও ‘সত্যি গরি কঅনা কঙবাজার লাই যাইবা’।
এছাড়া ‘বাঁশখালী মইশখালী/পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুড়গুড়াই টানে/তোরা হন হন যাবি আঁর সাম্পানে,’ ওরে কর্ণফুলী রে..স্বাক্ষী রাখিলাম তোরে…সহ অনেক গান এখনো মানুষের মানুষের মুখে ফেরে।